আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকার কাছে মেসি এবারের ‘ম্যারাডোনা’
নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকারে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে হারের পর যে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ-যাত্রাটাই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল, তারাই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পৌঁছে গেছে শেষ চারে। আর মাত্র দুটি ম্যাচে দুটি ম্যাচ জিতলেই যে ১৯৮৬ সালের পর বিশ্বকাপ-গৌরব নিজেদের করে নিতে পারবে আর্জেন্টিনা।
এই দুই ম্যাচই সবচেয়ে কঠিন বাধা আর্জেন্টিনার জন্য। কিন্তু আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য হোর্হে ভালদানো আর্জেন্টিনা ও মেসিকে নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। বিশেষ করে মেসির যে পারফরম্যান্স, সেটি ভালদানোর কাছে ভিন্নমাত্রারই।
ভালদানো মনে করেন, এবার মেসি দলের সঙ্গে আগের তুলনায় অনেক বেশি সম্পৃক্ত, ‘মেসি দারুণ খেলছে। মেসি এবার দলের সঙ্গে আগের তুলনায় অনেক বেশি সম্পৃক্ত। অনেক বেশি একাত্ম। সে তার নিজের খেলাটাই খেলছে। আমি তো মনে করি মেসি এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনা।’
১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ফেবারিটের তালিকায় সেভাবে ছিল না। কিন্তু এক ডিয়েগো ম্যারাডোনার কল্যাণেই আর্জেন্টিনা সেবার বিশ্বকাপ জিতেছিল। প্রতিটি ম্যাচে ম্যারাডোনাই ছিলেন দলের মূল পারফরমার। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ছিলেন অনন্য। ‘ঈশ্বরের হাত’-এর গোলটি তো ছিলই, ম্যারাডোনা করেছিলেন ‘শতাব্দীর সেরা গোল’। সেমিফাইনালে ম্যারাডোনার জোড়া গোলেই বেলজিয়ামকে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষেও প্রাণভোমরা ছিলেন ম্যারাডোনাই। নিজে গোল না করলেও হোর্হে বুরুচাগার জয়সূচক গোলটি ম্যারাডোনারই বানিয়ে দেওয়া। ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার একটি গোল ভালদানোর।
ভালদানো এবার মেসির মধ্যে তেমন কিছুই দেখছেন। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকার মেসির প্রতি মুগ্ধতা দুই দশকের পুরোনো, ‘আমি মেসিকে যেদিন প্রথম দেখেছি, সেদিন থেকেই তাঁর প্রতি আমার মুগ্ধতা। হ্যাঁ, ২০ বছর তো হয়েই গেল। প্রথম দিন থেকেই তাঁকে বিশেষ কিছু মনে হতো আমার। আমি মনে করি, মেসিকে যে পছন্দ করে না, সে আসলে ফুটবলই বোঝে না।’
এবারের বিশ্বকাপে ভালদানোর স্বস্তি আর্জেন্টিনা দলের মানসিকতাও। সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের পর পরের প্রতিটি ম্যাচে দারুণ খেলে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও সমতা ফিরে আসার পরও মাথা ঠান্ডা রেখে জেতা—এসব দেখে তাঁর মনে হচ্ছে এবারের আর্জেন্টিনা দলটি ভিন্ন ধরনের। এই দল চাপের মুখে ভেঙে পড়ে না, ‘আমি আসলে বিশ্বকাপ নিয়ে বেশ উৎসাহ বোধ করছি। এই দলটা মানসিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ফুটবল খেলায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে দলটি।’
মেসির পাশাপাশি হুলিয়ান আলভারেজ ও এনজো ফার্নান্দেজকে দারুণ মনে ধরেছে ভালদানোর, ‘আলভারেজ ও এনজো ফার্নান্দেজের প্রথম একাদশে অন্তর্ভুক্তি দলের সার্বিক মান বাড়িয়েছে।’