তখন মনে হয়েছিল খালি হাতে ফেরা। তখন বলতে ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ। প্রথমটিতে ফাইনাল আর দ্বিতীয়টিতে সেমিফাইনালে থেমে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটির পথচলা। প্রিমিয়ার লিগে যত শিরোপাই থাক, চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি হাতে তুলতে না পারা ছিল পেপ গার্দিওলার দলের বড় আক্ষেপ।
তবে আক্ষেপে শেষ হওয়া ওই দুই মৌসুম সিটির জন্য নিরেট অপ্রাপ্তির ছিল না। ফাইনাল আর সেমিফাইনাল খেলার সুবাদে ইউরোপীয় ফুটবলে শক্তিশালী ক্লাব হিসেবে সিটির অবস্থান আরও সুসংহত হয়েছে। যা ২০২২-২৩ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের মাধ্যমে তাদের শীর্ষে উঠিয়ে দিয়েছে। উয়েফার হালনাগাদ ক্লাব র্যাঙ্কিং বলছে, এ মুহূর্তে ইউরোপের ১ নম্বর দল ম্যানচেস্টার সিটি। যা সিটির ইতিহাসে প্রথম তো বটেই, ১২ বছর পর কোনো ইংলিশ ক্লাবেরও প্রথম।
ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফা ক্লাবগুলোর কোইফিসিয়েন্ট র্যাঙ্কিং করে থাকে চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগে দলগুলোর পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয় সর্বশেষ ৫ মৌসুম, আর হালনাগাদ করা হয় প্রতিটি রাউন্ডের পর। যেহেতু মৌসুমের মাঝপথে একেকটি রাউন্ডের পর দলগুলোর অবস্থান ওঠানামা করার সম্ভাবনা থাকে, মৌসুম শেষের র্যাঙ্কিংকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। আর মৌসুম শেষের র্যাঙ্কিংয়ে সিটি শীর্ষে অবস্থান করছে এবারই প্রথম।
ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে সর্বশেষ দুই মৌসুমের মাঝে উয়েফা ক্লাব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ২০১১ সালে। সর্বশেষ পাঁচ মৌসুমে সিটির পয়েন্ট দাঁড়িয়ে মোট ১২০। এর মধ্যে ২২-২৩ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ৩৩ পয়েন্ট, ২১-২২ মৌসুমে সেমিফাইনাল খেলার পথে ২৭ আর ২০-২১ মৌসুমে রানার্সআপ হওয়ার পথে ৩৫ পয়েন্ট অর্জন করেছে দলটি।
প্রশ্ন উঠতে পারে, ২০২২-২৩ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও ২০২০-২১ মৌসুমের চেয়ে পয়েন্ট কম কেন? পয়েন্ট গণনা করা হয় কোন রাউন্ডের ম্যাচে কতটি জয় ও ড্র, পরবর্তী রাউন্ডে উত্তরণ বোনাস, পেনাল্টি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জয়সহ বেশ কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে। পেনাল্টি শুট আউট, হোম-অ্যাওয়ে, গোল ব্যবধানের জয় এ ক্ষেত্রে কম পয়েন্ট পেয়ে থাকে। যে কারণে দেখা গেছে সর্বশেষ ২০২২-২৩ মৌসুমে সেমিফাইনাল খেলে রিয়াল মাদ্রিদ যা পেয়েছে (২৯ পয়েন্ট), ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হওয়া ইন্টার মিলানও তা-ই পেয়েছে।
সার্বিক ক্লাব র্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে এই মৌসুমভিত্তিক পয়েন্টের। যে কারণে সর্বশেষ তিন মৌসুমে একবারও ফাইনাল খেলতে না পারা বায়ার্ন মিউনিখে শেষ পাঁচ মৌসুমের হিসাবে ক্লাব র্যাঙ্কিংয়ের ২ নম্বরে অবস্থান করছে। যেখানে বড় ভূমিকা ২০১৯-২০ মৌসুমে পাওয়া ৩৬ পয়েন্টের। বায়ার্নের পরের অবস্থানটি রিয়াল মাদ্রিদের, ১০২। ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলোর মধ্যে সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়ে বড় পতন ঘটেছে বার্সেলোনার। মাত্র ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে দলটির অবস্থান ১৪ নম্বরে, যার বড় কারণ গত পাঁচ বছরের মধ্যে দুইবার ইউরোপা লিগে নেমে যাওয়া।
উয়েফা ক্লাব কোইফিসিয়েন্ট র্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশ
যে উয়েফা র্যাঙ্কিং করা হয়, ক্লাবগুলোর ক্ষেত্রে এর মূল সুবিধা পরবর্তী মৌসুমের ড্রয়ের অবস্থানে। এমনকি ইউরোপীয় ফুটবল কর্তৃপক্ষ থেকে অর্থকড়ি প্রাপ্তিতেও থাকে এর প্রত্যক্ষ ভূমিকা।