এল ক্লাসিকোতে রিয়ালকে হারিয়ে ১২ পয়েন্ট এগিয়ে গেল বার্সেলোনা
শিরোপার লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে এ ম্যাচে জয় ছাড়া খুব বেশি বিকল্প ছিল না রিয়াল মাদ্রিদের সামনে। আগে গোল করে এগিয়েও গিয়েছিল কার্লো আনচেলত্তির দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারল না তারা। ঘুরে দাঁড়িয়ে বার্সেলোনা প্রথমে সমতা ফেরাল, পরে যোগ হওয়া সময়ে আরও একটা গোল করে পেয়ে গেল ২-১ ব্যবধানের মহাগুরুত্বপূর্ণ এক জয়।
বার্সার এ জয়ে লা লিগার শিরোপার লড়াইও কার্যত শেষই বলে দেওয়া যায়। আপাতত ২৬ ম্যাচ শেষে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ দুই নম্বরে। হ্যাঁ, কাগজে কলমে এখনো রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষে বার্সেলোনাকে ধরা সম্ভব। কিন্তু এই ১২ পয়েন্টের ব্যবধান ঘুচিয়ে শেষ পর্যন্ত যদি রিয়াল মাদ্রিদ এই মৌসুমে লা লিগার শিরোপা জিতে যায়, সেটা রূপকথার গল্পের মতোই হবে।
শুরুটা বার্সেলোনারই ভালো হয়েছিল। প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে ব্যস্ত করে ফেলেন বার্সেলোনা খেলোয়াড়েরা। কোর্তোয়া অবশ্য ভালোই সামলে গেছেন। কিন্তু খেলার এই ধারার বিপরীতে গিয়ে প্রথম গোলটা পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনার বক্সের ভেতর ঢুকে বাঁ পাশ থেকে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা বল বাড়ান ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দিকে। ভিনি বল নিয়ে কিছুটা এগিয়ে শট নেন। সেই শট বার্সার রাইট ব্যাক রোনালদ আরাউহোর গায়ে গেলে চলে যায় জালে। বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনের খুব বেশি কিছু করার ছিল না। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল।
পিছিয়ে পড়ে বার্সেলোনা মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে ম্যাচে ফেরার। কিন্তু ৩২ মিনিটে আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টিনসেন ও ৩৪ মিনিটে রাফিনিয়ার দুটি ভালো চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন কোর্তোয়া। তবে বার্সেলোনার কোচ জাভি হার্নান্দেজকে হতাশা নিয়ে বিরতিতে যেতে হয়নি। এর আগেই ৪৫তম মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদের ডি-বক্সে জটলার মধ্যে বার্সার একাধিক শট ফিরে আসার পর সার্জি রবার্তোর পায়ে যায় বল। এবার আর তাঁর শট ঠেকাতে পারেননি কোর্তোয়া। ১-১ সমতা ফেরে ম্যাচে।
বিরতির পরও খেলায় আধিপত্য ধরে রাখে বার্সা। তবে লেভানডফস্কি আর রাফিনিয়ারা সুযোগ নষ্ট করায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি বার্সার। সুযোগ অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদও পেয়েছে। তবে ৭৯ মিনিটে করিম বেনজেমার শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন টের স্টেগেন। এর দুই মিনিট পরে তো মার্কো আসেনসিও বার্সার জালে বল পাঠিয়ে উদযাপনও করে ফেলেন সতীর্থদের নিয়ে। তবে ভিএআর অফসাইডের কারণে বাতিল করে দেয় সেই গোল।
মাদ্রিদের পোড়া কপাল! গোল তো বাতিল হলোই, উল্টো যোগ হওয়া সময়ে গোল খেয়ে গেল একটা। ৭৭ মিনিটে সার্জি রবার্তোর বদলি নেমেছিলেন ফ্রাঙ্ক কেসি। ম্যাচের একেবারে শেষ মূহুর্তে তিনিই হয়ে গেলেন নায়ক। রবার্ট লেভানডফস্কির দারুণ এক ব্যাকহিল থেকে বল পেয়ে অ্যালেক্স বালদে পাস বাড়ান কেসির দিকে। বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি কেসি। তারপর বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের উদযাপন দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, ওই গোলটা যে লা লিগার ট্রফিটা প্রায় তাদের হাতে এনে দিয়েছে, সেটা তারাও জানেন।