ম্যানচেস্টার সিটি ১ : ০ ব্রেন্টফোর্ড
ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটি সর্বশেষ কবে–কার বিপক্ষে হেরেছিল, জানেন? আজকের প্রতিপক্ষ ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বিরতিতে যাওয়ার আগমুহূর্তে। গত মৌসুমে সিটিকে নিজেদের মাঠেও হারিয়ে দিয়েছিল ব্রেন্টফোর্ড।
হুলিয়ান আলভারেজ, বের্নার্দো সিলভা, ফিল ফোডেন, অস্কার ববরা আজ যখন একের পর এক সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করছিলেন; বিপরীতে ব্রেন্টফোর্ড দারুণ সব সুযোগ সৃষ্ট করছিল, তখন ইতিহাদে সিটির সর্বশেষ হারের স্মৃতি ফিরে আনছিলেন ধারাভাষ্যকার। তবে শেষ পর্যন্ত ইতিহাদে ২০২২ ফিরে আসেনি। ফিরতে দেননি আর্লিং হলান্ড।
রদ্রির সাজিয়ে দেওয়া আক্রমণে আলভারেজের পাস থেকে বল পেয়ে মাঝমাঠ থেকে চিতার বেগে ছোটেন হলান্ড। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে কাঁপান ব্রেন্টফোর্ডের জাল।
গোলের উদ্দেশ্যে ২৫ আর লক্ষ্যে ১১ শট নিয়ে হলান্ডের এই একটি শটেই সফল হলো সিটি। ১–০ গোলের জয়ে আর্সেনালকে টপকে উঠে এল পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে, সেই সঙ্গে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের ঘাড়েও নিশ্বাস ফেলতে শুরু করল।
এ জয়ের পর ২৫ ম্যাচে সিটির পয়েন্ট ৫৬। তিনে নেমে যাওয়া আর্সেনালের পয়েন্ট ৫৫ আর চূড়ায় থাকা লিভারপুলের ৫৭। অর্থাৎ, তালিকার শীর্ষ তিন দলের মধ্যে এখন শুধু ১ পয়েন্ট করে ব্যবধান। দারুণ লড়েও হার মানা ব্রেন্টফোর্ড ২৫ পয়েন্ট নিয়ে রয়ে গেল ১৪ নম্বর অবস্থানেই।
হলান্ডের জয়সূচক গোলটা এবারের লিগে তাঁর ১৭তম। আজকের গোলে হ্যারি কেইনের রেকর্ডে ভাগ বসালেন নরওয়ের তরুণ এই স্ট্রাইকার। এই ম্যাচের আগে এক ব্রেন্টফোর্ড ছাড়া লিগের বাকি সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গোল ছিল তাঁর। আজ সেই আক্ষেপ ঘোচালেন। লিগে এখন পর্যন্ত খেলা ২১টি দলের বিপক্ষেই গোল পেলেন। টটেনহাম ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখে যাওয়া কেইন প্রিমিয়ার লিগে ৩২টি ক্লাবের বিপক্ষে খেলে সবকটিতেই স্কোরশিটে নাম তুলেছিলেন।
আজ নিয়ে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৩৫ ম্যাচ এবং লিগে টানা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত থাকল সিটি। গোল করল সর্বশেষ ৫৪ ম্যাচে। এবারের লিগ মৌসুমে হলান্ড সিটির হয়ে প্রথম গোল পেলেন সাতবার, যা যেকোনো দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে হলান্ড দলের হয়ে পাঁচটি জয়সূচক গোল করলেন। এ ক্ষেত্রে তিনি যৌথভাবে শীর্ষে। ওলি ওয়াটকিন্সও অ্যাস্টন ভিলার হয়ে পাঁচটি জয়সূচক গোল করেছেন।
ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে সিটির আজকের ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর। সেটি প্রায় ২ মাস পিছিয়ে হওয়ার কারণ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নিতে পেপ গার্দিওলার দলের সৌদি আরবে যাওয়া।
ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের জন্য হন্যে হয়ে ওঠা সিটি প্রথমার্ধে গোলের উদ্দেশ্যে শট নিয়েছিল ১৭টি। তবে প্রথমার্ধে সেরা সুযোগটা পেয়েছিল ব্রেন্টফোর্ড। কিন্তু ১৫ মিনিটে ফ্রাঙ্ক ওনইয়েকা এদেরসনকে একা পেয়েও শট নেন তাঁর শরীর বরাবর। পরের মিনিটেই ফ্রি কিক থেকে ইভান টনির শট বারে বাতাস লাগিয়ে চলে যায়।
বিরতির আগে একাধিক সুযোগ নষ্ট করেন আলভারেজ। এর মধ্যে ২৫ মিনিটে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও উড়িয়ে মারেন।
৩৭ মিনিটে অস্কার ববের শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন সিটির একাডেমি থেকেই উঠে আসা ব্রেন্টফোর্ড ডিফেন্ডার বেন মি।
বাঁ পাশ থেকে বব শট নিয়েছিলেন জালের মাঝ বরাবর। বেন মি ডান পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হলান্ডকে রেখেছিলেন কড়া পাহারায়। ববকে শট নিতে দেখে মি চোখের পলকে দৌড়ে এসে গোললাইন থেকে বল বিপদমুক্ত করেন। ফলে গোল বন্ধ্যাত্বেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
তবে বিরতির পর সিটিকে আর দমিয়ে রাখা যায়নি। ৭১ মিনিটে গোল করে আরেকবার দলের ত্রাতা বনে যান হলান্ড।