মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের ঠেকাতে চেষ্টা করেছেন আতলেতিকো মাদ্রিদের খেলোয়াড়েরা। মাঠের বাইরে থেকে রিয়াল মাদ্রিদ খেলোয়াড়দের উত্যক্ত করে যাচ্ছেন আতলেতিকোর সমর্থকেরা। সেটি সীমাও ছাড়িয়ে গেছে এক সময়। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে নিয়ে বর্ণবাদী গান বেঁধে ফেলাকে আর কী বলা যায়!
তাতেও রিয়াল মাদ্রিদের জয়রথ থামাতে পারল না আতলেতিকো মাদ্রিদ। আতলেতিকোর ঘরের মাঠ মেত্রপলিতানোতে মাদ্রিদ ডার্বিতে ২–১ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল। দুই লাতিন আমেরিকান রদ্রিগো ও ফেদে ভালভের্দের গোলে প্রথমার্ধেই ২–০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। শেষ দিকে আতলেতিকোর হয়ে ব্যবধান কমান মারিও হেরমাসো।
এই জয়ে লা লিগায় টানা ষষ্ঠ জয় পেল রিয়াল। ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা দলটি নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে এগিয়ে ২ পয়েন্টে। অন্যদিকে ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আতলেতিকো পড়ে আছে সাতে।
ম্যাচ শুরুর আগেই বিতর্ক। স্টেডিয়ামের বাইরে এক দল আতলেতিকো সমর্থক ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে বর্ণবাদী গান গাইলেন। রিয়ালের একটি গোল উদ্যাপনের সময় ভিনিসিয়ুসকে লক্ষ্য করে এটা–সেটা ছুঁড়েও মারা হলো। ম্যাচের শেষ দিকে গ্যালারিতে ভিনিসিয়ুসকে নিয়ে বর্ণবাদী স্লোগান দিলেন আতলেতিকো সমর্থকেরা। কিন্তু ম্যাচ শেষে মাথা উঁচু করেই মাঠ ছাড়লেন ভিনিসিয়ুস। তাঁর দল যে জিতেছে। আর যে জয়ে গোল না পেলেও বড় অবদান আছে নাচুনে উদ্যাপন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া এই ব্রাজিলিয়ান।
১৮ মিনিটে আরেক ব্রাজিলিয়ান রদ্রিগোর গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। রদ্রিগো সতীর্থ ভিনিসিয়ুসকে নিয়ে নেচেই উদ্যাপন করলেন গোল। আর তাতেই যেন আরও খেপে গেল আতলেতিকো সমর্থকেরা। নিজেদের রক্ষণের ভুল ভুলে গিয়ে দুজনের দিকে লাইটারসহ আরও কিছু ছুঁড়ে মারা হলো গ্যালারি থেকে।
চোটের কারণে করিম বেনজেমাকে ছাড়াই খেলতে নামা রিয়াল ব্যবধানটা দ্বিগুণ করে ৩৬ মিনিটে। গোলটি হতে পারত ভিনিসিয়ুসেরই। হয়নি দুর্ভাগ্যে। বাঁ উইং দিয়ে অনেকটা দৌড়ে আতলেতিকোর রক্ষণকে পেছনে ফেলে গোলে শট নিয়েছিলেন ভিনি। কিন্তু কাছের পোস্টে প্রতিহত হয়ে বলটি চলে যায় ডান প্রান্তে এগিয়ে আসা ফেদেরিকো ভালভের্দের কাছে। উরুগুইয়ান খেলোয়াড় ফাঁকা পোস্টে গোল করতে ভুল করেননি।
অথচ ম্যাচটি কী দারুণভাবেই না শুরু করেছিল আতলেতিকো! দিয়েগো সিমিওনের দল এগিয়ে যেতে পারত শুরুতেই। ফেলিপের হেড অল্পের জন্যই বার উঁচিয়ে যাওয়ায় যা হয়নি। ইয়ানিক কারাসকোর শট দানি কারভাহালের বাধায় জড়ায় পাশের জালে। জিওফ্রে কন্দোগবিয়াও অল্পের জন্য গোল পাননি। কিন্তু কাজের কাজটা করেছে রিয়ালই।
অরেলিয়েঁ চুয়ামেনির দারুণ এক ভাসিয়ে দেওয়া পাস আতলতিকোর রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় রদ্রিগোর কাছে। ইয়ান ওবলাককে পরাস্ত করতে কষ্ট করতে হয়নি রদ্রিগোর। এরপর রিয়ালের দ্বিতীয় গোলের আগে আঁতোয়ান গ্রিজমানের শট অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি রিয়ালের জাল।
২–০ গোলে এগিয়ে যাওয়া রিয়াল দ্বিতীয়ার্ধে চেষ্টা করেছে ব্যবধান ধরে রাখার। তবে ৮৩ মিনিটে গোল খেয়ে বসে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কর্নার থেকে আসা বল কোর্তোয়া ধরতে ব্যর্থ হলে গোল করে বসেন মারিও হেরমোসো।
তবে সমর্থকদের লজ্জাকর আচরণের দিনে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি আতলেতিকোর।