টাইব্রেকারে দুই শটেই অনন্য কীর্তি আর্জেন্টাইন মন্তিয়েলের
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম থেকে সড়কপথে বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনার দূরত্ব প্রায় ৪ হাজার ৯০০ কিলোমিটার। কাল রাতে ইউরোপা লিগ ফাইনালে এ দুটি স্টেডিয়ামকে এক মোহনায় মিলিয়ে দেন সেভিয়ার আর্জেন্টাইন রাইটব্যাক গঞ্জালো মন্তিয়েল। সেই মোহনা স্মৃতির এবং আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা নিশ্চয়ই লুসাইলের মতো পুসকাস অ্যারেনার স্মৃতিও মনে রাখবেন!
কেন—সে প্রশ্নের উত্তর দিতে ঘটনাটা ভেঙে বলতে হবে। সে জন্য গোড়া থেকে শুরু করাই ভালো। গত ১৮ ডিসেম্বর কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে শেষ শটটা মনে আছে? তখন কিন্তু লিওনেল মেসি নন, মন্তিয়েল ছিলেন ফুটবল–বিশ্বের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
কারণ, ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ৩–৩ গোলে ড্র করেছিল ফ্রান্স–আর্জেন্টিনা। ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ানোর পর নিষ্পত্তিমূলক শটটি নেওয়ার ভার পড়েছিল মন্তিয়েলের ওপর। ফ্রান্স গোলকিপার উগো লরিসকে ফাঁকি দিয়ে মন্তিয়েল লক্ষ্যভেদ করার পর বিশ্বজয়ের আনন্দে ভেসে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা।
সেই মন্তিয়েলের ওপর আবারও টাইব্রেকারে দলকে জেতানোর ভার পড়েছিল কাল রাতে ইউরোপা লিগের ফাইনালে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ ১–১ গোলে অমীমাংসিত থাকায় টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। স্নায়ুচাপের এই পরীক্ষায় সেভিয়া ৩–১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে শট নিতে আসেন মন্তিয়েল। লক্ষ্যভেদ করলেই সেভিয়া চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু নাটকের বাকি ছিল তখনো।
মন্তিয়েলের শট রুখে দেন এএস রোমা গোলকিপার রুই প্যাট্রিসিও। কিন্তু পর্তুগিজ গোলকিপার টাইব্রেকারে নিজের জায়গায় দাঁড়ানোর নিয়ম লঙ্ঘন করায় রেফারি আবারও শট নিতে বলেন মন্তিয়েলকে। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার এ যাত্রায় আর ভুল করেননি। লক্ষ্যভেদ করে সেভিয়াকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে অনন্য এক রেকর্ডও গড়েছেন মন্তিয়েল।
ফুটবলের পরিসংখ্যানভিত্তিক টুইটার অ্যাকাউন্ট ‘স্কুয়াকা’ জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল এবং বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে নিষ্পত্তিমূলক শট নিয়ে দল জেতানো প্রথম ফুটবলার মন্তিয়েল। আর অনন্য এ কীর্তিটাই মন্তিয়েল গড়েছেন এক মৌসুমে।
এমন এক রাতে জাতীয় দলের সতীর্থ পাওলো দিবালাকে স্মরণ করেছেন মন্তিয়েল। ইউরোপা লিগ ফাইনালে রোমার হয়ে প্রথম গোলটি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের। দিবালা–মন্তিয়েল দুজনেই কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার দলে ছিলেন। ইউরোপায় দিবালার হারের কষ্টে সহমর্মী হয়ে মন্তিয়েল ইএসপিএনকে বলেছেন, ‘দুর্দান্ত খেলা দিবালাকে বলছি এটাই ফুটবল। তাকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে; কারণ মানুষ ও খেলোয়াড় হিসেবে সে অসাধারণ।’