মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে দর্শক ছিল ৬০ হাজারের বেশি। তাঁদের তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেছেন লিওনেল মেসি। নিজে করেছেন জোড়া গোল, তার মধ্যে শেষটি চোখে লেগে থাকবে অনেক দিন। আর আর্জেন্টিনাও অপরাজিত থাকার ধারায় আছে। কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের জন্য এর চেয়ে বড় সুসংবাদ আর কী হতে পারে!
এই প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল হন্ডুরাস। হার্ড রক স্টেডিয়ামে ৬৪ হাজার ৪২০ দর্শক যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৮০তম মধ্য আমেরিকার এই দেশের খেলা দেখতে যাননি, তা বলাই বাহুল্য। সেই মেসিই মূল আকর্ষণ, সঙ্গে বাকিরা। হন্ডুরাসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলের জয়ে মেসির জোড়া গোল—এতটুকুতেই বোঝা যায়, তৃপ্তি মিটেছে দর্শকদের।
আর্জেন্টিনার আক্রমণে মেসি যেমন নেতৃত্ব দিয়েছেন, তেমনি ম্যাচে তারা এগিয়েও যায় পিএসজি তারকার একটি মুভ থেকে। ১৬ মিনিটে মেসির দুর্দান্ত পাসে বাঁ প্রান্তে আনমার্কড হয়ে পড়েন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পাপু গোমেজ। তাঁর ক্রস থেকে গোল করেন লওতারো মার্তিনেজ। হন্ডুরাস ধারে ও ভারে পিছিয়ে থাকলেও হাল ছাড়েনি। চড়াও হয়ে খেলার চেষ্টা করেছে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টিটা হজম করতে হয় এমন খেলার জন্যই। নিজেদের বক্সে আর্জেন্টাইন জিওভান্নি লো সেলসোর জার্সি টেনে ধরে পেনাল্টি হজম করেন হন্ডুরাসের ডিফেন্ডার মার্সেলো স্যান্টোস। স্পটকিক থেকে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন মেসি।
পিএসজি তারকা আজ বাংলাদেশ সময় ভোরে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে খেলেছেন দুর্দান্ত। পুরো সময় মাঠে ছিলেন, ৫৬ মিনিটে পেয়ে যেতে পারতেন নিজের দ্বিতীয় গোল। কিন্তু চোখজুড়ানো দলীয় মুভ থেকে ফিনিশ করতে পারেননি। তাঁর শট গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। লওতারো মার্তিনেজের জায়গায় বদলি হিসেবে নামা ফরোয়ার্ড ইউলিয়ান আলভারেজের একটি শটও ঠেকিয়ে দেন হুন্ডুরাসের গোলকিপার লুইস লোপেজ। তবে ৬৯ মিনিটে মেসির নেওয়া শটটি পৃথিবীর কোনো গোলকিপারেরই ঠেকানোর সাধ্য নেই।
দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হয়ে নামা এনজো ফার্নান্দেজ বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সের মুখে পাস বাড়ান মেসির প্রতি। আর্জেন্টাইন তারকা বক্সের বাইরে থেকে বলে এমনভাবে কিক নিলেন যে পুরোপুরি ‘চিপ’ বলা যায় না আবার চিপের মতোই—বাঁ পাকে চামচের মতো ব্যবহার করে বলটা এমনভাবে তুললেন যে হন্ডুরাস গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে জালে!
আর্জেন্টিনা এই নিয়ে ৩৪ ম্যাচ অপরাজিত রইল। ২০১৯ কোপা আমেরিকা সেমিফাইনালে সর্বশেষ হেরেছিল লাতিন আমেরিকার দলটি। জাতীয় দলের ইতিহাসে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চসংখ্যক ম্যাচ অপরাজিত থাকার নজির। ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থেকে শীর্ষে ইতালি।
আর্জেন্টিনার হয়ে এ নিয়ে ১৬৩ ম্যাচে ৮৮ গোল করলেন মেসি। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ইতিহাসে মেসিই সর্বোচ্চ গোলদাতা। জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় চারে মেসি। তাঁর সামনে ৮৯ গোল করা মালয়েশিয়ার মোখতার দাহিরি, ১০৯ গোল করা ইরানের আলী দাইয়ি এবং ১১৭ গোল নিয়ে সবার ওপরে পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
নিউইয়র্কে আগামী মঙ্গলবার অন্য প্রীতি ম্যাচে জ্যামাইকার মুখোমুখি হবে লিওনেল স্কালোনির দল। কাতার বিশ্বকাপে ‘সি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ সৌদি আরব, মেক্সিকো ও পোল্যান্ড।