বিশ্বকাপের ৮ ম্যাচের ভেন্যুর প্রকৌশলী ছিলেন বাংলাদেশের ওয়াশিকুর
কাতার বিশ্বকাপের অবকাঠামোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক দেশের মানুষের শ্রম। বাংলাদেশ এর অন্যতম। এই যেমন নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ী মহল্লার ওয়াশিকুর রহমানের কথাই ধরুন, কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের অন্যতম ভেন্যু আল রাইয়ান এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। এই স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন তিনি। শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালের একটি করে ম্যাচসহ এবারের বিশ্বকাপের আটটি ম্যাচ হবে এখানে।
ওয়াশিকুর রহমান যে বিদ্যালয়ে পড়েছেন, সেখানকারই ছাত্র ছিলেন আবদুল হাফিজ। ওয়াশিকুরের এমন অর্জনে খুশি প্রভাষক হিসেবে কর্মরত হাফিজ, ‘সৈয়দপুরের ছেলে বিশ্বকাপের ভেন্যু নির্মাতা, এটা সত্যিই গর্বের।’
২০১০ সাল থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় আছেন ওয়াশিকুর। তিনি কাতার স্টেডিয়ামের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি নিয়ে গেছেন সেখানে। মেধাবী ওয়াশিকুর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ল্যাবরেটরি শপের অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ শেখ নাজমুল হকের বড় ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে ওয়াশিকুর সবার বড়। তাঁর মা একজন গৃহিণী।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ওয়াশিকুর ১৯৯২ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯৪ সালে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরকৌশলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। ২০২০ সালে কাতার বিশ্বকাপের ভেন্যু নির্মাণকাজে যোগ দেন তিনি।
মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে ওয়াশিকুর বলেন, ‘বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণকাজে জড়িয়ে পড়াটা স্বপ্নের মতো। বিশাল একটা বিশ্ব ইভেন্টে কাজ করতে পারাটাও গর্বের ব্যাপার। কত বড় বড় তারকা খেলবেন এই মাঠে, এটা ভেবেই ভালো লাগছে। এমন এক কাজে একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমার হাতের ছোঁয়া আছে।’
ওয়াশিকুরের ছোট ভাই সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের শিশুরোগ–বিশেষজ্ঞ ওয়াসিম বারী বলেন, ‘সবকিছুর ওপরে দেশ। আমার বড় ভাই মূলত দেশের সুনামের জন্যই কাজ করছেন। বিশ্বকাপের মতো এত বিশাল ইভেন্টে আমাদের পরিবারের অংশগ্রহণ আছে, এর জন্য আত্মীয়স্বজন–বন্ধুবান্ধবের অনেক শুভকামনা পাচ্ছি। সত্যি আমরা গর্বিত।’