আল হিলাল ১–১ আল ফেইহা
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের দুটি স্টেডিয়ামে দুই রকম আয়োজন। আয়োজক অবশ্য একটি ক্লাবই—আল হিলাল।
প্রায় ৬৯ হাজার ধারণক্ষমতার কিং ফাহাদ ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম শুধু রিয়াদের নয়; দেশটির বৃহত্তম ক্রীড়া ভেন্যু। এই স্টেডিয়ামের একটা ডাকনামও আছে—মুক্তা!
কিং ফাহাদের ছেলে প্রিন্স ফয়সাল বিন ফাহাদের নামে কয়েক কিলোমিটার দূরে নির্মিত স্টেডিয়াম এতটা বড় নয়। এর ধারণক্ষমতা সাড়ে ২২ হাজার। তবে অপেক্ষাকৃত ছোট এই মাঠেই হয়েছে সৌদি প্রো লিগের ম্যাচ।
তার আগে কিং ফাহাদ ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে নিজেদের ক্লাব ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ‘মুক্তা’কে বরণ করে নিয়েছে আল হিলাল। বর্ণিল আলোকচ্ছটা আর আলো–আঁধারির মায়াবি খেলায় নেইমারকে নিজেদের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ক্লাবটি।
আল হিলাল সমর্থকদের ভালোবাসায় নেইমার সিক্ত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রিন্স ফয়সাল বিন ফাহাদ স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ম্যাচ। সেই ম্যাচ দেখতে ছেলেকে নিয়ে ভিআইপি বক্সে হাজির নেইমার। কিন্তু তাঁকে পেয়েও যেন না পাওয়ার অনুভূতি নিয়ে খেলতে হয়েছে নতুন সতীর্থদের।
সশরীরে হাজির হয়ে নেইমার নিজেদের ‘হিলালি’ ঘোষণা দেওয়ার রাতে সতীর্থরা তাঁকে জয় উপহার দিতে পারেননি। আল ফেইহার বিপক্ষে ম্যাচটা ১–১ গোলে ড্র করেছে আল হিলাল।
একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে আল তা’য়িকে ২–০ ব্যবধানে হারিয়েছে করিম বেনজেমা, এনগোলো কান্তে, ফাবিনিওদের আল ইত্তিহাদ। তবে আজ এই ৩ তারকার কেউ গোল পাননি। দলের হয়ে গোল দুটি করেছেন মরক্কোর হয়ে কাতার বিশ্বকাপে খেলা আবদেররাজ্জাক হামদাল্লাহ ও বদলি নামা সৌদি উইঙ্গার সালেহ আল আমরি।
লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আল রাইদকে ৩–০ ব্যবধানে হারিয়েছিল আল ইত্তিহাদ। টানা দুই জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে বেনজেমার দল। আর নিজেদের প্রথম ম্যাচে আবহাকে ৩–১ ব্যবধানে হারানো আল হিলাল আজ ঘরের মাঠে আল ফেইহার সঙ্গে ড্র করে নেমে গেছে ছয়ে।
ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য নেইমারকে খুশির উপলক্ষ এনে দিয়েছিলেন তাঁর দুই স্বদেশি মাইকেল ও ম্যালকম। ১০ মিনিটে ডি বক্সের বাঁ পাশ থেকে বাড়ানো ম্যালকমের পাসে গোল করেন মাইকেল। কিন্তু ভিএআরে অফসাইডের ফাঁদে পড়েন মাইকেল। তাঁর সেই গোল বাতিল হয়ে যায়।
৫ মিনিট পরেই হয়েছে ‘বৈধ’ গোল। তবে সেটা নেইমারের জন্য মন খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্তব্ধ করে দিয়েছে আল হিলাল সমর্থকদের। ওই গোলে যে এগিয়ে গেছে আল ফেইহা। বাঁ পাশ দিয়ে ডি বক্সে ঢুকে দারুণভাবে ড্রিবল করে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে জাল কাঁপান জাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্যাশন সাকালা।
সমতায় ফিরতে অবশ্য দেরি করেনি আল হিলাল। ২০ মিনিটে সেই মাইকেলের জোরালো শট ফেইহা গোলরক্ষক ভ্লাদিমির স্টইকোভিচি রুখে দিলেও বল পেয়ে যান আবদুল্লাহ আলহামদান। ফেইহা ডিফেন্ডারদের জটলার মধ্যে থেকেই বল জালে জড়ান সৌদির এই ফরোয়ার্ড।
এরপর জয়সূচক গোল পেতে সর্বস্ব দিয়ে খেলেছে আল হিলাল। ৭৭% বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা দলটি গোলের উদ্দেশে শট নেয় ২০টি; যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু ফেইহার জমাট রক্ষণ দ্বিতীয়বার ভাঙা সম্ভব হয়নি। নতুন সতীর্থদের খেলা দেখতে আসা নেইমারকে তাই কিছুটা অতৃপ্তি নিয়েই চলে যেতে হয়েছে।
আল হিলালের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় আল রাইদের বিপক্ষে। সব ঠিক থাকলে সে ম্যাচ দিয়েই ‘হিলালি’ নেইমারের অভিষেক হতে পারে।