আজ শুরু এশিয়ান কাপ, এর আগে যা জানার আছে
২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লিওনেল মেসি যে মাঠে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে তুলেছিলেন, এক বছরের কিছু বেশি সময় পর আজ সেই লুসাইল স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা এএফসি এশিয়ান কাপ। এক মাসের এই আয়োজনে কাতারের নয়টি ভেন্যুতে লড়বে ২৪টি দল। উদ্বোধনী ম্যাচের মতো ফাইনালও হবে লুসাইল স্টেডিয়ামে। এশিয়ান কাপ নিয়ে আরও যা কিছু জানার আছে—
২০২৩ সালের এশিয়ান কাপ ২০২৪ সালে
২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হলেও টুর্নামেন্টটি পরিচিত এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৩ নামে। এর মূল আয়োজক ছিল চীন, টুর্নামেন্ট মাঠ গড়ানোর কথা গত বছরের জুলাইয়ে। তবে করোনাভাইরাসের বিষয়ে ‘জিরো-কোভিড নীতি’ থাকায় চীন আয়োজক স্বত্ব ছেড়ে দেয়।
আয়োজক কাতার
চীন সরে গেলে ২০২২ সালের অক্টোবরে এএফসি কাতারকে আয়োজক ঘোষণা করে। ওই সময় বিশ্বকাপ আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ছিল কাতার। এবারের আগে কাতারে এশিয়ান কাপ হয়েছে দুবার, ১৯৮৮ ও ২০১১ সালে।
যে দিনগুলোয় চোখ থাকবে
১২ জানুয়ারি, মানে আজ লুসাইল স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে কাতার-লেবানন। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। দুই দিন বিরতি দিয়ে শেষ ষোলোর খেলা শুরু হবে ২৮ জানুয়ারি, শেষ হবে ৩১ জানুয়ারি। চারটি কোয়ার্টার ফাইনাল হবে ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি। আর দুটি সেমিফাইনাল ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি। লুসাইলে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১০ ফেব্রুয়ারি।
যারা অংশ নিচ্ছে
অংশ নিচ্ছে ২৪টি দল। এর মধ্যে প্রাথমিক আয়োজক চীন ছাড়া বাকি ২৩ দলই বাছাই পর্ব উতরে এসেছে। ২০১৯ আসরে খেলা দলগুলোর মধ্যে চারটি দল এবার চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করতে পারেনি। পাঁচ দশক পর ফিরেছে হংকং, আর প্রথমবারের মতো খেলবে তাজিকিস্তান। অংশগ্রহণকারী ২৪ দলকে চারটি করে ৬ গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে।
গ্রুপ এ : কাতার, চীন, তাজিকিস্তান, লেবানন
গ্রুপ বি : অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান, সিরিয়া, ভারত
গ্রুপ সি : ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিলিস্তিন, হংকং
গ্রুপ ডি : জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, ভিয়েতনাম
গ্রুপ ই : দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, জর্ডান, বাহরাইন
গ্রুপ এফ : সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, কিরগিজস্তান, ওমান
গ্রুপ পর্ব যেভাবে কাজ করবে
প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ শেষ ষোলোয় উঠবে। সঙ্গে ছয় গ্রুপের তৃতীয় হওয়া দলগুলোর মধ্যে সেরা চারটিও যোগ দেবে। প্রতিটি গ্রুপের চার নম্বর দল ও সব গ্রুপের তৃতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে নিচে থাকা দুটি দল প্রথম পর্ব থেকে বাদ পড়ে যাবে। শেষ ষোলো থেকে টুর্নামেন্টের বাকি পথ এগোবে নকআউট পদ্ধতিতে।
ভেন্যু
এশিয়ান কাপের ম্যাচগুলো হবে নয়টি ভেন্যুতে, যার মধ্যে সাতটিতে ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচ হয়েছিল। বিশ্বকাপ ভেন্যুর মধ্যে আছে লুসাইল স্টেডিয়ামে, আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়াম, আল বাইত স্টেডিয়াম, আল জানুব স্টেডিয়াম, এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম, খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম ও আল থুমামা স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ ভেন্যুর বাইরে আছে ১০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার আবদুল্লাহ বিন খলিফা স্টেডিয়াম ও ১৫ হাজার ধারণক্ষমতার জসিম বিন হামাদ স্টেডিয়াম। এ দুই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ৬টি করে ও শেষ ষোলোর ১টি করে ম্যাচ রাখা হয়েছে।
আগের চ্যাম্পিয়ন কারা
চার বছর পরপর হওয়া এশিয়ান কাপের এটি ১৮তম আসর। ২০১৯ সালে হওয়া ১৭তম আসরের চ্যাম্পিয়ন ছিল কাতার। তবে সবচেয়ে সফল দল জাপান। সাবেক চ্যাম্পিয়নরা হচ্ছে: জাপান (১৯৯২, ২০০০, ২০০৪, ২০১১), সৌদি আরব (১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৮৬), ইরান (১৯৬৮, ১৯৭২, ১৯৭৬), দক্ষিণ কোরিয়া (১৯৫৬, ১৯৬০), কুয়েত (১৯৮০), অস্ট্রেলিয়া (২০১৫), ইসরাইল (১৯৬৪), ইরাক (২০০৭) ও কাতার (২০১৯)।
ফেবারিট কারা
ফিফা র্যাঙ্কিং অনুসারে এশিয়ান কাপের সেরা দল জাপান (১৭)। এর পরেই আছে ইরান (২১)। এবারের এশিয়ান কাপে শিরোপার দাবিদার হিসেবে আছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব আর কাতারও।
এশিয়ান কাপের সবচেয়ে বড় তারকা সন হিউন-মিন। প্রিমিয়ার লিগের দল টটেনহামের এই ফরোয়ার্ড নামবেন দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে। দক্ষিণ কোরিয়া দলে আরও আছেন বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড কিম মিন-জা, পিএসজিতে খেলা লি কাং-ইন, ব্রেন্টফোর্ডের কিম জি-সো এবং উলভসের হোয়াং হি-চান। জাপানের হয়ে খেলবেন লিভারপুলের ওয়াতারো এন্দো, আর্সেনালের তাকেহিরো তুমিয়াসো, ব্রেন্টফোর্ডের কাউরো মিতোমা এবং রিয়াল সোসিয়েদাদের তাকেফুসো কুবো। ধারে রোমায় খেলা সরদার আজমুন আছেন ইরান স্কোয়াডে।
সর্বশেষ ইউরোর ট্রফি হাতে তোলা ইতালিয়ান কোচ রবার্তো মানচিনি আছেন সৌদি আরব দলে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোচের দায়িত্বে আছেন বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার ও ২০০৬ আসরে জার্মানিকে সেমিফাইনালে তোলা কোচ ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান। চিলিকে ২০১৬ কোপা আমেরিকা জেতানো হুয়ান পিজ্জি আছেন বাহরাইনে।
প্রাইজ মানি
চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৫ কোটি টাকা), রানার্সআপ ৩০ লাখ। আর দুই সেমিফাইনালিস্ট পাবে ১০ লাখ মার্কিন ডলার করে। এ ছাড়া ২৪টি দল অংশগ্রহণ বাবদ পাবে ২ লাখ মার্কিন ডলার করে।
কীভাবে দেখা যাবে?
বাংলাদেশ থেকে এশিয়ান কাপের ম্যাচ দেখা যাবে টি- স্পোর্টসে।