ম্যাচে উত্তেজনা ভর করতে পারে—সেই আন্দাজ করা হয়েছিল আগেই। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচ মানেই তো উত্তেজনা। প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবলে কাল রাতে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ ঘিরেও এই শঙ্কার উদ্রেক হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ঘটেছেও ঠিক তাই। ফ্রান্সের কাছে ১-০ গোলে হেরে আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর মাঠে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। থিয়েরি অঁরির কাছে ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগেনি। ফ্রান্স অলিম্পিক দলের এই কোচের ভাষায়, ম্যাচ শেষে যা ঘটেছে, সেটি অগ্রহণযোগ্য।
কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জয়ের পর থেকেই ফুটবল মাঠে দুই দেশের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় উদ্যাপনে নিজেদের খেলোয়াড় কিলিয়ান এমবাপ্পেকে অসম্মানের অভিযোগ তুলেছিল ফ্রান্স। এরপর গত মাসে আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা জয়ের পর টিম বাসে উদ্যাপনের সময় ফ্রান্সকে লক্ষ্য করে খেলোয়াড়দের বর্ণবাদী গান গাওয়ার অভিযোগ ওঠে। চেলসির আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ উদ্যাপনের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করলেও পরে সেটি মুছে ফেলেন। এ নিয়ে তখন আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল।
গতকাল রাতে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীতের সময় দুয়ো দিয়েছেন বোর্দোর ন্যুভো স্টেডিয়ামের ফরাসি সমর্থকেরা। তবে ম্যাচ চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, যা ঘটেছে ম্যাচ শেষে। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস দাবি করেছে, জয় উদ্যাপনের সময় ফরাসি মিডফিল্ডার এনজো মিলোট আর্জেন্টিনার বেঞ্চকে লক্ষ্য করে চিৎকার এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেছেন। এ ঘটনা থেকেই মূলত বিরোধের সূত্রপাত। আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্দি জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সামনেও উদ্যাপন করেছেন ফ্রান্সের খেলোয়াড়েরা, যা তাঁর মোটেও ভালো লাগেনি।
ম্যাচ শেষে মাঠেই কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। কোচ ও কর্মকর্তারাও তাতে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় ফ্রান্সের মিডফিল্ডার এনজো মিলোট লাল কার্ডও দেখেন। ফ্রান্সের ছেলেদের অলিম্পিক দলের কোচ এবং কিংবদন্তি ফুটবলার থিয়েরি অঁরির ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগেনি। সংবাদমাধ্যমকে আর্সেনাল ও ফ্রান্স কিংবদন্তি বলেছেন, ‘ম্যাচ শেষে যা ঘটেছে, তার সঙ্গে আমি একমত নই। আমার খেলোয়াড় (মিলোট) লাল কার্ড দেখেছে, যেটা আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য। এটা ঘটা উচিত হয়নি।’
অঁরি এরপর বলেছেন, ‘ঘটনাটা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। (আর্জেন্টিনার) কোচকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর পর যা ঘটেছে, সব পেছনে ফেলে এসেছি।’ আর্জেন্টিনার খেলা নিয়েও কথা বলেন অঁরি, ‘খুব কঠিন ছিল। আর্জেন্টিনার দখলে ছিল বল, আমরা খেলেছি প্রতি–আক্রমণের ওপর। গোলটা দ্রুত পেয়ে গেলেও আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে, প্রেস করতে হয়েছে...এটা সহজ না।’
সেমিফাইনালে ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ মিসর। মঙ্গলবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।