৭ গোলের রোমাঞ্চে হ্যাটট্রিকের সঙ্গে রেকর্ডও পালমারের
মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই ম্যাচটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ছিনিয়ে নিল চেলসি। চেলসি না বলে কোল পালমার বলাই ভালো। শেষ দুই মিনিটের গোল দুটি করেছেন ২১ বছর বয়সী এই উইঙ্গারই। যে জোড়া গোলে চেলসি ইউনাইটেডের বিপক্ষে পেয়েছে নাটকীয় জয়, পালমার পেয়েছেন হ্যাটট্রিক আর সেই সঙ্গে হয়েছে প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে হয়েছে নতুন রেকর্ডও।
চেলসির জয়টা ৪-৩ ব্যবধানের, শেষ দুই মিনিটে দুই গোল না হলে যেটি শেষ হওয়ার কথা ২-৩ গোলের হারে। ১৯ ও ১০০তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করা পালমার ১০১তম মিনিটে করেন দলের জয়সূচক ও ব্যক্তিগত হ্যাটট্রিকের গোলটি। ফুটবল পরিসংখ্যানবিষয়ক প্রতিষ্ঠান অপটা বলছে, ম্যাচের ১০০ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড সময়ে দেওয়া পালমারের গোলটি প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে ম্যাচ জেতানো শেষ সময়ের গোল। এত দেরিতে গোল করে আর কেউ ম্যাচ জেতাতে পারেননি। প্রিমিয়ার লিগে আরও পরে করা দুটি গোল আছে, কিন্তু দুটিই ছিল সমতাসূচক।
স্টামফোর্ড ব্রিজের ম্যাচটিতে শেষের নাটকীয়তার দেড় ঘণ্টার খেলা ছিল দুই ভাগে বিভক্ত। ৪ মিনিটে কনর গ্যালাঘার এবং ১৯ মিনিটে পালমারের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় চেলসি। ম্যাচে স্বাগতিকদের নিয়ন্ত্রণ আলগা হতে শুরু করে ময়েস কাইসেদোর এক ভুলে। ৩৪ মিনিটে কাইসেদো আলেহান্দ্রো গারনাচোর কাছে ভুলে বল তুলে দিলে আর্জেন্টাইন তরুণ সেটা জালে পাঠান। এর পাঁচ মিনিট পর ইউনাইটেড সমতার গোলটিও পেয়ে যায়, গোলদাতা ব্রুনো ফার্নান্দেজ।
চেলসি গ্যালারিকে স্তব্ধ করে ইউনাইটেড তৃতীয় গোল করে ৬৭ মিনিটে। ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার অ্যান্টনির চমৎকার বাড়ানো বলে মাথা ছুঁইয়ে ব্যবধান ৩-২ করেন গারনাচো। এই স্কোরলাইনেই শেষ হতে চলা ম্যাচ একেবারে অন্তিম মুহূর্তে পালমারের জোড়া গোলে নাটকীয়তায় রূপ নেয়।
এর মধ্যে পালমার যে গোলে হ্যাটট্রিক ও দলকে জয় এনে দেন, সেটিও ছিল নাটকীয়তাপূর্ণ। এনজো ফার্নান্দেজের বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন পালমার। এরপর যে শট নেন, সেটি স্কটিশ মিডফিল্ডার স্কট ম্যাকটোমিনাইয়ের গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে পড়ে। গত বছর ম্যানচেস্টার সিটিতে পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া পালমারের এটি চেলসির হয়ে লিগে ১৬তম গোল।
স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ শেষে কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পেয়েছেন এই ইংলিশ তরুণ, ‘ওর প্রভাবটা দুর্দান্ত। চমৎকার খেলেছে। ওর সম্পর্কে বেশি কিছু বলা কঠিন। আজ সে তাঁর মানসিকতা ও মান দেখিয়েছে।’
ম্যাচের শেষ দিকে দলকে কীভাবে উজ্জীবিত রেখেছিলেন, তা জানাতে গিয়ে পচেত্তিনো বলেন, ‘আমাদের হেরে যাওয়া অন্যায্য হতো। আমরা কেন ম্যাচ হারব? ফুটবল আসলে এমনই। সব সময় বিশ্বাস রাখতে হয়। আমি খেলোয়াড়দের বলছিলাম আর দুই মিনিট, দুই মিনিট। আমাদের বিশ্বাস ছিল জয়ের গোলটি করতে পারব। ওপরের দিকের সঙ্গে ব্যবধান কমাতে জয়টা আমাদের অবশ্যই পেতে হতো।’
ইউনাইটেডকে হারানোর পর লিগ পয়েন্ট তালিকায় চেলসির অবস্থান ১০ নম্বরে। চেলসির পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ৪৩, আর ছয় নম্বরে থাকা ইউনাইটেডের ৩০ ম্যাচে ৪৮। পরের ম্যাচে জিতলে পয়েন্ট তালিকার সাতে উঠে আসতে পারবে পচেত্তিনোর দল, থাকবে ইউরোপা লিগ বা কনফারেন্স লিগের লড়াইয়েও।