মিলানের প্রেরণা যেসব ‘কামব্যাক’
ভেন্যু একটাই—সান সিরো। আর সেখান থেকেই বাদ পড়বে যেকোনো এক মিলান। প্রশ্ন হচ্ছে এসি মিলান না ইন্টার মিলান? কে বাদ পড়বে, আর ফাইনালেই বা উঠবে কে? সান সিরোয় প্রথম লেগে স্বাগতিক হয়ে ইন্টারের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে এসি মিলান। ফিরতি লেগ আজ রাতে সান সিরোয়—যেখানে স্বাগতিক হয়ে খেলবে ইন্টার।
প্রথম লেগে পিছিয়ে পড়ার পর মিলান কি আজ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? ৭বারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য প্রেরণা হিসেবে ইতিহাস হাজির করেছে উয়েফা ডট কম। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে এর আগে প্রথম লেগে পিছিয়ে পড়ে ফিরতি লেগে ‘অ্যাওয়ে দল’ হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানোর ঘটনা আছে পাঁচটি। এর মধ্যে ‘অ্যাওয়ে গোল’ নিয়মে জয়ের নজিরও আছে। ২০২১-২২ মৌসুম থেকে অ্যাওয়ে গোল নিয়ম বাতিল করা হয়েছে।
ফিরতি লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানো:
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ০-২ পিএসজি
পিএসজি ১-৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
২০১৮-১৯, শেষ ষোলো
ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেষ বাঁশি বাজার পর বিবিসি লিখেছিল, পরের রাউন্ডে যেতে অলৌকিক কিছু করতে হবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। প্রথম লেগে গোলশূন্য ব্যবধানে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে দুই দল। বিরতির পর প্রেসনেল কিমপেম্বে ও কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে জয় তুলে নিয়েছিল পিএসজি। ফিরতি লেগে পিএসজির মাঠে জোড়া গোল করেছিলেন ইউনাইটেডের রোমেলু লুকাকু। যোগ করা সময়ে ইউনাইটেডের হয়ে গোল করেন মার্কাস রাশফোর্ড। পিএসজির হয়ে গোল করেছিলেন বের্নাত। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ ব্যবধানে খেলা ড্র হলেও ‘অ্যাওয়ে গোল’ বেশি করায় পরের রাউন্ডে ওঠে ইউনাইটেড।
টটেনহাম ০-১ আয়াক্স
আয়াক্স ২-৩ টটেনহাম
২০১৮-১৯, সেমিফাইনাল
টটেনহামের ঘরের মাঠে প্রথমার্ধে ফন ডি বিকের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আয়াক্স। পরে আর এই গোল শোধ করতে পারেনি ইংলিশ ক্লাবটি। এক গোলে পিছিয়ে পড়ে ফিরতি লেগটা আয়াক্সের মাঠে খেলতে নামে টটেনহাম। পাঁচ গোলের সে থ্রিলার টটেনহামই জিতেছিল। তবে মজাটা হচ্ছে ফিরতি লেগের ৩৫ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল টটেনহাম। বিরতির পর লুকাস মউরার হ্যাটট্রিকে ৩-২ গোলের জয় তুলে নেয় টটেনহাম। দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচ ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত থাকলেও আয়াক্সের মাঠে বেশি গোল করার সুবিধা নিয়ে ফাইনালে উঠেছিল টটেনহাম।
আয়াক্স ১-২ রিয়াল মাদ্রিদ
রিয়াল মাদ্রিদ ১-৪ আয়াক্স
২০১৮-১৯, শেষ ষোলো
করিম বেনজেমা ও মার্কো আসেনসিওর গোলে আয়াক্সের মাঠে প্রথম লেগ জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর ৬০ মিনিটে বেনজেমা গোল করেন। এর ১৫ মিনিট পর হাকিম জিয়েশের গোলে সমতায় ফেরে আয়াক্স। ৮৭ মিনিটে আসেনসিও গোল করে জেতান রিয়ালকে। কিন্তু ফিরতি লেগে রিয়ালের ঘরের মাঠে গিয়ে দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় আয়াক্স। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এক অসাধারণ ম্যাচ উপহার দেয় ডাচ ক্লাবটি। প্রথমার্ধে আয়াক্সের হয়ে গোল করেন ডেভিড নেরেজ ও হাকিম জিয়েশ। বিরতির পর রিয়ালের জালে আরও দুটি গোল করেন তাদিচ ও শোনে। আসেনসিও একটি গোল করেছিলেন রিয়ালের হয়ে। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের জয়ে পরের রাউন্ডে ওঠে আয়াক্স। ঘরের মাঠে প্রথম লেগ হারের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ক্লাবটি।
ইন্টার মিলান ০-১ বায়ার্ন মিউনিখ
বায়ার্ন মিউনিখ ২-৩ ইন্টার মিলান
২০১০-১১, শেষ ষোলো
ইন্টার মিলানের মাঠ সান সিরোয় প্রথম লেগটা মারিও গোমেজের গোলে জিতেছিল বায়ার্ন মিউনিখ। ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে বায়ার্নের জন্য যে চমক অপেক্ষা করছে তা জানত কে! মারিও গোমেজ ও টমাস মুলার বায়ার্নের হয়ে গোল করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। স্যামুয়েল ইতো, পানদেভ ও ওয়েসলি স্নেইডারের গোলে ম্যাচটা জিতে নিয়েছিল জোসে মরিনিওর ইন্টার। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ গোলে দুই দল সমতায় থাকলেও ‘অ্যাওয়ে গোল’ নিয়মে পরের রাউন্ডে ওঠে ইন্টার।
আয়াক্স ০-১ প্যানাথিনাইকোস
প্যানাথিনাইকোস ০-৩ আয়াক্স
১৯৯৫-৯৬, সেমিফাইনাল
আমস্টারডামে ঘরের মাঠে গ্রিসের ক্লাবটির কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল আয়াক্স। ৮৭ মিনিটে ওয়ারজাইচার গোলে জয় তুলে নিয়েছিল প্যানাথিনাইকোস। গ্রিসের ক্লাবটির মাঠে গিয়ে ফিরতি লেগে দুর্দান্ত হয় তুলে নেয় আয়াক্স। ফিনল্যান্ডের কিংবদন্তি জেরি লিটমানেনের জোড়া গোল ও উটারের গোলে ৩-০ ব্যবধানের জয় তুলে নেয় ডাচ ক্লাবটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের জয়ে ফাইনালে উঠেছিল আয়াক্স।