ফাইনালে আনচেলত্তির প্যান্ডোরার বাক্স থেকে বেরোবে কোন কৌশল
‘জকি হওয়ার জন্য আপনার ঘোড়া হওয়ার প্রয়োজন নেই’—উক্তিটি আরিগো সাচ্চির। কোচিংয়ের কোনো ধরনের অভিজ্ঞতাই তাঁর ছিল না। ছিলেন জুতার দোকানের সাধারণ এক কর্মচারী। সেখান থেকে সর্বকালের সেরা কোচদের একজন হওয়া ইতালির কিংবদন্তি কোচের এ দর্শনটা মনঃপূত না হয়ে পারে কী করে!
সাচ্চির কোচিং–দর্শন থেকে যেসব কোচ বেরিয়ে এসেছেন, কার্লো আনচেলত্তি তাঁদের অন্যতম। এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জেতার পর গুরুর সঙ্গে আলাপও হয়েছে আনচেলত্তির। দুজনের সেই আলাপে সাচ্চিকে বায়ার্ন ম্যাচ নিয়ে আনচেলত্তি বলেছিলেন, ‘আরিগো, সেটা ছিল একধরনের কৌশল। আমরা মরে যাওয়ার ভান করেছিলাম এবং আকস্মিকভাবে শেষ মুহূর্তে ম্যাচে ফিরে আসি এবং জিতে যাই।’
শুনতে কিছুটা অদ্ভুত মনে হলেও এই কথাগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে আনচেলত্তির ফুটবল-দর্শন। আক্ষরিক অর্থেই ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাম মুখে নিয়ে চোয়াল নাচাতে নাচাতে যিনি মুহূর্তের মধ্যে বদলে দিতে পারেন গোটা ম্যাচের দৃশ্যপট। আর এ কাজটি করার সময় তাঁর দৃষ্টি থাকে স্থির এবং অবয়ব থাকে অভিব্যক্তিহীন। এমনকি গোল দেওয়া কিংবা গোল খাওয়া—কোনোটিই তাঁর এই নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিতে বিশেষ কোনো পার্থক্য তৈরি করতে পারে না। আবার এই আনচেলত্তিকেই ম্যাচ শেষে আপনি দেখবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-রদ্রিগোদের সঙ্গে উদ্ভট ভঙ্গিতে নাচে মেতে উঠতে কিংবা চোখে সানগ্লাস পরে আর মুখে চুরুট নিয়ে বিশেষ পোজ দিতে। এই দুই ভিন্ন ব্যক্তিত্বের মধ্যে কোনটি প্রকৃত আনচেলত্তি, সেই রহস্যের উন্মোচন তাঁর কোচিংয়ের কৌশল নির্ধারণের মতোই কঠিন ও ধোঁয়াশাপূর্ণ।
ব্যক্তিত্বের এই দ্বিমুখী বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেই আনচেলত্তি এখন পর্যন্ত ঘরে নিয়ে গেছেন ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি। আজ রাতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ জিতলে চ্যাম্পিয়নস লিগের ৫ম শিরোপাটিও উঠবে আনচেলত্তির হাতে। অথচ আনচেলত্তি ছাড়া অন্য কোনো কোচ চ্যাম্পিয়নস লিগের চারটি শিরোপাও কখনো জিততে পারেননি। আনচেলত্তির চলার পথ অবশ্য কখনোই কুসুমকোমল ছিল না। এ জন্য প্রতিনিয়ত কঠিন এক লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাঁকে। গায়ে লেগেছে কৌশলহীন কোচের তকমাও। তিনি অবশ্য এসব কখনো গায়ে মাখেননি। সমস্ত সমালোচনার দিকে স্বভাবসুলভ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েছেন এবং ডাগআউটে ফিরে এসে জিতেছেন আরেকটি শিরোপা।
২০০৯ সালে চেলসির অধ্যায়ের কথাই ধরা যাক। স্যার আলেক্স ফার্গুসন তখন সাফল্যের চূড়ায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে শেষ সাত মৌসুমের পাঁচবারই প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতেছেন কিংবদন্তি এই স্কটিশ কোচ। এর মধ্যে শুধু ২০০৯-১০ ও ২০১১-১২ মৌসুমে তিনি শিরোপা হাতছাড়া করেছেন। একবার চেলসির কাছে এবং আরেকবার ম্যানচেস্টার সিটির কাছে। দুটি দলই শিরোপা জয়ের পথে হোম ও অ্যাওয়েতে হারিয়েছিল ইউনাইটেডকে। সেই দুই দলের কোচ ছিলেন দুই ইতালিয়ান—কার্লো আনচেলত্তি ও রবার্তো মানচিনি। ইতালিয়ান লিগের পাশাপাশি ইতালিয়ান কোচদের দাপটও তখন ধীরে ধীরে কমে আসছিল। একসময় পুরো রাজপাটই অন্যদের দখলে চলে যায়।
এই চলে যাওয়ার ভিড়েও টিকে থাকেন একজন কার্লো আনচেলত্তি। এ শতাব্দীতে শুধু দুজন ইতালিয়ান কোচ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন—কার্লো আনচেলত্তি ও রবার্তো ডি মাতেও। তাঁদের মধ্যে মাতেও অবশ্য এক মৌসুমের চমক হয়ে থেকে গেছেন। ২০১১-১২ মৌসুমে চেলসির হয়ে এফএ কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে হারিয়ে গেছেন তিনি। ইতালিয়ানদের মধ্যে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের রাজ্যে দৃশ্যপটে রয়ে গেছেন শুধু আনচেলত্তি। যিনি এর মধ্যে একাই চারবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। তবে আগেই বলা হয়েছে, এই টিকে থাকার লড়াইটা মোটেই সহজ ছিল না তাঁর জন্য। প্রতিনিয়ত নিজেকে বিকশিত করার মধ্য দিয়েই টিকে আছেন তিনি।
আনচেলত্তি কীভাবে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখতে পেরেছেন, তা উঠে এসেছে বিখ্যাত ফুটবল লেখক মাইকেল কক্সের ফুটবলীয় কৌশল নিয়ে লেখা বই ‘দ্য মিক্সার’-এ। সেখানে কক্স লিখেছেন, দূরদর্শিতা, নমনীয় কৌশল আর ফুটবল ম্যাচকে দাবা খেলার কৌশল দিয়ে বিবেচনার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে রেখেছেন আনচেলত্তি।
এমনকি দলের প্রয়োজনে অনেক সময় প্রতিপক্ষের শক্তিকেও নিষ্ক্রিয় করার মধ্য দিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে তাঁকে। পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ফুটবলে নিজের অভিজাত চরিত্রও আনচেলত্তিকে প্রাসঙ্গিক থাকতে সহায়তা করেছে। পেপ গার্দিওলা বার্সেলোনার দায়িত্ব নেওয়ার আগপর্যন্ত আনচেলত্তির এসি মিলানকে ধরা হতো ইউরোপের সবচেয়ে অভিজাত দল। আর এ কারণেই তাঁকে চেলসিতে নিয়ে এসেছিলেন রোমান আব্রামোভিচ। নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া চেলসি তখন খুঁজে বেড়াচ্ছিল নিজেদের আত্মপরিচয়।
এই শতাব্দীতে শুধু দুজন ইতালিয়ান কোচ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন—কার্লো আনচেলত্তি ও রবার্তো ডি মাতেও।
একই সঙ্গে এটাও সত্যি যে ইউরোপের শীর্ষ কোচদের মধ্যে আনচেলত্তিই সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড়কেন্দ্রিক। ফরমেশন ও কৌশল কখনোই যাঁর কাছে শেষ কথা নয়। তাঁর কৌশল আবর্তিতই হয় দলের সেরা খেলোয়াড়দের কেন্দ্র করে। এর ফলে যে সময়ে এসে কোচদের কৌশলকে শিরোধার্য বিবেচনা করা হয়, সে সময়ে আনচেলত্তির ফুটবলীয় দর্শনকে ব্যাখ্যা করা একটু কঠিনই বটে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে যা বিবেচ্য এবং যে কারণে তিনি বিখ্যাত, তা খেলোয়াড় পরিচালনা। ড্রেসিংরুমে তারকা খেলোয়াড়দের অহমকে কীভাবে সামলাতে হয়, সেটা তার চেয়ে ভালো আর কেই–বা জানেন! যেমন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের মতো দাম্ভিক আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো মহাতারকাদেরও তিনি অনায়াসে বশে নিয়ে আসতে পারেন, হয়ে উঠতে পারেন তাঁদের পছন্দের একজন।
তবে মাঠে বেশি তারকা খেলোয়াড় খেলানোর বিপদও কম নয়। মিলানে তাঁর স্কোয়াড ১০ নম্বরে টইটম্বুর হয়ে গিয়েছিল। সে সময়টা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তাদের সবাইকে দলে জায়গা দেওয়া এবং খুশি রাখা নিয়ে সংগ্রাম করেছিলাম।’ আর এরপরই আবিষ্কৃত হয় বিখ্যাত ‘ক্রিসমাস ট্রি ফরমেশন’, যাকে আনচেলত্তি বলেছিলেন ‘বিউটিফুল অ্যাক্সিডেন্ট’। এরপর ৪-৩-২-১ ফরমেশনে দলকে খেলিয়ে ফল পেতে শুরু করেন তিনি। এ ফরমেশনে মিলানের বেশির ভাগ তারকাকেই খেলাতে পেরেছিলেন আনচেলত্তি।
তবে কোচ হিসেবে আনচেলত্তির শুরুটা এমন ছিল না। শুরুতে বেশ গোঁড়ামিও ছিল তাঁর মধ্যে। গুরু আরিগো সাচ্চির দীক্ষা থেকে চুল পরিমাণ সরে আসতে নারাজ ছিলেন এই ইতালিয়ান। যে কারণে পার্মায় রবার্তো বাজ্জ্যর মতো দুর্দান্ত ফুটবলারকে জায়গা বের করে দিতে পারেননি। তবে এই গোঁড়ামি যে তাঁকে ডোবাবে, সেই উপলব্ধি আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি। দ্রুত নিজেকে বিভিন্ন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেন।
এর ফলাফল হিসেবে অনেকে অবশ্য মনে করেন, আনচেলত্তির কোনো কৌশলই নেই! তিনি সাফল্য পান শুধু খেলোয়াড় পরিচালনার দক্ষতার জন্য। তবে কথাটি যে ভুল, চলতি মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের পারফরম্যান্সের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে রিয়ালকে কোনো নির্দিষ্ট একটি কৌশলে তিনি খেলাননি। ম্যাচের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে তাঁর হিসাব–নিকাশও বদলে যায়। বিভিন্ন সময় কৌশল নিয়ে গোঁড়ামিতে না ভোগার কথা আনচেলত্তি নিজেও স্বীকার করেছেন, ‘ফুটবল আমার আবেগ। কিন্তু আমি চেষ্টা করি, যতটা সম্ভব এটাকে সরল রাখার। ফুটবল আমার কাছে জটিল কিছু নয়। এটা সরল। এমনকি কৌশলগত দিক থেকেও।’ চারদিকে যখন কৌশলের জয়জয়কার, সে সময় দাঁড়িয়ে ফুটবলকে এতটা সরলভাবে দেখতে পারাটা নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু।
এরপরও আনচেলত্তি পুরোপুরি কৌশলবর্জিত কোচ নন। এ ক্ষেত্রে সিটির বিপক্ষে রিয়ালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটিকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়। সিটির শক্তি বুঝে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক কৌশলে দল পরিচালনা করেন তিনি। এর ফলে অনেকে তাঁর কৌশলকে ‘নির্লজ্জ রক্ষণ’ও বলেছেন। তাতে অবশ্য আনচেলত্তির কিছু যায়–আসে না। সিটির মাঠ থেকে ঠিকই ফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে এসেছেন। আর এখন পঞ্চম ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফিতে হাত ছোঁয়ানোর অপেক্ষায় আছেন।
চলতি মৌসুমেও আনচেলত্তির কৌশল খানিকটা ধোঁয়াশাপূর্ণ ছিল। তবে মোটাদাগে রিয়ালের খেলাকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, লো বিল্ডআপে দলটি সাধারণত ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেলেছে। যেখানে একজন নম্বর সিক্স এবং দুজন নম্বর এইটকে সক্রিয় রাখেন আনচেলত্তি। মিডফিল্ডাররা খানিকটা নিচে নেমে আসেন এবং এ সময় অতিরিক্ত খেলোয়াড় থাকার সুবিধাও রিয়াল নিয়ে থাকে, যা তাদের প্রতিপক্ষের প্রেসিংকে নষ্ট করে দিতে সাহায্য করে।
আবার হাই বিল্ডআপের সময় ২-৩-৫ ফরমেশনে দলকে সাজান আনচেলত্তি। উইঙ্গাররা ভেতরের দিকে চলে আসেন এবং ফুলব্যাকরা ওপরে উঠে আসেন। এর ফলে মাঝমাঠে রিয়ালের অন্তত আটজন খেলোয়াড় উপস্থিত থাকেন। এ ছাড়া দুই উইংয়ে থাকেন একজন করে খেলোয়াড়। এর ফলে মাঝমাঠে খেলোয়াড়দের মধ্যে জায়গা কমে আসে এবং মাঝমাঠ থেকে আক্রমণে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায়। আক্রমণে যাওয়ার এই কৌশল আনচেলত্তির বেশ পছন্দের। কারণ, মাঝমাঠ ধরে খেলোয়াড়দের আক্রমণে যাওয়াকে তিনি বিশেষ প্রাধান্য দেন।
এ কৌশলে খেলার সময় দলকে যখন রক্ষণাত্মক কৌশলে রূপান্তরিত হতে হয়, তখনো বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। প্রতিপক্ষের প্রেসিং নিষ্ক্রিয় করার জন্য এ সময় বেশি খেলোয়াড় পাওয়া যায়। এ ছাড়া মাঝমাঠে বেশি খেলোয়াড় রাখার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে খেলোয়াড়দের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনা। এর ফলে পাসের দূরত্বও কমে আসে এবং প্রেস করার জন্য প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের হাতে সময় থাকে খুব কম। ফলে ব্যাকলাইন ওপরে রেখেও রিয়াল পজেশন নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পায়।
মাঝমাঠে অতিরিক্ত খেলোয়াড় রাখার কারণে রিয়ালের বিশেষ কোনো একজন খেলোয়াড় বেশির ভাগ সময় ফাঁকা জায়গা নিয়ে থাকেন, যেখান থেকেও দুর্দান্ত আক্রমণ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রিয়ালের এ কৌশল প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদেরও বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয় এবং তাঁরা বুঝতেই পারেন না, কাকে আসলে মার্ক করা উচিত। এ কারণে ম্যাচে প্রতিপক্ষের চেয়ে রিয়াল বরাবরই এক ধাপ এগিয়ে থাকে।
রক্ষণে ডর্টমুন্ড শক্তিশালী হওয়ায় রিয়াল হয়তো ফাইনালেও এই কৌশল ধরেই আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করবে।
বক্সের ভেতর খেলোয়াড় বাড়িয়ে কিংবা ওভারল্যাপ করেও ডর্টমুন্ডের অতিরক্ষণাত্মক কৌশলকে নষ্ট করার চেষ্টা করবে তারা। তাই ম্যাচটাও শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে রিয়ালের আক্রমণ বনাম এবং ডর্টমুন্ডের রক্ষণের চোখধাঁধানো লড়াই। তবে আক্রমণে চোখ রাখলেও রক্ষণকে ফাঁকা রাখার সুযোগ নেই। কারণ, প্রতি–আক্রমণ থেকে গোল আদায়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে ডর্টমুন্ডও, যা ম্যাচটাকে আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে নিশ্চিতভাবেই।
ডর্টমুন্ডের জন্য অবশ্য অন্য বিপদও আছে। ম্যাচ চলাকালেও প্রয়োজন অনুসারে নিজের কৌশল আমূল বদলে ফেলতে পারেন আনচেলত্তি। বিশেষ করে রিয়াল যদি শুরুতে গোল খেয়ে বসে। সে ক্ষেত্রে পুরো ম্যাচের চিত্র অন্য রকম হয়ে যেতে পারে। এমনকি আনচেলত্তি যখন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড় নামাবেন, তখনো একধরনের কৌশলগত পরিবর্তন আসবে। আজকের ফাইনালে আনচেলত্তির প্যান্ডোরার বাক্স থেকে কী বেরিয়ে আসবে, সেটা আগে থেকে আন্দাজ করা মুশকিল! তবে কৌশল বা কৌশলের পরিবর্তন যেমনই হোক—এটুকু নিশ্চিত যে ম্যাচ জিততে আনচেলত্তি নিজের সব অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য উজাড় করে দেবেন। ইতিহাস গড়ার এমন মুহূর্ত যে তাঁর সামনে আর কখনো না–ও আসতে পারে!