‘রোনালদো আসায় আল নাসরের খেলোয়াড়দের কাজ আরও কঠিন হয়েছে’
ইউরোপীয় ফুটবলের পাট চুকিয়ে এশিয়ায় গেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বছরে রেকর্ড ২১ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা) বেতনে নাম লিখিয়েছেন আল নাসরে। সৌদি আরবের ক্লাবটির হয়ে তিন ম্যাচ খেলেও ফেলেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। তবে উচ্চ বেতনের সঙ্গে তাঁর পারফরম্যান্স গ্রাফ বড় বেমানান মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
গতকাল নিজের ৩৮তম জন্মদিনের কেক কাটা রোনালদো ৩ ম্যাচে করেছেন মাত্র একটি গোল, সেটাও পেনাল্টি থেকে। যোগ করা সময়ে তাঁর গোলেই অবশ্য আল ফাতেহর সঙ্গে সৌদি প্রো লিগের ম্যাচটা ২–২–এ ড্র করেছে আল নাসর। তবে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচটা জিততেও পারত রিয়াদের ক্লাবটি।
আগের ম্যাচেও সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করায় রোনালদোকেই দুষেছেন আল নাসর কোচ রুডি গার্সিয়া। এবার সতীর্থ লুইজ গুস্তাভো দাবি করেছেন, রোনালদোর উপস্থিতি তাঁদের ‘জীবন’ আরও কঠিন করে তুলেছে।
টিভি চ্যানেল আরটি অ্যারাবিককে ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডার বলেছেন, ‘রোনালদোর কারণে প্রতিপক্ষ দলগুলো আরও উজ্জীবিত হয়ে খেলতে নামছে। তারা আমাদের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে সেরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। মাঠে ২০০% উজাড় করে দিচ্ছে। এটা আমাদের ম্যাচগুলো আরও কঠিন করে তুলছে।’
বায়ার্ন মিউনিখ ও অলিম্পিক মার্শেইয়ের সাবেক তারকা গুস্তাভোর কথাগুলো ফেলে দেওয়ার মতো নয়। তাঁর দাবির সঙ্গে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান মেলালেই স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।
গত ২২ জানুয়ারি আল নাসরে রোনালদোর অভিষেকের আগে সৌদি প্রো লিগে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে শীর্ষে ছিল তারা। এখনো পয়েন্ট তালিকার চূড়াতেই অবস্থান করছে আল নাসর। তবে দুই ও তিনে থাকা থাকা আল শাবাব, আল ইত্তিহাদের সঙ্গে এখন তাদের পয়েন্ট সমান ৩৪। শুধু গোল–পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় ১ নম্বরে আছে আল নাসর।
এখানেই শেষ নয়। রোনালদো পুরো ৯০ মিনিট খেলার পরও সৌদি সুপার কাপের সেমিফাইনালে আল ইত্তিহাদের কাছে ৩–১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিয়েছে আল নাসর। ওই ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে প্রো লিগে পরের দুই ম্যাচও জিতে নিয়েছে আল ইত্তিহাদ। এতে আল নাসরের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে তারাও।
ঐতিহ্য, জৌলুশ আর শক্তিমত্তায় ইউরোপের তুলনায় এশিয়ান ফুটবল ঢের পিছিয়ে থাকলেও সৌদিতে খেলা যে মোটেও সহজ নয়, সেটা এই কদিনেই টের পেয়েছেন রোনালদো। আল নাসরের হয়ে খেলা তিন ম্যাচে তিন ধরনেরই (জয়, ড্র, হার) অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর।
তবে রোনালদোকে প্রশংসায়ও ভাসিয়েছেন গুস্তাভো, ‘তার জন্মই যেন হয়েছে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য। সব সময় সাফল্যও পেয়ে এসেছে। সে দলের জন্য কী করতে যাচ্ছে, সবাই তা দেখার অপেক্ষায় থাকে। ওর প্রথম গোল আমার ওপর থেকে চাপ কমিয়েছে। কৌশলগত দিক হোক কিংবা শারীরিক—আমরা প্রতিদিন ওর কাছ থেকে কিছু না কিছু শিখি।’