আর্জেন্টিনার ‘আধ্যাত্মিক নেতা’র ছবি সরিয়ে মেসির ছবি স্থাপনের দাবি

লিওনেল মেসি ও ইভা পেরন

আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে দেশটির গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়। যেখানে বর্তমানে পরিচালিত হয় উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কাজ। ২০১১ সাল থেকে আভিনদা ৯ দি জুলিওর সেই পথ ধরে কেউ গেলে একবারের জন্য হলেও পূর্ত ভবন দেয়ালের দিকে একবার হলেও ফিরে তাকাতেন। তখন থেকে যে সেই দেয়ালটিতে ঠাঁই পেয়েছিল ইভা পেরন নামের এক নারীর প্রতিমূর্তি।

ইতিহাসের খোঁজখবর যাঁরা রাখেন কিংবা ইতিহাস বিষয়ে যাঁদের কৌতূহল, তাঁদের ইভা পেরোনকে চেনার কথা। ‘এভিটা’ ডাকনামে বিখ্যাত এই নারী একাধারে ছিলেন আর্জেন্টাইন ‘জাতির আধ্যাত্মিক নেতা’, অভিনেত্রী, লোকহিতৈষী এবং সমাজকর্মী। আর্জেন্টিনার কংগ্রেস পেরনকে ‘জাতির আধ্যাত্মিক নেতা’ তকমা দিয়েছিল। আরেকটি পরিচয়, পেরন ছিলেন আর্জেন্টিনার ফার্স্ট লেডি।

আরও পড়ুন

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ডমিঙ্গো পেরোনের স্ত্রী ছিলেন ইভা পেরন। প্রশ্ন হচ্ছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসির সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক? কেনই–বা আর্জেন্টিনায় এখন পাশাপাশি উচ্চারিত হচ্ছে এ দুজনের নাম। কারণ, পূর্ত ভবনে ঠাঁই পাওয়া ইভা পেরনের সেই ছবিটি সরিয়ে এখন মেসির বিশ্বকাপে চুমু খাওয়ার দৃশ্যের প্রতিস্থাপনের দাবি উঠেছে। আর্জেন্টিনার মেসি–ভক্তরাই তুলেছেন এই দাবিটি।

গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের পর থেকে আর্জেন্টিনার ইতিহাসে অন্য এক উচ্চতায় উঠেছেন মেসি। ডিয়েগো ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরার মহাকাব্যিক মুহূর্তটির পুনঃ মঞ্চায়ন করেছেন এই ফুটবল মহাতারকা। এই বিশ্বকাপ শিরোপার জন্য আর্জেন্টাইনরা ৩৬ বছর ধরে অপেক্ষা করেছিল।

বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুমু খাচ্ছেন মেসি
ছবি: রয়টার্স

বিশ্বকাপ শিরোপা পুনরুদ্ধারের কিছু সময় পর মেসি–ভক্তরা চেঞ্জ ডট অর্গে পেজে একটি পিটিশন দায়ের করেন। যার শিরোনাম ছিল, ‘সমাজকল্যাণ ভবনে ইভা পেরোনের ছবি বদলে লিওনেল মেসির ছবি স্থাপন করা হোক’। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই পিটিশনে স্বাক্ষর করেন ২৫ হাজার মানুষ।  


দি জুলিওর এই ভবনটি ঐতিহাসিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট অগাস্তিন পেদ্রো জুস্তোর সময়ে ১৯৩৬ সালে এই ভবনটি উদ্বোধন করা হয়েছিল। ২৭ তলা বিশিষ্ট এই ভবনটিতে দেখা মেলা ইভা পেরোনের প্রতিমূর্তিটির নকশা করেছিলেন প্লাস্টিক আর্টিস্ট আলেহান্দ্রো মারমো।

আরও পড়ুন

৬ মাস আগে উন্নয়ন মন্ত্রণালয় থেকে এই ছবি সরানোর কথা বলা হয়েছিল। তবে সেখানে এই ছবির পরিবর্তে অন্য কোনো ছবি ব্যবহারের বিষয়টি আলোচনায় ছিল না। বরং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সেটি সরিয়ে ফেলার কথা ভাবা হচ্ছিল। এমনকি এই ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রস্তাবও আনা হয়েছিল। যদিও সেই প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছিল। এখন মেসির বিশ্বকাপ জয় পুরো পরিস্থিতিকে বদলে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইভা পেরোনোর ছবি সরিয়ে মেসির ছবি প্রতিস্থাপন করা হয় কি না, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

আরও পড়ুন