স্বপ্নের মতো অভিষেকের পরও কেন সন্তুষ্ট নন বেলিংহাম
রিয়াল মাদ্রিদে স্বপ্নের মতো অভিষেক হয়েছে জুড বেলিংহামের। বিলবাওয়ের বিপক্ষে কাল রাতে লা লিগায় ২-০ ব্যবধানের জয়ে ৩৬ মিনিটে রিয়ালের জার্সিতে নিজের প্রথম গোলের দেখা পান এই ইংলিশ তারকা। শুধু গোলই নয়, ম্যাচজুড়ে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছেন বেলিংহাম। ড্রিবলিং, বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং পাসিংয়েও আলো ছড়িয়েছেন ২০ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
তবে অভিষেকে আলো ছড়িয়েও ঠিক খুশি নন বেলিংহাম। এমনকি গোলটাও তাঁর মন ভরাতে পারছে না। তবে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে বেলিংহামের অতৃপ্তি থাকলেও রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি কিন্তু তাঁকে নিয়ে দারুণ খুশি। তাঁর নাকি মনেই হচ্ছে না, বেলিংহাম দলে নতুন এসেছেন। তাঁর মনে হচ্ছে, অনেক দিন ধরেই এই তরুণ দলের সঙ্গে আছেন।
অভিষেক ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিট খেলে বল স্পর্শ করেছেন ৭৫ বার। মানে, গড়ে প্রতি ১ মিনিট ১২ সেকেন্ডে তিনি বল স্পর্শ করেছেন। অ্যাটাকিং থার্ডে বল পাঠিয়েছেন ৬ বার, প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল পুনরুদ্ধার করেছেন ৯ বার, সফল ড্রিবল করেছেন ৩ বার, ট্যাকল করেছেন ৬ বার, ফ্রি-কিক আদায় করেছেন ৬ বার আর দ্বৈরথ জিতেছেন ১৩ বার। আর গোলের কথা তো আগেই বলা হয়েছে।
৩৬ মিনিটে ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবার নেওয়া কর্নার কিক থেকে বল পান ডি বক্সে অরক্ষিত থাকা বেলিংহাম। তাঁর ডান পায়ের শটে বল মাঠে ড্রপ খেয়ে লাফিয়ে উঠে বাঁ পাশের কোণ দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে। গোল হলেও বলের সঙ্গে সংযোগটা ঠিকঠাক হয়নি। তাই পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন বেলিংহাম। ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘আমি এই গোল এবং জয়ে অনেক বেশি রোমাঞ্চিত নই। এই গোলটিতে বলে আমার সংযোগটা ভালো ছিল না। আমি কিছুটা ভাগ্যবান ছিলাম। যদিও আমি লক্ষ্যে বল রাখতে পেরেছি এবং সেটি জালে জড়িয়েছে।’
অভিষেকে বেলিংহাম যা করে দেখিয়েছেন, সেটাতে আনন্দিত রিয়াল কোচ আনচেলত্তি। দলের সঙ্গে বেলিংহামকে এত দ্রুত মানিয়ে নিতে দেখেও বেশ উচ্ছ্বসিত এই ইতালিয়ান কোচ, ‘বেলিংহাম অনেক উঁচু মানের খেলোয়াড়। সে ব্যক্তিত্ববান এবং খুব দ্রুত দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। মনে হচ্ছে, সে অনেক দিন ধরেই আমাদের সঙ্গে আছে। দল এভাবে খেলতে খুবই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আমরা এ জায়গায় অনেক কাজ করেছি। ভালভের্দে ও কামাভিঙ্গা অনেক ভালো কাজ করেছে। ফলে আমরা রক্ষণে কম ভুগেছি। আর সামনে থাকা তিনজনও খুব বিপজ্জনক।’
শুধু বেলিংহামের পারফরম্যান্স নিয়েই নয়, দলের খেলা নিয়েও বেশ সন্তুষ্ট আনচেলত্তি, ‘এটা খুবই ভালো পারফরম্যান্স। বিশেষ করে প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের নিয়ন্ত্রণ এবং ছন্দ কম ছিল। কিন্তু রক্ষণে আমরা ভালো করেছি। যদি আমরা রক্ষণে ভালো করি, তবে আমাদের পারফরম্যান্স আরও দৃঢ় হবে।’
এদিন টনি ক্রুস এবং লুকা মদরিচের মতো তারকাদের বেঞ্চে রেখেই শুরু করেছেন আনচেলত্তি। বেলিংহামের দারুণ পারফরম্যান্সের পর এ দুজন নিয়মিত একাদশে সুযোগ পাবেন কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমাদের স্কোয়াডে অসাধারণ সব মিডফিল্ডার আছেন। আমি বলব না যে তারা ব্যাকআপ। কারণ, তারা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলবে, যেমনটা তারা গত মৌসুমেও খেলেছে। আমি আজ এই লাইনআপটা বাছাই করেছি। কিন্তু এটা বদলাতেও পারে।’
এই ম্যাচে দলের পারফরম্যান্স এবং জয়ের কারণ তৃপ্তি থাকলেও কিছুটা অস্বস্তিও আছে আনচেলত্তির মনে। বিশেষ করে দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওয়ের চোট বেশ ভাবাচ্ছে এই কোচকে। তিনি বলেছেন, ‘এই চোট ভালো মনে হচ্ছে না। তবে আমরা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখব। আশা করছি মারাত্মক কিছু হবে না। আমরা উদ্বিগ্ন।’ শেষ পর্যন্ত মিলিতাওকে হারাতে হলে সেটি আনচেলত্তির জন্য বড় ধাক্কা হবে।