৬ গোলের রোমাঞ্চ ছড়াল ইংল্যান্ড–জার্মানি
তিন ম্যাচ পর গোলে ফেরা হলেও জয়ে ফেরাটা হলো না ইংল্যান্ডের। জার্মানির বিপক্ষে প্রত্যাবর্তনের দারুণ এক গল্প লিখতে লিখতেও শেষ পর্যন্ত তা লেখা হলো না। অন্যদিকে, শুরুতে ২ গোলের লিড নেওয়া জার্মানিও পারল না জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে। জমে ওঠা ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ৩-৩ গোলের ড্রতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দুই দলকে।
উয়েফা নেশনস লিগের ম্যাচে ওয়েম্বলিতে ম্যাড়মেড়ে প্রথমার্ধের পর লড়াই জমে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৭ মিনিটের মধ্যে ২ গোল করে আগে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় জার্মানি। ইংল্যান্ড–সমর্থকেরাও হয়তো আরেকটি হারের অপেক্ষায় ছিলেন।
তবে ৪ মিনিটে ২ গোল করে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে ‘থ্রি লায়ন্স’রা। সমতা ফিরিয়েই থামেনি ইংলিশরা, হ্যারি কেইন পেনাল্টি গোলে লিডও এনে দিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু নিজেদের রক্ষণ–দুর্বলতায় সেই লিড শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি ইংল্যান্ড। ড্রতেই শেষ হয় খেলা।
টানা ৫ ম্যাচে জয়হীন থাকা ইংল্যান্ড এই ম্যাচের আগে বেশ চাপে ছিল। সেই চাপের প্রভাব প্রথমার্ধে নিজেদের খেলাতেও দেখা যায়। ইংল্যান্ডের মতো সময়টা ভালো যাচ্ছে না জার্মানিরও। ম্যাচের শুরুতে সুবিধা করতে পারেনি তারাও। প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি দুই দলের কেউই।
ম্যাচের আসল রোমাঞ্চ অবশ্য অপেক্ষা করছিল দ্বিতীয়ার্ধে, যা শুরু হয় হ্যারি ম্যাগুয়ার হাস্যকর এক ভুলে। প্রথমে বলের দখল হারান ম্যাগুয়ার, পরে পা বের করে দিয়ে ডি বক্সের ভেতর আগুয়ান জামাল মুসিয়ালাকে ফাউল দিয়ে বসেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ডিফেন্ডার। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি ইকাই গুন্দোগান।
এই গোলের রেশ কাটার আগেই ৬৭ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন কাই হাভার্টজ। জার্মানি ২ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল, আরেকটি একপেশে হারের অপেক্ষায় ইংলিশরা। অল্প সময়ের ব্যবধানে কয়েকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে ব্যবধানটা আরও বাড়িয়ে নিতে পারত জার্মানি।
তবে ২ গোলে পিছিয়ে পড়েও হাল ছেড়ে দেয়নি ইংল্যান্ড। ৭১ ও ৭৫ মিনিটে ২ গোল করে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে তারা। ডি বক্সের ভেতর অরক্ষিত লুক শ প্রথমে ইংলিশদের হয়ে ব্যবধান কমান। ৪ মিনিট পর বুকায়ো সাকার পাসে দারুণ এক গোলে দলকে সমতায় ফেরান বদলি হিসেবে নামা ম্যাসন মাউন্ট। ৮৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ইংলিশদের এগিয়েও দেন কেইন।
এগিয়ে গিয়ে পাঁচ ম্যাচ পর জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছিল ইংলিশরা। তবে নিজেদের ভুলেই ভাঙে সেই স্বপ্ন। ৮৭ মিনিটে নাব্রির শট গোলরক্ষক নিকো পোপের হাত ফসকে বেরিয়ে এলে ফিরতি শটে বল জালে জড়িয়ে জার্মানিকে সমতায় ফেরান হাভার্টজ। এই সমতাতেই মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে।
এর মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলল ইংল্যান্ড-জার্মানি। তবে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে নামার আগে এ প্রস্তুতি নিশ্চিতভাবেই দুশ্চিন্তায় রাখবে দুই দলকে। শেষ ছয় ম্যাচে জয়হীন থাকল ইংল্যান্ড।
জার্মানিও জয় পেল না নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে। হাঙ্গেরির কাছে হারের পর ইংল্যান্ডের সঙ্গেও ড্র করল তারা। এখন বিশ্বকাপে এই দুই দল ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।