চোট কাটিয়ে মোহাম্মদ সালাহর আর নেশনস কাপে ফেরা হচ্ছে না। গতকাল রাতে আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে তাঁর দল মিসর। সান পেদ্রোয় অনুষ্ঠিত ডিআর কঙ্গোর বিপক্ষে এ ম্যাচে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১-১ গোলে সমতায় ছিল দুই দল। টাইব্রেকারে ৮-৭ গোলের জয়ে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন মিসরকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে গিনির মুখোমুখি হওয়া নিশ্চিত করেছে ডিআর কঙ্গো।
নির্ধারিত সময়ে ম্যাচের ৩৭ মিনিটে মেশচাক এলিয়ার গোলে এগিয়ে যায় কঙ্গো। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে মোস্তফা মোহামেদের গোলে সমতায় ফেরে মিসর। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে ১০ জনের দলে পরিণত হয় তাঁরা। ৯৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মিসরের লেফট ব্যাক মোহামেদ হামদি।
নেশনস কাপে নকআউটপর্বের খেলা টাইব্রেকারে গড়ানো যেন মিসরের অভ্যাস হয়ে গেছে! সর্বশেষ ২০২১ নেশনস কাপে নকআউটপর্বে মিসরের খেলা চার ম্যাচের তিনটিই টাইব্রেকারে গড়ায়। শেষ ষোলো ও সেমিফাইনাল টাইব্রেকারে জিতে ফাইনালেও স্নায়ু ক্ষয়ের এই পরীক্ষা দিতে হয়েছিল ‘ফারাও’দের।
সেবার আর শেষ রক্ষা হয়নি। এবার শেষ ষোলোয় টাইব্রেকারে ৭-৭ ব্যবধানে সমতায় আসার পর পেনাল্টি শট নিতে নামেন দুই দলের গোলকিপার। মিসরের গোলকিপার আবু গাবেল যিনি গাবাস্কি নামে পরিচিত, টাইব্রেকারে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে মারেন। কিন্তু ডিআর কঙ্গোর গোলকিপার লিওনেল মাপাসি পরের শটে লক্ষ্যভেদ করে দারুণ জয় এনে দেন কঙ্গোকে। আবিদজানে শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালে গিনির মুখোমুখি হবে কঙ্গো।
এবার নেশনস কাপে গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচের সবগুলো ড্র করে শেষ ষোলোয় উঠেছিল মিসর। গ্রুপপর্বে দ্বিতীয় ম্যাচে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন দলটির সেরা তারকা সালাহ। সেরে ওঠার জন্য ইংল্যান্ডে নিজ ক্লাব লিভারপুলে ফিরে যান তিনি। চোট কাটিয়ে টুর্নামেন্টটির শেষ দিকে মিসর দলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই মিসর বিদায় নেওয়ায় দেশের হয়ে আফ্রিকার শীর্ষ টুর্নামেন্ট জয়ের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল সালাহর জন্য। এর আগে ২০১৭ ও ২০২১ নেশনস কাপে ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেননি সালাহ। অন্যদিকে কঙ্গো ২০১৫ সংস্করণে সেমিফাইনালে ওঠার পর নেশনস কাপে এই প্রথম নকআউট পর্বে জয়ের দেখা পেল।
পিএসজির বয়সভিত্তিক দল থেকে উঠে আসা কঙ্গোর গোলকিপার মাপাসি ফরাসি ফুটবলে দ্বিতীয় স্তরের দল রোদেজে খেলেন। ম্যাচ শেষে ক্যানাল প্লাস আফ্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘গাবাস্কি যখন শট নিতে এল, আমরা একে-অপরের চোখে তাকাই এবং তাকে দেখে নার্ভাস লাগছিল।’ মাপাসি নিজের শট নেওয়ার আগে মুচকি হেসেছেন। হয়তো চাপ কাটিয়ে উঠতে মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছিলেন। জয়ের পর সেটাই বললেন, ‘বলটা জায়গামতো বসিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখেছি। অনুশীলনে শেষ পেনাল্টিটি নেওয়ার কথা ভেবেছি এবং সৌভাগ্যবশত লক্ষ্যভেদ করতে পেরেছি।’
আবিদজানে শেষ ষোলোয় অন্য ম্যাচে ইকুয়াটোরিয়াল গিনিকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে গিনি। যোগ করা সময়ে (৯৮ মিনিট) ম্যাচের শেষ শট থেকে হেডে গোল করে গিনিকে দারুণ জয় এনে দেন মোহাম্মেদ বায়ো।
এর আগে ম্যাচের ৫৫ মিনিটে ১০ জনে পরিণত হয়েছিল ইকুয়াটোরিয়াল গিনি। বায়োকো ফাউল করায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফেদেরিকো বিকোরো। পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগও নষ্ট করেছে ইকুয়াটোরিয়াল গিনি।