যে ৪ কারণে বার্সার কাছে হেরেছে রিয়াল

রিয়ালকে কোনো সুযোগই দেয়নি বার্সাছবি: রয়টার্স

আরেকটি ‘এল ক্লাসিকো’ এবং রিয়াল মাদ্রিদের আরেকটি হার। জাভি হার্নান্দেজের অধীনে এ নিয়ে ৪টি ক্লাসিকোতে জিতল বার্সেলোনা। এর মধ্যে কদিন আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে রিয়ালকে হারিয়ে কোচ হিসেবে নিজের প্রথম শিরোপাও জিতেছেন জাভি। গতকাল রাতের ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দাপুটে ফুটবল খেলেও আত্মঘাতী গোলে ঘরের মাঠে হার দেখতে হয়েছে রিয়ালকে

এমনকি ২০১০ সালের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে লক্ষ্যে শট নিতে ব্যর্থ হলো রিয়াল। মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে কেন এভাবে ব্যর্থ হলো রিয়াল? কোন জাদুবলে আরেকবার রিয়ালকে আরেকটি হার উপহার দিলেন জাভি? দেখে নেওয়া যাক রিয়ালের হারের সম্ভাব্য ৪ কারণ।

আরও পড়ুন

রক্ষণে দুর্দান্ত বার্সা

এই ম্যাচে বার্সার দখলে বল ছিল মাত্র ৩৫ শতাংশ। বোঝাই যাচ্ছে, রিয়াল ম্যাচজুড়ে দাপুটে ফুটবলই খেলেছে। রিয়ালের শক্তিশালী আক্রমণভাগকে থামাতে দারুণ কিছুই করতে হতো বার্সাকে। আর সেটা তারা করেছেও। রক্ষণে রীতিমতো দুর্গ গড়ে তুলেছিল বার্সা। অনেক সময় ১০ জন ফুটবলারকে নিচে নেমে এসে রক্ষণ সামলাতে দেখা গেছে, যার ফলে ম্যাচজুড়ে একের পর এক আক্রমণে গিয়েও ন্যূনতম কোনো শট লক্ষ্যে রাখতে পারেনি ‘লস ব্লাঙ্কোস’ শিবির।

বার্সার রক্ষণ এতটাই দৃঢ় ছিল যে গোলরক্ষক টের স্টেগেনকেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে সামান্যই। মূলত বার্সার দুর্দান্ত রক্ষণাত্মক ফুটবলের কারণে হেরেছে রিয়াল। ম্যাচ শেষে বার্সাকে এভাবে খেলতে দেখে ‘বিস্মিত’ হওয়ার কথাও বলেছেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

ভিনিসিয়ুসকে আটকে রেখেছিলেন আরাউহো
ছবি: রয়টার্স

রিয়ালের ফিনিশিং–ব্যর্থতা

১৩টি শট নিয়ে কোনোটিই লক্ষ্যে রাখতে না পারা ফিনিশিংয়ে রিয়ালের ব্যর্থতাকেই তুলে ধরে। মিডফিল্ডে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে গোলের সুযোগ তৈরির চেষ্টা করেছিল দলটি। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে রিয়ালের সবগুলো আক্রমণ।

কাছাকাছি জায়গা থেকে ক্রমাগত ব্যর্থতার পর ডি–বক্সের বাইরে থেকেও শট নেওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি সেই প্রচেষ্টাগুলোও। রিয়ালের গোল করার মূল অস্ত্র করিম বেনজেমাও এই ম্যাচে সেভাবে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন, যার ফলে এল ক্লাসিকোতে আরেকটি হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে রিয়ালকে।

আরও পড়ুন

জাভির কৌশল

বার্সাকে রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলানো জাভির জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এমন কৌশলে খেলে ম্যাচ হারলে বেশ সমালোচনার মুখেও পড়তে হতো তাঁকে। কিন্তু আটজন খেলোয়াড়কে বলের পেছনে লাগিয়ে দেওয়ার কৌশলে বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন জাভি। এদিন খুব সামান্যই প্রেস করে খেলেছে বার্সা।

বরং নিজেরা চাপ সামলানোর ওপর বেশি জোর দিয়েছে। ম্যাচে জাভির ম্যান–মার্কিং কৌশলগুলোও ছিল দারুণ। জাভি অবশ্য নিজেদের খেলার ধরন নিয়ে পুরোপুরি খুশি নন বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, এ ধরনের ম্যাচ তাঁরা খেলতে চান না। তবে ম্যাচের ফল শেষ হাসিটা জাভির মুখেই ফুটিয়েছে।

মাদ্রিদ জয়ের পর বার্সা খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস
ছবি: রয়টার্স

বোতলবন্দী ভিনিসিয়ুস

সাম্প্রতিক সময়ে রিয়ালের সেরা পারফর্মার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ম্যাচের পর ম্যাচে রিয়ালকে পথ দেখিয়ে যাচ্ছেন এই উইঙ্গার। তবে রোনাল্ড আরাউহোকে দিয়ে ভিনিসিয়ুসকে নিষ্ক্রিয় রাখার কাজটি বেশ ভালোভাবেই সম্পন্ন করেছে বার্সা। কড়া মার্কিংয়ে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়ে মেজাজ হারাতে দেখা গেছে এই ব্রাজিলিয়ান তারকাকে। রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে হারিয়েছেন নিজের মেজাজও, যা তাঁর এবং রিয়ালের পারফরম্যান্সেও ফেলেছে নেতিবাচক প্রভাব।