আর্সেনাল ০ : ২ লিভারপুল
এই তো বড় দিনের ছুটিতে যাওয়ার আগেই মুখোমুখি হয়েছিল আর্সেনাল–লিভারপুল। ম্যাচটা ১–১ সমতায় শেষ হয়। গত বছর মুখোমুখি হওয়া আরেক ম্যাচও ২–২ গোলে ড্র হয়। ওই দুটি ম্যাচই ছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে।
আজ এফএ কাপে দুই দলের আরেকটি লড়াইও নিষ্ফলা মহারণের দিকে এগোচ্ছিল। ৭৯ মিনিট পর্যন্তও যে কোনো দল গোলমুখ খুলতে পারেনি। অবশেষে ৮০ মিনিটে ‘ডেড লক’ ভাঙল। গোল করলেন আর্সেনালের ইয়াকুব কিভিওর। কিন্তু তরুণ এই পোলিশ ডিফেন্ডার নিজেদের জালেই বল জড়ালেন।
ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে পিছিয়ে পড়ার পর সমতা ফিরতে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে আর্সেনাল। শেষ দিকে রক্ষণভাগও ওপরে উঠে খেলতে থাকে। অরক্ষিত রক্ষণের সুযোগ নিয়ে যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ান লুইজ দিয়াজ। ২–০ গোলের জয়ে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে পৌঁছে গেল লিভারপুল। প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসের সফলতম দল (১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন) আর্সেনাল বিদায় নিল তৃতীয় রাউন্ড থেকেই। চতুর্থ রাউন্ডে লিভারপুলের প্রতিপক্ষ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচ হারল আর্সেনাল। মিকেল আরতেতার দল এর আগে লন্ডনেরই দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলহাম ও ওয়েস্ট হামের কাছে হেরে যায়। ২০২২ সালের এপ্রিলের পর প্রথমবার টানা তিন ম্যাচ হারল গানাররা। আর নিজেদের মাঠে ২০২২ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবার টানা দুই ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হলো।
অথচ ম্যাচজুড়ে আর্সেনালেরই দাপট ছিল বেশি। গোলের উদ্দেশে শট, লক্ষ্যে শট, বল দখল, সফল পাস প্রায় সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল গানাররা। তবে কাই হাভার্টজ–বুকায়ো সাকারা একের পর এক সুযোগ নষ্ট করেছেন। সেটারই মাশুল দিতে হয়েছে এএফএ কাপ থেকে ছিটকে গিয়ে।
লন্ডনে কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ ও ছুরি হামলা বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সাল থেকে এর বিরুদ্ধে নিজেদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরছে আর্সেনাল। প্রতিবাদমূলক সেই কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘নো মোর রেড’ (আর নয় লাল)। রক্ত লাল বলেই সেই রং বাদ দিয়ে শুদ্ধতা ও শান্তির প্রতীক সাদাকে বেছে নেওয়া। তাই নিজেদের প্রধান জার্সি লাল বাদ দিয়ে সাদা পরে খেলতে নেমেছিল আরতেতার দল। কিন্তু ম্যাচ শেষে আর্সেনালের হৃদয়েই যেন রক্তক্ষরণ হলো।
আফ্রিকা কাপ অব নেশনস সামনে রেখে জাতীয় দল মিসরের প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন লিভারপুলের প্রাণভোমরা মোহাম্মদ সালাহ। জাপানের হয়ে এএফসি এশিয়ান কাপ খেলতে লিভারপুল ছেড়েছেন ওয়াতারু এন্দোও। এ দুজনের বদলে আজ খেলেছেন কোডি গাকপো ও আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জেতা অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। তবে গাকপো–ম্যাক অ্যালিস্টারের কাছ থেকে সেরাটা না পাওয়ায় বিরতির পর তাঁদের তুলে নিয়েছেন লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ।
৫৯ মিনিটে গাকপো পরিবর্তে দিয়োগো জোতা আর ম্যাক অ্যালিস্টারের জায়গায় নামেন রায়ান গ্রাভেনবার্গ। দুই বদলি নামার পর লিভারপুল আরও গোছানো আক্রমণ করতে শুরু করে। দিয়াজ দলের দ্বিতীয় গোলটা পেয়েছেন জোতার বাড়ানো বল থেকেই। এর আগে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আরনল্ডের ফ্রি কিকে হেডে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো আর্সেনালের সর্বনাশ ডেকে আনেন কিভিওর।