কর ফাঁকির অভিযোগে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তির ৪ বছর ৯ মাস কারাদণ্ড চেয়েছেন স্পেনের সরকারি কৌঁসুলিরা। ৬৪ বছর বয়সী ইতালিয়ান কোচ স্পেনের রাজস্ব বিভাগকে ১ মিলিয়ন ইউরোর বেশি কর থেকে বঞ্চিত করেছেন উল্লেখ করে দুটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
আজ এক বিবৃতিতে স্পেনের কর কার্যালয় এ তথ্য জানায়।
আনচেলত্তির বিরুদ্ধে ওঠা কর ফাঁকির ঘটনাটি এক দশক আগের। এবারের আগে ২০১৩–১৫ মেয়াদেও রিয়ালের কোচ ছিলেন আনচেলত্তি। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তিনি ইমেজ–স্বত্ব বাবদ আয়ের তথ্য লুকিয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করে কর কার্যালয়, ‘যদিও তিনি নিজেকে স্পেনের একজন করদাতা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং আবাসস্থল হিসেবে মাদ্রিদের নাম উল্লেখ করেছিলেন, তবু কর রিটার্নে শুধু রিয়াল মাদ্রিদ থেকে প্রাপ্য ব্যক্তিগত সম্মানীটুকুই দেখিয়েছিলেন।’
মাদ্রিদের কর কার্যালয়ের অভিযোগ, ইমেজ–স্বত্ব বাবদ পাওয়া অতিরিক্ত আয়ের তথ্য লুকাতে শেল কোম্পানির ‘বিভ্রান্তিকর’ ব্যবস্থার আশ্রয় নিয়েছিলেন আনচেলত্তি। কর ও আর্থিক সক্ষমতা ফাঁকি দেওয়ার জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভিন্ন দেশে নামমাত্র কোম্পানি খুললে তা ‘শেল’ কোম্পানি নামে পরিচিত।
এর আগে গত জুলাইয়ে স্পেনের আদালত কর ফাঁকির মামলায় আনচেলত্তির বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
২০২১ সালে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক জোট ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস বা আইসিআইজে গোপনে অন্য দেশে সম্পদ বিনিয়োগকারীদের নথি ফাঁস করে, যা প্যান্ডোরা পেপারস নামে পরিচিতি পায়। ওই তালিকায় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি ১৩ ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের নামও বের হয়ে আসে। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন আনচেলত্তি।
ইতালির এই কোচ ২০১৫ সালের মে মাসে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে পরের বছর বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন। এরপর নাপোলি ও এভারটন ঘুরে ২০২১ সালের জুনে আবারও মাদ্রিদের ক্লাবটিতে ফেরেন। সর্বশেষ চুক্তি অনুসারে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত রিয়ালের ডাগআউটে থাকবেন এই ইতালিয়ান।
সাফল্যের দিক থেকে আনচেলত্তিকে সর্বকালের অন্যতম সেরা কোচ বলে বিবেচনা করা হয়। একমাত্র কোচ হিসেবে চারবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন (দুবার রিয়াল, দুবার এসি মিলানের হয়ে)। এ ছাড়া ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের সব কটিতে শিরোপা জেতা একমাত্র কোচও তিনি (লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদ, প্রিমিয়ার লিগে চেলসি, সিরি আ–তে এসি মিলান, বুন্দেসলিগায় বায়ার্ন মিউনিখ এবং লিগ আঁ–তে পিএসজির হয়ে)।