ধর্ষণের পাশাপাশি এবার অপহরণের অভিযোগ বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি ডিফেন্ডারের বিরুদ্ধে
আটবার ধর্ষণ, একবার যৌন নির্যাতন এবং আরও একবার ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে চেশায়ারের চেস্টার ক্রাউন আদালতে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন মেন্দির বিচার শুরু হয়েছে। যে সাত নারী মেন্দির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের মধ্যে প্রথমজন সোমবার প্রথম দিন আদালতের শুনানিতে জানিয়েছেন, ধর্ষণচেষ্টার আগে ম্যানচেস্টার সিটির এই খেলোয়াড় তাঁকে অপহরণের হুমকি দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, পুলিশকে সেই নারী বলেছেন, মেন্দির বাসায় গোসল করার সময় তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। তাঁর তোয়ালে কেড়ে নিয়ে মেন্দি তাঁকে নগ্ন অবস্থায় দেখতে চেয়েছিলেন। এরপর ধর্ষণের চেষ্টা চালান।
সে সময় সেই নারীর বয়স ছিল ২৯ বছর। ২০১৭ সালের অক্টোবরে বার্সেলোনার নৈশক্লাবে মেন্দি এবং তাঁর সঙ্গী ফরাসি ফুটবলার ডিয়াকো ফোফানার সঙ্গে পরিচয় ঘটে তাঁর। চেস্টার ক্রাউন আদালতে এই তথ্য জানানো হয় জুরিদের। আইনজীবী টিমোথি ক্রে আদালতকে জানান, এই নারী ‘ফুটবল-সংশ্লিষ্ট কেউ নয়’। পুলিশকে এই নারী বলেছেন, ফোফানা ও মেন্দির সঙ্গে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন সেই নৈশক্লাব-সংশ্লিষ্ট এক লোক। তিনি সবাইকে ভিআইপি সুবিধা দিতে চেয়েছিলেন। জুরিদের সামনে ভিডিও সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানান সেই নারী। মেন্দি ও ফোফানা ফ্রান্সের অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সতীর্থ ছিলেন।
পরের বছর অক্টোবরে মেন্দির চেশায়ারের বাসায় ফোফানার সঙ্গে দেখা করতে রাজি হন সেই নারী। ফুটবলারদের সঙ্গে সেই রাতে ম্যানচেস্টারে নৈশভোজনে বের হন তিনি। আরও দুজন নারী ছিলেন তাঁদের সঙ্গে। এর মধ্যে একজন ‘ভীষণ সুন্দরী’—যিনি মেন্দির কোলেও বসেছিলেন—জুরিদের জানান সেই নারী।
ধর্ষণের অভিযোগে ম্যানচেস্টার সিটি লেফটব্যাক বেঞ্জামিন মেন্দিকে গত বছর আগস্টে রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ। সে বছর নভেম্বরে আরও দুটি ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সোমবার চেশায়ারের আদালতে মেন্দির বিচার শুরু হয়। আর এ বছরের জানুয়ারিতে পুলিশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই নারী জানান, সেদিন রাতে কোনো একটি নৈশক্লাবে থাকতে মেন্দি তাঁর সঙ্গে অপ্রত্যাশিত আচরণ শুরু করেন। এই ঘটনা এক বন্ধুকে মুঠোফোনে খুদে বার্তায় জানান সেই নারী। কিন্তু পুলিশের কাছে গিয়েছেন গত বছরের আগস্টে, যখন অন্য কয়েক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন মেন্দি। পুলিশ তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করে এবং চেস্টার ক্রাউন আদালতে আট পুরুষ ও ছয় নারীর সমন্বয়ে গঠিত জুরিবোর্ড এই জবানবন্দি শুনেছে।
মেন্দি এই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ ছাড়া সাত নারীকে ১০ বার ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন মেন্দি। এ কাজে তাঁর ‘দোসর’ লুইস সাহারও বিচার হচ্ছে। মোট ৮ নারীকে ১২ বার ধর্ষণের অভিযোগ আদালতে অস্বীকার করেছেন সাহা। দোষী সাব্যস্ত হলে ৫ থেকে ২০ বছর কারাবাসের শাস্তি হতে পারে মেন্দির। কিংবা যাবজ্জীবন সাজাও হতে পারে।