বার্সার কাছে বিধ্বস্ত হয়ে কি নতুন খেলোয়াড় কিনবে রিয়াল
‘এল ক্লাসিকো’তে বার্সেলোনার কাছে বড় হারের পর থেকেই সমালোচনার মুখে রিয়াল মাদ্রিদ। সেদিন রিয়াল শুধুই হারেইনি, বরং মাঠের প্রতিটি জায়গায় বার্সার খেলোয়াড়দের কাছে নাকাল হয়েছে। দলের এই দুরবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন রিয়াল সমর্থকেরাও। প্রশ্ন উঠেছে, এই দল নিয়ে আসলেই বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব কি না?
এমনকি শীতকালীন দলবদলে খেলোয়াড় কেনার দাবিও তুলেছেন অনেকে। কিন্তু রিয়ালের কি আসলেই এমন দুরবস্থা? যদি তা–ই হয়, তবে কি এই দলবদলে নতুন খেলোয়াড় দলে আনা হবে? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’র দাবি, এই হারের পর এখনই স্কোয়াড বদলে ফেলতে চায় না রিয়াল মাদ্রিদ।
আগের মৌসুমে ফিরে তাকালে রিয়ালের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তা হওয়ার কারণ থাকবে সামান্যই। এমনকি দুটি মৌসুমের মাঝে মিলও পাওয়া যাবে অনেক। গত মৌসুমে কোপা দেল রেতে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল রিয়াল। পার্ক দে প্রিন্সেসে পিএসজির কাছে পেতে হয়েছিল বড় হারের স্বাদ।
সে সময়ও প্রশ্ন উঠেছিল রিয়ালের সামর্থ্য নিয়ে। সমালোচকদের ছুরির নিচে পড়েছিলেন কোচ এবং খেলোয়াড়েরা। তবে এরপরও রিয়ালের কার্লো আনচেলত্তি ও তাঁর দল ছিল শান্ত। এমনকি দলের কর্তারাও হতাশায় মুষড়ে পড়েননি। সমর্থকেরা কিছুটা ধৈর্যহারা হলেও রিয়ালের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বরং ধৈর্যই দেখিয়েছিলেন সে সময়। দলের ওপর এই আস্থা রাখার ফল ঠিকই পেয়েছিল ‘লস ব্লাঙ্কোস’ শিবির। এবারও দেখা মিলছে সেই একই চিত্রের। গত মৌসুমে ঘুরে দাঁড়িয়ে রিয়াল যে সাফল্য এনে দিয়েছিল সেটিও ভুলে যাননি রিয়াল কর্তারা।
বার্সার কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার দিনও প্রতি ম্যাচের মতো দলের ড্রেসিংরুমে যান দলের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। যৌক্তিকভাবেই ফাইনালে যা হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল সবার চোখেমুখে। দল এবং দলের পারফরম্যান্স স্বাভাবিকভাবেই কারও ভালো লাগেনি। তবে মাঝ মৌসুমে দলের এই ফলে অস্থিরতায় ভেঙে পড়ার চেয়ে আত্মবিশ্বাসই সঞ্চারিত করতে চাওয়ার প্রচেষ্টায় যেন বেশি ছিল।
অনেক খেলোয়াড়ের যোগ্যতা ও মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এই হারের পর রিয়াল শিবির অস্থির হচ্ছে না। যে কারণে শীতকালীন দলবদলে খেলোয়াড় না কেনার যে সিদ্ধান্ত, সেটিতেই স্থির থাকছে তারা। ১২ মাস আগেও ঠিক এই কাজ করেছিল দলটি।
রিয়াল কর্তৃপক্ষ এই মুহূর্তে পরিবর্তনের কোনো জায়গা দেখছে না। তারা ধরে নিচ্ছে, শারীরিকভাবে সব খেলোয়াড় সেরা অবস্থায় না থাকা এবং চোট সমস্যার প্রভাবই সেদিন মাঠের খেলায় দেখা গেছে। এটা যে শারীরিক ক্লান্তি এবং কিছু সময়ের জন্য খেলোয়াড়দের সেরা অবস্থায় না থাকার ফলে হয়েছে, সেটি নাকি দলের শীর্ষস্থানীয় কর্তারাও মেনে নিয়েছেন। বিশেষ করে আগের মৌসুমের চিত্রটিও কাছাকাছি হওয়াতে খুব বেশি বিচলিত হচ্ছেন না রিয়াল সভাপতিও।
বার্সার কাছে হারের পর রিয়াল কোচ আনচেলত্তির কণ্ঠেও ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়, ‘রিয়াল সব সময় ফিরে আসে।’ দলের কোচ ও কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব এখন খেলোয়াড়দের। গত মৌসুমে তাঁরা সেটি করে দেখিয়েছেন। এবার পারবে কি না সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়।