৮ মাস তাঁকে বিশ্বের কোথাও খেলতে দিতে চায় না ইংলিশ ফুটবল
বেটিং আইন ভাঙার দায়ে বড়সড় শাস্তি পেয়েছেন ইংলিশ স্ট্রাইকার ইভান টনি। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ব্রেন্টফোর্ডে খেলা এই ফরোয়ার্ড ৮ মাসের জন্য ফুটবল মাঠে নিষিদ্ধ হয়েছেন।
এর মধ্যে প্রথম চার মাস কোনো দলের সঙ্গে অনুশীলনও করতে পারবেন না। খেলায় নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ৫০ হাজার পাউন্ড জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে।
টনির খেলায় নিষেধাজ্ঞা শুধু ইংল্যান্ডেই নয়, বিশ্বব্যাপী কার্যকরের জন্য ফিফার কাছে চিঠি পাঠাবে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)।
২৭ বছর বয়সী টনির বিরুদ্ধে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বেটিং আইন ২৬২ বার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে ২৩২টিতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তির রায় দেন স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশন, যা কার্যকরের দায়িত্ব এফএর।
বুধবারই ইংলিশ এফএর এক বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে শাস্তি শুরুর কথা জানানো হয়। বলা হয়, টনি ২০২৪ সালের ১৭ জানুয়ারির আগে যেকোনো পর্যায়ের ফুটবলে আর এ বছরের ১৭ সেপ্টেম্বরের আগে অনুশীলনে অংশ নিতে পারবেন না।’
এক টুইট বার্তায় স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশনের রায় পাওয়ার কথা জানান টনি। রায়ে ‘হতাশা’র কথা জানিয়ে ২৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার লেখেন, ‘পূর্ণাঙ্গ লিখিত রায় পাওয়ার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করব।’
জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত টনিকে ধরা হয় ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম প্রতিভাবান স্ট্রাইকার। ইংলিশ ফুটবলের নিচের দিকের লিগ থেকে ধাপে ধাপে প্রিমিয়ার লিগে উঠে এসেছেন তিনি। ব্রেন্টফোর্ডের হয়ে প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ দুই মৌসুমে ৬৬ ম্যাচে করেছেন ৩২ গোল। এর মধ্যে চলতি ২০২২–২৩ মৌসুমে ৩৩ ম্যাচে গোল ২০টি।
মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে দলবদলের বাজারে দামও বেড়েছে টনির। ২০২০ সালেও ট্রান্সফারমার্কেটে তাঁর মূল্যমান ছিল ৪ লাখ ইউরো, যা এই মুহূর্তে ৫ কোটি। ট্রান্সফারমার্কেট বলছে, টনি এখন বিশ্ব ফুটবলের ১২তম দামি স্ট্রাইকার, আর ব্রেন্টফোর্ড খেলোয়াড়দের মধ্যে শীর্ষে।
এরই মধ্যে ইংল্যান্ড জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে টনির। মার্চে ইউক্রেনের বিপক্ষে হ্যারি কেইনের জায়গায় বদলি নামানো হয় তাঁকে। যেভাবে খেলছিলেন, সম্ভাবনা ছিল ইংল্যান্ডের ইউরো বাছাইয়ের দলে থাকারও। তবে উত্থানের সময়টিতেই বেটিং–কাণ্ড তাঁর পথচলায় বড় হোঁচট হয়ে এল।
অবশ্য স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে টনির। তাঁর ক্লাব ব্রেন্টফোর্ডের বিবৃতিতে সেই ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে, ‘আমরা লিখিত রায়ের অপেক্ষা করছি। এরপর রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
স্কাই স্পোর্টসের খবরে বলা হয়েছে, টনির নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিকভাবে কার্যকরের জন্য ফিফাকে চিঠি দেবে এফএ। যদিও ব্রেন্টফোর্ড ছেড়ে টনি অন্য কোথাও চলে যেতে চাইলে আটকানোর সুযোগ নিজেদের হাতেই আছে এফএর। ইংলিশ ফুটবলের কর্তৃপক্ষ হিসেবে টনির যেকোনো ধরনের দলবদলে (বিক্রি বা ধার) এফএর হাতেই চূড়ান্ত অনুমোদনের ক্ষমতা। তবে প্রয়োজনের খাতিরে পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই বিষয়টি পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করতে চায় এফএ।