ব্যালন ডি’অরের সেরা দশে যাঁরা
২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বরই লিওনেল মেসির ব্যালন ডি’অর জেতাটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। সেদিন বিশ্বকাপ জিতে এবং বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের হয়ে নিজের দাবিটা জানিয়ে রেখেছিলেন মেসি। তবে পরবর্তী সময়ে আর্লিং হলান্ড ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ট্রেবল জিতে এবং গোলের একাধিক রেকর্ড ভেঙে মেসিকে কিছুটা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখেন আর্লিং হলান্ড।
তবে সময় যতই গড়িয়েছে ব্যালন ডি’অরের সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে পোক্ত হয়েছে মেসির নাম। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার কয়েক দিন আগে ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলোও জানিয়ে দেয়, মেসিই হাতেই উঠছে এবারের ব্যালন ডি’অর। গতকাল তাদের সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। মেসির হাতেই অনুমেয়ভাবেই উঠেছে ব্যালন ডি’অরের ট্রফি। আর তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানো হলান্ড হয়েছেন দ্বিতীয়। হলান্ড ছাড়াও ব্যালন ডি’অরের সেরা দশে আছেন সিটির আরও পাঁচ খেলোয়াড়।
এ তালিকায় তৃতীয় বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করা কিলিয়ান এমবাপ্পে। কে জানে, লুসাইলের সেই ফাইনালে ফ্রান্স জিতলে গতকাল ব্যালন ডি’অরের পোডিয়ামে হয়তো এমবাপ্পেকেই দেখা যেত! সেদিন শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতার স্বাদ পাননি এমবাপ্পে, যা হয়তো প্রভাব ফেলেছে তাঁর ব্যালন ডি’অরের ভোটেও। গত মৌসুমে সিটির ট্রেবল জয়ের নায়ক যদি হন হলান্ড, তবে পার্শ্বনায়ক হিসেবে বলতে হবে কেভিন ডি ব্রুইনার কথা। সিটির মিডফিল্ডে ডি ব্রুইনার মতো খেলোয়াড় না থাকলে হলান্ড এতটা বিধ্বংসী হতেন কি না, এমন প্রশ্নও তুলতে দেখা যায় অনেককে।
এ তালিকার পাঁচ নম্বরে আছেন সিটির মিডফিল্ডের আরেক গুরুত্বপূর্ণ তারকা রদ্রি। স্প্যানিশ এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার সিটির হয়ে গত মৌসুমে রীতিমতো ‘নিউক্লিয়াস’–এর ভূমিকা পালন করেছেন। এমনকি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে করা দলের একমাত্র গোলটিও তাঁর। রদ্রির পরের স্থানটি ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের।
গত মৌসুমে রিয়াল বড় কোনো শিরোপা জিততে পারেনি। ব্রাজিলও বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা অতিক্রম করতে পারেনি। কিন্তু এরপরও ব্যক্তিগতভাবে আলো ছড়িয়েছেন ভিনিসিয়ুস। বিশেষ করে রিয়ালের হয়ে দারুণ কিছু পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন এই উইঙ্গার। রিয়ালের হয়ে ৫৫ ম্যাচে ২৩ গোলের সঙ্গে আছে ২১টি অ্যাসিস্টও।
ভিনির পরে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী দলের দ্বিতীয় সদস্য হিসেবে তালিকায় জায়গা পেয়েছেন হুলিয়ান আলভারেজ। লাউতারো মার্তিনেজ ছন্দহীনতা থাকায় বিশ্বকাপে আলভারেজই সেই ঘাটতি পূরণ করেছে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। এ ছাড়া সিটির হয়ে নিয়মিত সুযোগ না পেলেও যখনই মাঠে নেমেছেন নিজের ছাপ রেখেছেন।
গত মৌসুমে ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে বড় চমক ছিল নাপোলি। ৩৩ বছর পর লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে ইতালির ক্লাবটি। আর নাপোলির লিগ জেতানোর পেছনে বড় অবদান ছিল নাইজেরিয়ান তারকা ভিক্টর ওশিমেনের। গত মৌসুমে নাপোলির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৯ ম্যাচে ৩১ গোলের সঙ্গে আছে ৫টি অ্যাসিস্টও। ওশিমেনের পর ৯ নম্বরে আছেন ম্যান সিটির আরেক তারকা বের্নার্দো সিলভা।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪–০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার। আর সেরা দশের শেষজন হলেন ২০১৮ সালের ব্যালন ডি’র বিজয়ী লুকা মদরিচ। রিয়ালের বড় কোনো অর্জন না থাকলেও মিডফিল্ডে বরাবরের মতো ভরসা হয়ে ছিলেন এই ক্রোয়াট তারকা। এ ছাড়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মদরিচ।