প্রিমিয়ার লিগের সেরা তরুণ খেলোয়াড় পালমার
ভুলে যাওয়ার মতো একটি মৌসুম পার করেছে চেলসি। প্রিমিয়ার লিগে ৩৭ ম্যাচ শেষে বর্তমানে পয়েন্ট তালিকার ছয়ে আছে দলটি। তবে পয়েন্ট তালিকার অবস্থান চেলসির দুরবস্থাকে ঠিকঠাক বোঝাতে পারছে না। বিশেষ করে মৌসুমের শুরুর দিকে একের পর এক ব্যর্থতায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়েছিল ক্লাবটি; যদিও শেষভাগে এসে ঘুরে দাঁড়িয়ে হারানো মর্যাদা কিছুটা হলেও উদ্ধার করেছে তারা।
চেলসির এই ঘুরে দাঁড়ানোর বেশির ভাগ কৃতিত্বই কোল পালমারের। মৌসুমজুড়ে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অনেকগুলো ম্যাচে স্টামফোর্ড ব্রিজের দলটিকে উদ্ধার করেছেন ২২ বছর বয়সী এ তরুণ ফুটবলার, যার ফলস্বরূপ এবার প্রিমিয়ার লিগের বিবেচনায় ভোটাভুটির মাধ্যমে মৌসুমের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পেলেন পালমার।
পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত পালমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘দারুণ! প্রিমিয়ার লিগের সেরা তরুণ খেলোয়াড় বানানোর জন্য যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। ক্লাবের সব সদস্য, পরিবার এবং বন্ধুদের ছাড়া এ অর্জন কখনো সম্ভব হতো না।’
গত গ্রীষ্মের দলবদলের শেষ দিন ম্যানচেস্টার সিটি থেকে পালমারকে কিনে নেয় চেলসি। ব্লুজদের হয়ে শুরু থেকেই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা দেখিয়ে গেছেন পালমার। ৩৩ ম্যাচে ২২ গোল করার পাশাপাশি ১০টি অ্যাসিস্টও করেছেন এই ইংলিশ তারকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৩২ গোল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন তিনি।
এমন পারফরম্যান্সের কারণে মৌসুমের একপর্যায়ে চেলসিকে অনেকে মজা করে কোল পালমার স্পোর্টিং ক্লাব বলেও ডাকতে শুরু করেছিল। এই ডাকাটা অবশ্য একেবারে অযৌক্তিকও ছিল না। কদিন আগে স্কাই বেট হিসাব কষে জানিয়েছিল, এ মৌসুমে পালমারের অবদানকে বাদ দিলে চেলসি অবনমন অঞ্চলে নেমে যেত।
দারুণ পারফরম্যান্স দেখানোর পাশাপাশি দারুণ কিছু মাইলফলকও গড়েছেন পালমার। দিদিয়ের দ্রগবা ও ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের পর চেলসির হয়ে ঘরের মাঠে ১৬ গোলের কৃতিত্বও গড়েছেন তরুণ এই উইঙ্গার, যেখানে এভারটনের বিপক্ষে এক ম্যাচে ৪ গোল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে নাটকীয়ভাবে ম্যাচ জেতানোর ঘটনাও আছে।
সম্প্রতি ২২তম জন্মদিন উদ্যাপন করেছেন পালমার। তবে এর আগেই পালমার প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ২১ বা তার চেয়ে কম বয়সে মৌসুমে ৩০ বা তার বেশি গোলে অবদান রাখার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
২০১৯-২০ মৌসুমে সেরা তরুণের পুরস্কারটি চালু করা হয়। প্রথমবার পুরস্কারটি পেয়েছিলেন লিভারপুলে ট্রেন্ট আলেক্সান্দার আরনল্ড। পরের তিন মৌসুমেই এ পুরস্কার গেছে ম্যানচেস্টার সিটির ঘরে। ফিল ফোডেন টানা দুবার জেতার পর গত মৌসুমে জিতেছিলেন হলান্ড। আর এবার চেলসির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এ পুরস্কার পেলেন পালমার।
পুরস্কার পাওয়ার পথে পালমার লড়াইটি অবশ্য সহজ ছিল না। ম্যানচেস্টার সিটির ফিল ফোডেন ও আর্লিং হলান্ড, আর্সেনালের বুকায়ো সাকা ও উইলিয়াম সালিবা এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোবি মাইনুর সঙ্গে লড়াই করে এ স্বীকৃতি অর্জন করতে হয়েছে তাঁকে।