২ লাখের হলান্ডের দাম এখন ২০ কোটি ইউরো
আর্লিং হলান্ড ও গোল এখন যেন সমার্থক। প্রায় প্রতি ম্যাচে গোল করাকে যেন নিয়মে পরিণত করেছেন এই স্ট্রাইকার। চলতি মৌসুমের কথাই ধরা যাক। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ ম্যাচ খেলে হলান্ড গোল করেছেন ১১টি। এর মধ্যে ৬ ম্যাচেই গোল পেয়েছেন তিনি; আছে দুটি হ্যাটট্রিকও।
এমনকি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ৬ ম্যাচের মধ্যে টানা ৫টিতেই লক্ষ্য ভেদ করেছেন এই নরওয়েজীয় তারকা। বল পায়ে এমন পারফরম্যান্সের পর হলান্ডের মূল্য যে তরতর করে বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
সম্প্রতি ট্রান্সফারমার্কেটের প্রকাশিত দামি খেলোয়াড়ের তালিকায়ও মিলেছে সে প্রমাণ। ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইটটির হিসাবে, এ মুহূর্তে হলান্ডই সবচেয়ে দামি ফুটবলার। তাঁর বর্তমান বাজারদর ২০ কোটি ইউরো। অথচ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ১৬ বছর বয়সী হলান্ডের বাজারমূল্য যখন প্রথম সামনে আসে, তখন তাঁর দাম ছিল ২ লাখ ইউরো।
সে সময় হলান্ড খেলতেন নরওয়ের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব ব্রায়নেতে। এরপর ২০১৭ সালের হলান্ড দল বদলে ১ লাখ ইউরোতে আসেন নরওয়ের নামী ক্লাবগুলোর একটি মোলডেতে। তখনো তাঁর বাজারদর ছিল ২ লাখ ইউরো।
তবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে হলান্ডের মূল্য গিয়ে ঠেকে ২০ লাখ ইউরোতে। মোলডেতে তাঁর পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাঁকে কিনে নেয় সাল্জবুর্গ। সে সময় হলান্ডের বাজারদর ছিল ৫০ লাখ ইউরো।
অস্ট্রিয়ান ক্লাবটিতে গিয়েও গোল করার ধারা থামাননি হলান্ড। সাল্জবুর্গের হয়ে ২৭ ম্যাচে করেন ২৯ গোল। তবে হলান্ড ইউরোপিয়ান পরাশক্তিদের নজরে আসেন চ্যাম্পিয়নস লিগে ৬ ম্যাচে ৮ গোল করার পর। সেবার শুধু রবার্ট লেভানডফস্কি হলান্ডের চেয়ে বেশি গোল করেছিলেন।
ফলে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শীতকালীন দলবদলে হলান্ডকে নেওয়ার দৌড়ে অন্তত ৪০ ক্লাবের নাম শোনা যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ২ কোটি ইউরোতে কিনে নেয় জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। সিগনাল ইদুনা পার্কে যাওয়ার সময় হলান্ডের বাজারদর ছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। উন্নতির ধারাবাহিকতা ডর্টমুন্ডেও ধরে রাখেন এই স্ট্রাইকার। ম্যাচের পর ম্যাচে গোল করে তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। ডর্টমুন্ডের হয়ে ৮৯ ম্যাচে হলান্ডের গোল ছিল ৮৬টি। সঙ্গে আছে ২৩টি গোলে সহায়তাও। যেখানে চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৩ ম্যাচে করা ১৫ গোলও আছে।
এর ফলস্বরূপ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হলান্ডের মূল্য গিয়ে দাঁড়ায় ৬ কোটি ইউরো। মার্চে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৮ কোটি ইউরো। আর সে বছরের নভেম্বরে ১০ কোটি ইউরো স্পর্শ করে হলান্ডের দাম। আর হলান্ড যখন ২০২২ সালের জুলাইয়ে ডর্টমুন্ড ছাড়েন, তখন তাঁর মূল্য ছিল ১৫ কোটি ইউরো। দামের তুলনায় ম্যানচেস্টার সিটি অবশ্য বেশ কম মূল্যেই তাঁকে পেয়ে যায়। ৬ কোটি ইউরোতেই সিটি কিনে নেয় তাঁকে।
সিটিতে এসেও গোলের ধারাবাহিকতা থেকে বিচ্যুত হননি হলান্ড। পেপ গার্দিওলার অধীন ১০৭ ম্যাচেই করেন ১০১ গোল। বর্তমানে তাঁর মূল্য ২০ কোটি ইউরো স্পর্শ করেছে। এর আগে মাত্র একজন ফুটবলারের দাম ২০ কোটি ইউরো ছুঁয়েছিল।
২০১৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এমবাপ্পের বাজারমূল্য প্রথমবারের মতো ২০ কোটির কোটা স্পর্শ করেছিল। সেই এমবাপ্পের বর্তমান বাজারমূল্য কমে হয়েছে ১৮ কোটি ইউরো। এমবাপ্পের দুই রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ জুড বেলিংহাম ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দামও তাঁর সমান ১৮ কোটি ইউরো। সামনের দিনগুলোয় হলান্ডের দাম আরও বাড়ে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।