লুকাকুর গোলের পর ঘুষি ও তিন লাল কার্ড
জুভেন্টাসের স্টেডিয়ামে কোপা ইতালিয়া সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ম্যাচে তখন যোগ করা সময়ে পঞ্চম মিনিটের খেলা চলছিল। পেনাল্টি নিতে জুভেন্টাসের বক্সে দাঁড়িয়ে ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু। বাঁ পায়ের শটে গোল করেই দাঁড়িয়ে গেলেন। মুখে আঙুল রেখে ‘মুখ বন্ধ’ রাখার ইশারা দেখিয়ে গোল উদ্যাপন করলেন জুভেন্টাস–সমর্থকদের সামনে। আর যায় কোথায়!
ইন্টারের খেলোয়াড়েরা লুকাকুকে নিয়ে উদ্যাপন করছিলেন, সমতায় ফেরা গোল বলে কথা, কিন্তু জুভেন্টাসের কয়েকজনের সহ্য হয়নি। ইন্টারের উদ্যাপনের মধ্যেই জুভেন্টাসের দু-একজন খেলোয়াড় প্রতিবাদী হয়ে বাগড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর লুকাকুও শাস্তি এড়াতে পারেননি।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইন্টারকে সমতায় ফেরানো ওই গোলের আগে গ্যালারি থেকে বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার হন লুকাকু। সে জন্য গোল করেই মুখ বন্ধ রাখার ইশারা করেছিলেন জুভেন্টাসের সমর্থকদের।
কিন্তু রেফারির কাছে সেটি হয়ে দাঁড়ায় প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের প্রতি বিরূপ আচরণ, আর তাই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড, অর্থাৎ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বেলজিয়ান তারকাকে। লুকাকুর লাল কার্ড দেখার কারণ হিসেবে এমন খবরই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ফুটবল ইতালিয়া। তবে কাল রাতে জুভেন্টাস-ইন্টার মিলান ১-১ গোলে ড্র ম্যাচে নাটকের এখানেই শেষ নয়। লাল কার্ড দেখেছেন আরও দুজন। সেটি ম্যাচে শেষ বাঁশি বাজার পরপরই।
লুকাকুকে ঘিরে জটলার সময় ইন্টারের গোলকিপার সামির হান্দানোভিচ ও জুভেন্টাসের উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদ্রাদোর মধ্যে শান্ত বাক্যবিনিময়ই হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎই কিছু একটা শুনে রাগান্বিত হয়ে পড়েন হান্দানোভিচ। লেগে যায় কুয়াদ্রোদোর সঙ্গে। দুই দলের খেলোয়াড়েরা দুজনকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন।
ভিডিও রিপ্লেতে দেখা গেছে, সেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের মধ্যেই হান্দানোভিচের মুখে ঘুষি বসিয়ে দেন কলম্বিয়ান তারকা কুয়াদ্রাদো। রেফারি দুজনকেই লাল কার্ড দেখিয়েছেন। তবে ওই ঘুষির জন্য বড় শাস্তি পেতে পারেন কুয়াদ্রাদো। ৮৩ মিনিটে তাঁর গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাস।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, লুকাকু বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেননি ইন্টারের কোচ সিমোন ইনজাঘি ও জুভেন্টাসের কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি।
ম্যাচ শেষে ইনজাঘি মিডিয়াসেটকে বলেছেন, ‘লুকাকুর উদ্যাপনকে ভুল বোঝা হয়েছে। সে সব সময় ওভাবেই গোল উদ্যাপন করে।’ ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতিকে খুব একটা পাত্তা দেননি ‘জুভ’দের কোচ আলেগ্রিও, ‘কী ঘটেছে, আমি জানি না। শেষ বাঁশি বাজার পর আমি টানেলে চলে গিয়েছিলাম। এটি তেমন কিছুই না। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ শেষে কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়েছে।’
জুভেন্টাস ডিফেন্ডার দানিলো মনে করেন, রেফারি লুকাকুকে লাল কার্ড দেখিয়ে ঠিক কাজই করেছেন, ‘এটা সহজ সিদ্ধান্ত ছিল। লুকাকু গোল করে আমাদের সমর্থকদের মুখ বন্ধ রাখার ইশারা করেছে। রেফারির জন্য কার্ড দেখানো তাতে সহজ হয়ে যায়। সে আগেই একবার হলুদ কার্ড দেখেছে। আমার মনে হয়, সিদ্ধান্তটি সঠিক।’