বাংলাদেশকে সমীহ করছেন জাহাঙ্গীর খানের ভাইজি
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সাতটি দলের আবাস কাঠমান্ডুর একই হোটেলে। কাল সকালে হোটেলের রিসেপশনের পাশেই দেখা গেল, জুসের গ্লাস হাতে রুমের দিকে যাচ্ছেন মারিয়া জামিলা খান। যাঁর পৈতৃক বাড়ি পেশোয়ারে হলেও জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে। সেখানেই বেড়ে ওঠা।
৩৩ বছরের এই ফুটবলার এখন হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের নারী ফুটবলের মুখ। পাকিস্তানের স্কোয়াশ তারকা সাতবার ব্রিটিশ ওপেন চ্যাম্পিয়ন হাশিম খানের নাতনির আরেকটি পরিচয় আছে। সর্বকালের অন্যতম সেরা স্কোয়াশ খেলোয়াড় জাহাঙ্গীর খানের ভাতিজি তিনি।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরবের বিপক্ষে বাঁ পায়ের কোনাকুনি ফ্রি–কিকে করা গোলটি তাঁকে পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গনে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে। সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত চার জাতি টুর্নামেন্টে সেই গোল করে পাকিস্তান সরকারের শীর্ষ মহল থেকে অভিনন্দন বার্তাও পেয়েছেন মারিয়া।
গোলরক্ষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ডেনভার পাইওনিয়ারস ক্লাবে শুরু। এখন খেলেন মাঝমাঠে। ২০১৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে ঘটনাক্রমে আমিরাতের হয়ে খেলেছেন ৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ২০২২ সাল থেকে পাকিস্তানের জার্সিতে খেলছেন। খেলেছেন গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও। ৯ ম্যাচে তাঁর গোল ২টি।
কাঠমান্ডুতে চলমান সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে সব দলের খেলোয়াড়ের ভিড়েও চালচলনের জন্য মারিয়াকে সহজেই আলাদা করা যায় । উচ্চশিক্ষিত, খেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্তরে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে নিয়ে সবার বাড়তি কৌতূহল। কৌতূহল মেটাতে কাল কথা বলতে চাইলে এই প্রতিবেদককে মারিয়া বললেন, ‘পাকিস্তানের মিডিয়া ম্যানেজারের অনুমতি নিতে হবে।’
অনুমতি নিলেও শেষ পর্যন্ত সরাসরি কথা বলার অবশ্য সুযোগ হয়নি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে দিনভর দলীয় কার্যক্রমে ব্যস্ত ছিলেন মারিয়া। বিকেলে বাংলাদেশ আর পাকিস্তান দুই দলই অনুশীলন করল শহরের দুই মাঠে একই সময়ে। ফলে মারিয়ার আর নাগালই পাওয়া গেল না।
তবে মারিয়া সম্পর্কে জানা গেল পাকিস্তানের তরুণ মিডিয়া ম্যানেজার হায়দার আলীর মাধ্যমে। মারিয়াকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে যিনি উচ্ছ্বসিত, ‘মারিয়া যোগ দেওয়ার পর পাকিস্তান নারী দল ভালো করছে। গোটা দলের মানসিকতাই সে বদলে দিয়েছে। তাকে দেখে অন্য মেয়েরা ফুটবলে আসতে আগ্রহী হচ্ছে।’
মারিয়া সমীহ করছেন বাংলাদেশ দলকে। হায়দার আলী যেমন বলছিলেন, ‘মারিয়া বলেছে, বাংলাদেশ অনেক শক্তিশালী দল। গত সাফে বাংলাদেশের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও এবার লড়াই করতে চায়। সেই লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলার আত্মবিশ্বাস। পাকিস্তান চেষ্টা করবে বাংলাদেশের কাছ থেকে পয়েন্ট কেড়ে নিতে।’
দাদা হাশিম খানকে দেখে খেলাধুলায় আসতে আগ্রহী হয়েছিলেন মারিয়া। এখন পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগে দেশটির তরুণদের কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছেন। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে তাঁর দিকে আশাভরে তাকিয়ে থাকবে পাকিস্তান।