বিদায়েও গৌরব কমছে না ফিলিস্তিনের
এশিয়ান কাপে কাতার ও ফিলিস্তিনের শেষ ষোলোর ম্যাচ, যেখানে একটি দল ছিল স্বাগতিক। কিন্তু গ্যালারির দিকে তাকিয়ে বোঝার উপায় ছিল না কোন দলটি আসলে স্বাগতিক। গতকাল রাতে আল বায়ত স্টেডিয়ামে স্বাগতিক কাতারের চেয়ে দর্শক-সমর্থন কোনো অংশে কম ছিল না ফিলিস্তিনের। দর্শকদের কাছ থেকে এমন সমর্থন পেয়ে মাঠেও দারুণ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন।
প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোয় ওঠা দলটি প্রথমার্ধে স্বাগতিকদের চমকে দিয়ে এগিয়েও গিয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত আর কাতারের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান ২-১ করে কাতার। এতে ফিলিস্তিনকে বিদায় করে শেষ আটের টিকিট কাটে কাতার।
শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়ে শেষ আটে যাওয়া না হলেও দলের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত হওয়ার কথা বলেছেন ফিলিস্তিন কোচ মাকরাম দাবুব। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘আমার খেলোয়াড়েরা নিজেদের উজাড় করে দিয়ে খেলেছে। শুরুতে প্রতিপক্ষকে খুব একটা জায়গা দেয়নি তারা।’
ফিলিস্তিনি খেলোয়াড়দের জন্য মাঠে নেমে ফুটবল খেলাটা অন্য আরেকটা দলের খেলোয়াড়দের মতো নয়। ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিপর্যয় ও স্বজন হারানোর যন্ত্রণাকে বুকে নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এরপরও দেশটিকে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দিতে পেরেছেন তাঁরা। গ্রুপ পর্বে হংকংকে হারিয়ে ফিলিস্তিন আদায় করে নেয় এশিয়ান কাপের প্রথম জয়, যা তাদের নিয়ে আসে নকআউটের মঞ্চেও। পরের ধাপ আর পেরোনো না হলেও যে পরিস্থিতিতে তারা এত দূর এসেছে, সেটিই ম্যাচ শেষে মনে করিয়ে দিয়েছেন দাবুব।
দাবুব আরও বলেন, ‘তারা (খেলোয়াড়েরা) অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে। কিন্তু এরপরও ফিলিস্তিনিদের জন্য দারুণ প্রদর্শন করে দেখাতে সক্ষম হয়েছে। তাদের কাছ থেকে এর বেশি আমি চাইতে পারি না। তারা ফিলিস্তিনের ফুটবল এবং ফিলিস্তিনের মানুষকে সম্মানিত করেছে। তারাই আমার চ্যাম্পিয়ন।’
শুধু কোচকেই নয়, কাতারে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরাও দেশের খেলোয়াড়দের এমন পারফরম্যান্সে গর্বিত। সামার উসতাজ নামের এক ফিলিস্তিনি আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘এমনকি তারা যদি কোনো ম্যাচ না-ও জিতত কিংবা কোনো গোল নাও করত, তবু আমরা তাদের নিয়ে গর্বিত হতাম। আমরা দেখিয়েছি, কোনো কিছুই আমাদের ভাঙতে পারবে না। এমনকি যখন আমাদের খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হয়, সেখান থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়ে আমরা লড়াই করি।’
ইউসুফ আয়মান নামের অন্য এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, ‘আমরা সব চ্যালেঞ্জের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারি।’