একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন পল পগবা। এই চক্রের সঙ্গে তাঁর বড় ভাই ম্যাথিয়াস ও শৈশবের বন্ধুরা জড়িত। এ নিয়ে দুজন বিচারকের অধীনে মামলাও চলছে। প্যারিসে আইনজীবীদের অফিস তাঁর চাঁদাবাজির শিকার হওয়া নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
আদালতে দ্বিতীয় শুনানিতে ফরাসি মিডফিল্ডার দাবি করেন, একটি প্রয়োজনে ডাকিনীবিদ্যার দ্বারস্থ হয়ে টাকা–পয়সাও দিয়েছেন তিনি, কিন্তু সেটি কিলিয়ান এমবাপ্পের ক্ষতিসাধনের জন্য ছিল না। এর আগে পগবার ভাই এবং মামলার আসামি ম্যাথিয়াস পগবা দাবি করেন, কিলিয়ান এমবাপ্পেকে জাদু করতে ডাকিনীবিদ্যার চর্চা করে এমন একজনের কাছে গিয়েছিলেন জুভেন্টাস তারকা।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, পল পগবা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, ডাকিনীবিদ্যার চর্চা করে এমন একজনের কাছে তিনি গিয়েছিলেন, কিন্তু সেটি ছিল একটি মানবতাবাদী সংগঠনকে সাহায্য করার জন্য। ফ্রান্স জাতীয় দলের সতীর্থ এমবাপ্পেকে জাদু করে চোটে ফেলার কোনো উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না।
ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী এই মিডফিল্ডারের অভিযোগ, অপরাধী চক্রের চাপে পড়ে তাঁর ভাই এমন সব মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘ফ্রান্সটিভিইনফো’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে দুবার ফোন নম্বর পাল্টেও চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে রেহাই পাননি জুভেন্টাস মিডফিল্ডার।
পগবাকে নিয়ে ম্যাথিয়াস যে অভিযোগ তুলেছেন, তা এমবাপ্পের কানেও পৌঁছেছে। কাল চ্যাম্পিয়নস লিগের সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথাও বলেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। পগবা নাকি এরই মধ্যে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে সবকিছু বুঝিয়ে বলেছেন এবং এমবাপ্পে তাঁর জাতীয় দল সতীর্থের কথা বিশ্বাসও করেছেন।
এমবাপ্পের ভাষায়, ‘এটা (ম্যাথিয়াসের অভিযোগ) তাঁর (পল পগবা) সঙ্গে আমার সম্পর্ক পাল্টে দেবে না। এখন পর্যন্ত আমি আমার সতীর্থের কথাই বিশ্বাস করছি। সে আমাকে ফোন করেছিল। নিজের বক্তব্য বুঝিয়ে বলেছে। ভাইয়ের বিপক্ষেই ছিল তার কথাগুলো। তাই আমি আমার সতীর্থের কথাই বিশ্বাস করব। এই ভাবনার পেছনে ফ্রান্স জাতীয় দলের স্বার্থও আছে। সামনে বড় (বিশ্বকাপ) প্রতিযোগিতা আছে। দেখা যাক, সামনে কী ঘটে। তবে এ বিষয় থেকে দূরেই আছি আমি।’
গত সপ্তাহে এমবাপ্পের উদ্দেশে টুইট করে নিজের ভাইয়ের ডাকিনীবিদ্যার দ্বারস্থ হওয়ার কথা প্রকাশ করেন ম্যাথিয়াস। টুইটে তিনি লিখেছিলেন, ‘কিলিয়ান এমবাপ্পে, তুমি কি বুঝতে পারছ? তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি যা বলছি তোমার ভালোর জন্যই বলছি এবং সব কথাই সত্য, জাদুটোনার বিষয়টিও।’
পল পগবা এর আগে পুলিশকে জানিয়েছেন, গত মার্চে ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেশে যাওয়ার পর বন্ধুরা তাঁকে প্যারিসের একটি বাসায় নিয়ে যান। সেখানে হুডি পরিহিত সশস্ত্র আরও দুজন ছিলেন। বন্ধুরা পগবাকে বলেন, পেশাদার ফুটবলার হওয়ার পর তাঁদের তিনি আর্থিকভাবে সহায়তা করেন না। ১৩ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন সুরক্ষা দেওয়ার সুবিধা হিসেবে পগবাকে তখন ১৩ মিলিয়ন ইউরো দিতে বলা হয়। এরপরই তিনি ক্লাব কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।