গত দুই গ্রীষ্মকালীন দলবদলের সময় আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। দুবারই মরিয়া হয়ে এই ফরাসি স্ট্রাইকারকে ধরে রাখে পিএসজি। রিয়াল মাদ্রিদ আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত এমবাপ্পেকে কিনতে পারেনি। হতাশ হয়ে এই ফরাসি স্ট্রাইকারকে পাওয়ার আশা ছাড়তে হয় ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে সফলতম ক্লাবটিকে।
রিয়ালে যাওয়া ঠেকিয়ে গত মে মাসে এমবাপ্পের সঙ্গে নতুন করে তিন বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করে পিএসজি। তখন মনে হচ্ছিল দলবদলে এমবাপ্পে–আলাপ এবার বোধ হয় শেষই হয়ে গেল।
কে জানত, এমবাপ্পের দলবদল যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পের সংজ্ঞার মতো, ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ।’ চুক্তি নবায়নের পাঁচ মাস যাওয়ার আগেই পিএসজির সঙ্গে এমবাপ্পের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ইউরোপিয়ান মিডিয়ার খবর, জানুয়ারিতেই প্যারিস ছাড়তে চান এমবাপ্পে। তবে পিএসজির ধারণা, ক্লাবকে চাপে রাখতেই বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে।
এমবাপ্পেকে পাল্টা চাপে ফেলার কৌশল হিসেবে ক্লাব ছাড়ার ব্যাপারে শর্তও দিয়েছে পিএসজি। এমবাপ্পের নতুন ক্লাব কখনোই রিয়াল মাদ্রিদ হতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে উচ্চারিত হচ্ছে লিভারপুলের নাম। গত দলবদলে রিয়ালের পাশাপাশি লিভারপুলের সঙ্গে কথা হয়েছিল বলে এমবাপ্পে নিজেই নিশ্চিত করেছিলেন। ইংলিশ ক্লাবটির ব্যাপারে তাঁর মায়ের বিশেষ আগ্রহ আছে বলেও জানান বিশ্বকাপজয়ী তারকা।
তবে এমবাপ্পেকে কেনার ক্ষেত্রে লিভারপুলের জন্য বড় বাধা হতে পারে চড়া দাম। পিএসজির একটি সূত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফকে বলেছে, ক্লাবটি মনে করে এমবাপ্পে ২৬৩-৩০৬ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৩৫ কোটি ইউরো) মানের খেলোয়াড়।
এই দামে এখন কোনো ক্লাব এমবাপ্পেকে কিনতে রাজি হলে নেইমারের ১৯৮ মিলিয়ন পাউন্ডকে ছাপিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হবে সেই ক্লাবকে। ২০১৭ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়েই বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে এসেছিলেন নেইমার।
আরেকটি সূত্র বলছে, পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আফসোস করছেন এমবাপ্পে নিজেই। ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড নাকি বলেছেন, পিএসজিতে থেকে গিয়ে তিনি ভুল করেছেন।
শুধু মাঠের বাইরেই নয়, মাঠেও নিজের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নন এমবাপ্পে। নেইমারের সঙ্গে বিরোধ, কোচের সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো না হওয়া। সব মিলিয়ে যে এই ফরাসি তারকা খুশি নন, তা কদিন আগে আন্তর্জাতিক বিরতির সময় স্পষ্ট করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, পিএসজির চেয়ে জাতীয় দলের হয়েই বেশি স্বাধীনতা পান তিনি।
এখন এমবাপ্পের ক্লাব ছাড়তে চাওয়ার এই দাবিকে পিএসজিতে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তবে এটি সত্যিই কৌশল নাকি আসলেই অন্য কোথাও নিজের ঠিকানা খুঁজে নিতে চান এই তারকা, সে উত্তর সময়ই বলে দেবে।