রোনালদোদের হারের রাতে ফ্রান্স-জার্মানির জয় ও ইংল্যান্ডের ফেরা
আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফেরার ম্যাচে হেরেছে পর্তুগাল। তবে দারুণ জয় পেয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্স। অন্য দিকে বেলজিয়ামের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের গোলে হার এড়িয়েছে ইংল্যান্ড।
পর্তুগাল ০: ২ স্লোভেনিয়া
আগের ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছাড়াই ৫-২ গোলের বড় জয় পেয়েছিল পর্তুগাল। স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে রোনালদো ফেরায় আরও দারুণ কিছুর প্রত্যাশা ছিল পর্তুগিজ সমর্থকদের। তবে লিয়ুবলিয়ানায় রোনালদোর ফেরার ম্যাচে উল্টো হেরেই ২-০ গোলে বসেছে পর্তুগিজরা।
স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে পর্তুগাল। বলের দখল নিজেদের কাছে রেখে ডানপ্রান্ত দিয়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণে হানা দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রেখেও সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না পর্তুগাল। ম্যাচের প্রথম ৩৩ মিনিটে ৭২ শতাংশ বলের দখল রেখেও কোনো শট নিতে পারেনি তারা। অন্য দিকে বলের দখলে বেশ পিছিয়ে থাকলেও এ সময়ে ২টি শট নেয় স্লোভেনিয়া। রোনালদোর নিষ্প্রভ প্রথমার্ধে শেষ পর্যন্ত গোল পায়নি পর্তুগাল।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি রোনালদো। পর্তুগালও তাই বিশেষ কোনো সুযোগ পায়নি, কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও মেলেনি গোলের দেখা। উল্টো ৭২ ও ৮০ মিনিটে গোল করে লিড নেয় স্লোভেনিয়া। শেষ পর্যন্ত তাই হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পর্তুগালকে।
ইংল্যান্ড ২-২ বেলজিয়াম
আগের ম্যাচে ব্রাজিলের বিপক্ষে হারের পর বেলজিয়ামের বিপক্ষেও হারের মুখে ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জুড বেলিংহামের দারুণ গোলে ২-২ ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইংলিশরা।
ওয়েম্বলিতে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচের ১০ মিনিটেই জন স্টোনসকে হারায় ইংল্যান্ড। চোট নিয়ে ম্যানচেস্টর সিটি ডিফেন্ডার মাঠ ছাড়লে তাঁর বদলে মাঠে নামেন জো গোমেজ। ধাক্কা সামলে ম্যাচে ফেরার আগেই গোল খেয়ে বসে স্বাগতিকরা। ইংল্যান্ডের গোল হজম করায় দায় ছিল গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের। পিকফোর্ড বল শট নিতে গিয়ে তুলে দেন বেলজিয়ামের আমাদু ওনানার পায়ে। তাঁর কাছ থেকে বল পেয়ে দূর থেকে দারুণ প্লেসিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ইউরি টিলেমান্স।
১৭ মিনিটে অবশ্য পেনাল্টি গোলে সমতা ফেরায় ইংলিশরা। পেনাল্টি থেকে গোল করেন ইভান টনি। সমতায় ফিরে দারুণ কিছু আক্রমণ শানায় ইংল্যান্ড। ২৮ মিনিটে জ্যারড বাওয়েন গোল করলেও সেই গোল অফসাইডের ফাঁদে বাতিল হয়। এরপর গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন জুড বেলিংহাম। তব পাল্টা আক্রমণ থেকে ভুল করেনি বেলজিয়াম।
৩৬ মিনিটে রোমেলু লুকাকু বুটের বাইরের অংশ দিয়ে শট নিয়ে ঘূর্ণি বল পাঠান টিলেমান্সের উদ্দেশ্যে। ভুল করেননি অ্যাস্টন ভিলা তারকা। ডাইভিং হেডে বল জড়ান জালে। এরপর চেষ্টা করেও ম্যাচে আর সমতায় ফিরতে পারছিল না ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধেও বেশির ভাগ সময় চেষ্টা করে গোল পায়নি ইংলিশরা। তবে শেষ মুহূর্তের যোগ করা সময়ে ইংলিশদের সমতায় ফেরান বেলিংহাম। যা নিশ্চিতভাবে স্বস্তি ফিরিয়েছে গ্যারেথ সাউথগেটের মনেও।
জার্মানি ২-১ নেদারল্যান্ডস
দুঃসময় কাটিয়ে ফিরে আগের ম্যাচে ফ্রান্সকে হারিয়েছিল জার্মানি। এবার জার্মানদের কাছে হার দেখল নেদারল্যান্ডসও। জার্মানরা জিতেছে ২-১ গোলে।
আগের ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই রেকর্ড গড়া গোল করেছিল জার্মানি। আজ অবশ্য শুরুতে গোলটা নিজেরাই হজম করেছে তারা। ম্যাচের তিন মিনিটেই গোল করে নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে দেন জোয়ি ভেরমান। এ লিড অবশ্য ৮ মিনিটের বেশি ধরে রাখতে পারেনি ডাচরা। ১১ মিনিটে ম্যাক্সিমিলিয়ান মিটেলস্টাটের দারুণ এক গোলে ম্যাচে সমতায় ফেরে জার্মানরা। এ সমতাতেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল দুই দলের সামনে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলটি পাচ্ছিল না কোনো দলই। তবে ৮৫ মিনিটে নিকলাস ফুলক্রুগ গোল করে জয় এনে দেন জার্মানিকে।
ফ্রান্স ৩: ২ চিলি
জয়ে ফিরেছে ফ্রান্স। আগের ম্যাচে জার্মানির কাছে হারের পর চিলির বিপক্ষে ম্যাচটি ফরাসিদের জন্য ছিল দারুণ চ্যালেঞ্জিং। সেই চ্যালেঞ্জে ভালোভাবে উতরে গেল ফরাসিরা। জমে উঠা ম্যাচে চিলির বিপক্ষে ফ্রান্স জিতেছে ৩-২ গোলে।
চিলির বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে যায় ফ্রান্স। মার্সেলিনো নুনিয়েজ গোল করে এগিয়ে দেন চিলিকে। তবে ১৮ মিনিটে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান ইউসুফ ফোফানা। আর ২৫ মিনিটে ব্যবধান ২-১ করেন রানদাল কোলো মুয়ানি। এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
বিরতির পর ৭২ মিনিটে গোলে ব্যবধান ৩-১ করেন অলিভিয়ের জিরু। পরে অবশ্য ৮২ মিনিটে ব্যবধান ৩-২ করে ম্যাচ জমানোর ইঙ্গিত দেয় চিলি। তবে শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফেরা হয়নি লাতিন দেশটির। ৩-২ গোলে হার নিয়েই চিলিকে ছাড়তে হয়েছে মাঠ।