রোনালদোর দুঃসময়ে তাঁর পাশে সাবেক সতীর্থ রুনি
২০০৪ থেকে ২০০৯—পাঁচ বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে দুজন একসঙ্গে খেলেছেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তখন গনগনে সূর্য। তাঁর আঁচে প্রতিপক্ষের রক্ষণ গলে যায় আরকি! সেই সময় খুব কাছ থেকে রোনালদোকে দেখেছেন ওয়েইন রুনি। আকাশে–বাতাসে শুনেছেন শুধুই তাঁর সতীর্থের প্রশংসা।
সেই রোনালদো এখন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। তাঁর সেই সময়কার ম্যান ইউনাইটেড সতীর্থ রুনি তো অবসর নিয়েছেন আরও আগেই। খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় জানিয়ে কোচিং পেশা বেছে নেওয়া রুনি এখন দেখছেন গতি হারিয়ে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়া রোনালদোকে। আকাশে–বাতাসে শুনছেন তাঁর সাবেক সতীর্থের সমালোচনা।
একটা সময় ছিল, অনেক কঠিন ম্যাচ ইউনাইটেডকে একাই জিতিয়েছেন রোনালদো। ইউনাইটেডের প্রায় প্রতিটি ম্যাচের পর প্রশংসার হাওয়া বয়ে যেত তাঁকে নিয়ে। পাঁচ বছরে তিনটি লিগ, একটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ ইউনাইটেডের হয়ে জিতেছেন ছোট–বড় নয়টি শিরোপা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সেই ৫ বছরে ইউনাইটেডের হয়ে ম্যাচে ১১৮টি গোল করেছেন পর্তুগিজ উইঙ্গার।
ইউনাইটেডের দুঃসময়ে বড় আশা নিয়ে ‘ঘরের ছেলে’কে ফিরিয়ে এনেছিল ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটি। জুভেন্টাস থেকে ২০২১ সালে ইউনাইটেডে ফিরে প্রথম মৌসুমে খুব বেশি ভালো তিনি করতে পারেননি। ৩৮ ম্যাচে করেছেন ‘মাত্র’ ২৪ গোল। দলকে তুলতে পারেননি চ্যাম্পিয়নস লিগে।
এরপর নিজেই চলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইউনাইটেড তাঁকে ছাড়তে চায়নি বলে অন্যত্র যাওয়া হয়নি রোনালদোর। তাঁকে রেখে দিলেও ইউনাইটেডের নতুন কোচ এরিক টেন হাগ রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক ফরোয়ার্ডকে অনেকটাই ব্রাত্য করে ফেলেছেন দলে। শুরুর একাদশে খেলান না তাঁকে, লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচে তো রোনালদোর সময় কেটেছে বেঞ্চ গরম করে।
এর পর থেকেই রোনালদোকে নিয়ে আলোচনা বেগবান হয়েছে। পক্ষে–বিপক্ষে কথা বলছেন অনেকেই। ইউরোপা লিগে ইউনাইটেডের সর্বশেষ ম্যাচের পুরোটা সময় খেললেও গোল পাননি রোনালদো। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ নষ্ট করেছেন তিনি। এরপর তো আবার শুরু হয় তাঁকে নিয়ে সমালোচনা।
সাবেক সতীর্থের এমন দুঃসময়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন রুনি। বলেছেন, সময় অনেক কিছুই বদলে দেয়, ‘ক্রিস্টিয়ানো...সে আর মেসি ফুটবলে সর্বকালের অন্যতম সেরা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সবাইকেই বয়সে ধরে!’ রুনি এরপর আরেকটি বাস্তবতা তুলে ধরেন সবার সামনে, ‘২২ বা ২৩ বছর বয়সে সে যেমন খেলোয়াড় ছিল, নিশ্চিত করেই এখন আর তেমনটা নেই।’
রুনি এখানেই থামেননি। তিনি বলে চলেন, ‘তার জন্য এটা কঠিন। তাকে যদ্দুর জানি, তার পক্ষে বেঞ্চে বসে থাকাটা খুব কঠিন।’ এরপর যেন রোনালদোকে একটি পরামর্শও দিলেন রুনি, ‘আমি নিশ্চিত, সে ধৈর্য ধরে থাকলে তারও সময় আসবে। তার কাছে আসা সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাকে ফিরে আসতে হবে।’