কম্বোডিয়া যাওয়ার আগে দলের কাছ থেকে গোল চেয়েছিলেন কোচ সাইফুল বারী। গোল করতে না পারা যে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৭ দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, সেটি বোঝা গিয়েছিল মাসখানেক আগে ভুটানে সাফ অনূর্ধ্ব–১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে। সে কারণেই এএফসি অনূর্ধ্ব–১৭ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের আগে কোচের কণ্ঠে ছিল গোলের আকুতি। আজ নমপেনের জাতীয় স্টেডিয়ামে কোচের সেই দাবি পূরণ করতে পারেনি অনূর্ধ্ব–১৭ দল। স্বাগতিক কম্বোডিয়াকে ১০ জন পেয়ে ম্যাচে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে খেলেও ১–০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। খেলার ধারার বিপরীতে ম্যাচের ৮৫ মিনিটে একমাত্র গোলটি করেছেন দারো তাচে।
ম্যাচে প্রথম থেকেই খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ লিগের দল ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেডের যুব একাডেমির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত উইঙ্গার আরহাম ইসলাম। ডান প্রান্ত দিয়ে বারবার আক্রমণে উঠেছে আরহাম। তবে বোঝাই গেছে, আরহামকে নিয়ে বাড়তি সতর্ক ছিল কম্বোডিয়ার রক্ষণভাগ। আরহামের পায়ে বল গেলেই দু–তিনজন ডিফেন্ডার তাঁকে ঘিরে ধরেছে। ৭৮ মিনিট পর্যন্ত মাঠে ছিল আরহাম। প্রথম ম্যাচ হিসেবে খুব একটা মন্দ খেলেনি।
গোল মিসের মহড়াই বাংলাদেশ দলকে ডুবিয়েছে। অপু রহমান সুযোগ নষ্ট করেছে। করেছে মোর্শেদ আলী–শফিক রহমানরা। ম্যাচের ২৪ মিনিটে আরহামের কাছ থেকে বল নেওয়ার চেষ্টায় কম্বোডিয়ার ডিফেন্ডার ভিসাল কিয়া তার মাথায় পা দিয়ে আঘাত করে বসেন। রেফারির কাছে ভিসালকে লাল কার্ড দেখানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। কম্বোডিয়াকে ১০ জনের দল হিসেবে পেয়ে খেলার নিয়ন্ত্রণ প্রায় পুরোটাই নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু একের পর এক আক্রমণ করেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পাওয়া যায়নি। ৩৪ মিনিটে কম্বোডিয়ার গোলকিপার ফারিব মাটকে একা পেয়েও গোল করতে পারেনি অপু রহমান। ৪৫ মিনিটে কম্বোডিয়ার বক্সের একেবারে মাথায় ফ্রি–কিক পেলেও সেটি লক্ষ্যে রাখা যায়নি। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে অপু আরও একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি কর্নার থেকে একেবারে কম্বোডিয়ার গোলমুখে দাঁড়িয়েও গোল করতে পারেনি অপু ও মিঠু চৌধুরী। প্রথমে গোলপোস্টের একেবারে সামনে থেকে মিঠুর শট ফেরায় কম্বোডিয়ার গোলকিপার, এরপর অপু যে শট নেয়, সেটি লক্ষ্যে ছিল না। ৭৮ মিনিটে মোর্শেদ আলী বক্সের ঠিক ওপর থেকে ভালো একটি শট নিলেও সেটি ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে কম্বোডিয়ার গোলকিপার।
৮৫ মিনিটে একটি প্রতি–আক্রমণ থেকে গোল হজম করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি রক্ষণভাগের খেলোয়াড়েরা নিজেদের জায়গায় ফিরতে ফিরতেই দারো তাচের শট গোলকিপার আলিফ রহমানের নাগালের বাইরে দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। এর ঠিক আগে সালাউদ্দিন শাহেদ প্রায় ফাঁকায় দাঁড়িয়ে বল বারের ওপর দিয়ে মেরেছে।
গোল হজমের পরের ৫ মিনিট আর যোগ করা ৬ মিনিট, মোট ১১ মিনিট খেলার পুরোটাই হয়েছে কম্বোডিয়ার অর্ধে। একের পর এক আক্রমণেও কম্বোডিয়ার রক্ষণ ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯২তম মিনিটে সালাউদ্দিন শাহেদ যে গোলটি মিস করে, সেটি ছিল দৃষ্টিকটু।
এএফসি অনূর্ধ্ব–১৭ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে ‘বি’ গ্রুপে কম্বোডিয়া ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ম্যাকাও, ফিলিপাইন ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ফিলিপাইনের বিপক্ষে ২৩ অক্টোবর। ২৫ অক্টোবর ম্যাকাও ও ২৭ অক্টোবর আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলা।