স্যান্ডেল পায়ে অনুশীলন ও দুই খেলোয়াড়ের চোট—যে দুই ঘটনা বদলে দিয়েছে এই স্পেনকে

স্পেনের দুই তরুণ তুর্কি লামিনে ইয়ামাল (বাঁয়ে) ও নিকো উইলিয়ামসএএফপি

ফুটবলে স্পেন সর্বশেষ বড় কোন শিরোপা জিতেছে?

এ প্রশ্নের উত্তর ফিরিয়ে আনবে ২০১২ সালকে। টানা দ্বিতীয়বার ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালের ইউরো জয়ের মাঝে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন।

গত বছর স্প্যানিশরা উয়েফা নেশনস লিগ জিতলেও সেটি মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট ছিল না। আর গুণেমানেও ইউরোর সমকক্ষ নয় সেটি। সেই হিসেবে গত এক যুগে বিশ্বকাপ আর ইউরো মিলিয়ে পাঁচটি বড় টুর্নামেন্টে একবারও ফাইনালে উঠতে পারেনি। এবার কি স্প্যানিশরা পারবে সেমিফাইনালের বেড়া ডিঙিয়ে ফাইনালে যেতে?

আরও পড়ুন

লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল যেভাবে খেলছে, তাতে বড় আশা করতেই পারেন স্পেনের সমর্থকেরা। এবারের ইউরোতে তো দুর্দান্ত খেলছে স্প্যানিশরা। পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই জেতা স্প্যানিশরা আজ সেমিফাইনাল খেলবে আরেক পরাশক্তি ফ্রান্সের বিপক্ষে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রতিবেশী ফ্রান্সের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও এবারের পারফরম্যান্সই সম্ভাবনার নিক্তিতে একটু হলেও এগিয়ে রাখছে স্পেনকে।

এবারের ইউরোতে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে স্পেন
এএফপি

এখন সময় দারুণ কাটলেও বছরখানেক আগেও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না স্পেন। তবে সবকিছুই বদলে যায় গত সেপ্টেম্বরের দুটি ঘটনায়। গত বছরের মার্চে নরওয়েকে হারিয়ে ইউরোর বাছাইপর্ব শুরু করলেও পরের ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে যায় স্পেন। সেই স্পেন এরপর টানা ছয়টি ম্যাচ জিতে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই জায়গা করে নেয় ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে।

স্পেনের সেই জয়ের ধারা শুরু হয়েছিল সেপ্টেম্বরে জর্জিয়ায়। তবে ওই ম্যাচের আগে দুটি দুর্ঘটনা স্প্যানিশদের মনে শঙ্কা জাগালেও শেষ পর্যন্ত শাপেবরই হয়েছে। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন কী করে যেন বুট ছাড়াই খেলোয়াড়দের জর্জিয়ার বিমানে উঠিয়ে দিয়েছিল। জর্জিয়ার পৌঁছানোর পর প্রথম অনুশীলনটা তাই বুট ছাড়াই স্যান্ডেল পরে সারতে হয়েছিল স্পেনের খেলোয়াড়দের। এমন ঘটনায় হতোদ্যম না হয়ে স্প্যানিশরা বরং ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়। দলীয় সংহতির ছিঁড়ে যাওয়া সুতাটা যেন আবারও জোড়া লেগে যায় তাতে।

আরও পড়ুন

এরপর জর্জিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে চোটে পড়েন স্পেনের দুই উইঙ্গার দানি ওলমো ও মার্কো আসেনসিও। প্রথমার্ধেই দুজনের বদলি হিসেবে দে লা ফুয়েন্তে মাঠে নামান নিকো উইলিয়ামস ও ১৬ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামালকে।

এবারের ইউরোতে ৫ ম্যাচে ১১ গোল করেছেন স্পেন
এএফপি

সেদিনই প্রথম এই দুই তরুণ একসঙ্গে খেলেছেন স্পেনের হয়ে। যাঁদের বদলি হিসেবে নেমেছিলেন সেই ওলমো ও আসেনসিওর পুরো বিপরীত ঘরানার দুই খেলোয়াড় উইলিয়ামস ও ইয়ামাল। দুজনেই ওয়ান-অন-ওয়ান খেলতে পছন্দ করেন, পছন্দ করেন একটু বেশি বাইরের দিকে খেলতে। সেই ম্যাচটা ৭-১ গোলে জিতেছিল স্পেন। স্পেনের শেষ দুটি গোল করেছিলেন উইলিয়ামস ও ইয়ামাল।

সেই উইলিয়ামস ও ইয়ামালই এবারের ইউরোতে স্পেনের সবচেয়ে ঝলমলে দুই তারকা। উইলিয়ামস বাঁ প্রান্ত আর ইয়ামাল ডান প্রান্ত দিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলছেন।

আজ কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্সের বিপক্ষে স্পেনের সবচেয়ে বড় ভরসাও উইলিয়ামস ও ইয়ামাল।

আরও পড়ুন