‘আদর্শ’ রোনালদোর পাস থেকে প্রথম গোল আর্জেন্টাইন তরুণের
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো প্রথম ট্রফি জিতেছেন কবে? ১৮ বছর আগে, ২০০৪ সালের ২২ মে এফ এ কাপ ফাইনালে। মিলওয়ালকে ৩–০ গোলে হারানোর সে ম্যাচে গোলও করেন রোনালদো। আলেহান্দ্রো গারনাচোর তখন জন্মও হয়নি।
প্রায় দুই মাস পর পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন আর্জেন্টাইন উইঙ্গার। সেই ছেলেটিই কিনা কাল ইউরোপা লিগে রোনালদোর পাস থেকে গোল করে জেতালেন ইউনাইটেডকে। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ক্লাবটির হয়ে নিজের প্রথম গোলটি তুলে নেন গারনাচো।
শুধু প্রথম গোল বলে নয়, যাঁর খেলা দেখে নিজেও ফুটবলার হতে চেয়েছেন, যাঁকে আদর্শ মেনে ফুটবলার হয়ে উঠেছেন, সেই রোনালদোর পাস থেকে গোল করা স্বপ্নের মতো বলেই এই গোলটি কখনো ভুলতে পারবেন না ১৮ বছর বয়সী গারনাচো।
গত সপ্তাহেই ইউনাইটেডের প্রথম একাদশে অভিষেক হয়েছে তাঁর। রোনালদোরও ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পা পড়েছিল ১৮ বছর বয়সে। এখন ৩৮–এর দিকে ছুটতে থাকা রোনালদো ক্লাবে এখন নিজের ক্যারিয়ারের বেলা শেষের গান শুনতে পাচ্ছেন। আর গারনাচো গাইছেন নতুন দিনের গান।
দুরকম সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া দুই খেলোয়াড়ের বোঝাপড়ায় কাল জয়সূচক গোল পেয়েছে ইউনাইটেড। ডান প্রান্ত থেকে বল পেয়ে ছুটছিলেন রোনালদো। বাঁ প্রান্তে গারনাচোকে সুবিধাজনক জায়গায় দেখে থ্রু পাস দেন। বলটা ধরে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে ইউনাইটেডের হয়ে গোলের খাতা খোলেন রোনালদোকে ‘সর্বকালের সেরা’ বলে সের্হিও আগুয়েরোর খোঁচা হজম করা এই ফুটবলার।
সেই খোঁচা গত এপ্রিলের ঘটনা। গারনাচো নিশ্চয়ই সেসব ভুলে এখন স্বপ্নের মতো সময় পার করছেন। গোলের পর রোনালদো যখন তাঁকে অভিনন্দন জানাতে এলেন তখনই পর্তুগিজ তারকার কাছে তাঁর মতো করে গোল উদযাপনের অনুমতি চান গারনাচো। তাঁর মাথা চাপড়ে দিয়ে এবং মুচকি হেসে ‘ন্যাপিং’ গোল উদযাপনের অনুমতি দিতে কুণ্ঠা করেননি রোনালদোও।
জয়ের পর রোনালদোকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন গারনাচো। ইনস্টাগ্রামে রোনালদোকে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তটির জন্য ১৮ বছর ১২৫ দিন ধরে স্বপ্ন দেখেছি। ধন্যবাদ আমার আদর্শ।’ শুধু তাই নয়, রোনালদোর একটি পোস্টে করা মন্তব্যেও তাঁকে আবার ‘ধন্যবাদ’ জানান গারনাচো। এই মন্তব্যে ‘গোট’ ইমোজিও ব্যবহার করেছেন তিনি। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড সেখানে উত্তরে লেখেন, ‘এই মৌসুমে গোল নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। সমর্থকদের ধন্যবাদ, কারণ তারা আমাদের নিয়ে কখনোই আশা হারায় না।’
জিতলেও নিজেদের গ্রুপের সেরা দল হতে পারেনি ইউনাইটেড। গ্রুপে দ্বিতীয় হওয়ায় এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ইউরোপা লিগে নেমে যাওয়া দলের বিপক্ষে প্লে অফ খেলতে হবে রোনালদোদের। গ্রুপ–সেরা হতে কমপক্ষে দুই গোল ব্যবধানে জিততে হতো ইউনাইটেডকে।
কিন্তু তা না হওয়ায় চ্যাম্পিয়নস লিগের এ মৌসুমে আটটি গ্রুপ থেকে তৃতীয় দল হিসেবে ইউরোপা লিগে নেমে যাওয়া যেকোনো একটি দলের বিপক্ষে নকআউট প্লে অফ খেলতে হবে। সেই আটটি দল হলো—আয়াক্স, বার্সেলোনা, জুভেন্টাস, বেয়ার লেভারকুসেন, সালজবুর্গ, সেভিয়া, শাখতার দোনেৎস্ক ও স্পোর্টিং লিসবন। ৭ নভেম্বর ড্র–তে চূড়ান্ত হবে কারা হচ্ছে ইউনাইটেডের শেষ ষোলোয় ওঠার পথে প্লে–অফের প্রতিপক্ষ।