সৌদিতে স্বপ্নভঙ্গ, আল ইত্তিফাক ছেড়ে আয়াক্সে যাচ্ছেন হেন্ডারসন
কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল গুঞ্জনটা। সৌদি আরবের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারায় আল ইত্তিফাক ছাড়তে চান ইংলিশ মিডফিল্ডার জর্ডান হেন্ডারসন। এমনকি সৌদি আরব ছাড়ার জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি মেনে নিতেও আপত্তি ছিল না তাঁর। শেষ পর্যন্ত সে গুঞ্জনই সত্যি হচ্ছে। একাধিক ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আল ইত্তিফাক ছেড়ে আয়াক্সে যাওয়ার চুক্তিতে সমঝোতায় পৌঁছেছেন হেন্ডারসন।
এর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছিল, হেন্ডারসন আল ইত্তিফাকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা বোধ করছেন। বিশেষ করে সৌদি আরবের গরম ও আর্দ্রতায় কাহিল হয়ে পড়েছেন। ফলে এর মধ্যে ভালো কোনো প্রস্তাব পেলেই তিনি সেটি বিবেচনা করবেন।
শুধু অবশ্য সৌদি পরিবেশই নয়, আল ইত্তিফাকের পারফরম্যান্সও নাকি তাঁকে হতাশ করেছে। পাশাপাশি ক্লাবটির ৩৫ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামে গড়ে মাত্র ৭ হাজার ৮০০ দর্শকের উপস্থিতিও মানতে পারছিলেন না সাবেক এই লিভারপুল অধিনায়ক। এ ছাড়া আরও একটি বিষয় হেন্ডারসনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে।
হেন্ডারসনের সৌদি আরবে আসার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল স্টিভেন জেরার্ডের সহকারী ইয়ান ফস্টারের। তাঁর আল ইত্তিফাক ছেড়ে যাওয়াও নাকি প্রভাব ফেলেছে হেন্ডারসনের সিদ্ধান্তে। সব মিলিয়ে মাত্র ছয় মাসেই সৌদি আরবে হতাশ হয়ে পড়েছেন হেন্ডারসন, যার ফলস্বরূপ এখন তাঁর ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তও একরকম চূড়ান্ত।
ধারণা করা হচ্ছে, দৃশ্যমান এসবের প্রভাবের সঙ্গে আরও কিছু বিষয়ের যোগ রয়েছে। ইংলিশ ফুটবলে হেন্ডারসন ছিলেন নেতৃস্থানীয় এক ব্যক্তিত্ব। যিনি অধিনায়কদের অধিনায়ক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ফুটবলের বাইরে সব সময় সামাজিক নানা অসংগতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে দেখা গেছে তাঁকে।
সমকামিতাবিরোধিতা, বৈষম্যসহ যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। যার ফলে তাঁর সৌদি–যাত্রাকে অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি এবং কঠোর সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল হেন্ডারসনকে।
সেসব সমালোচনাও হয়তো হেন্ডারসনকে নিজের অবস্থান বদলাতে বাধ্য করেছে। পাশাপাশি হেন্ডারসনের আশা, তাঁর ইউরোপে ফেরা গ্যারেথ সাউথগেটের ইউরো দলে জায়গা পেতেও সহায়তা করতে পারে। তবে কারণ যা–ই হোক, ছয় মাসের মধ্যে হেন্ডারসনের ইউরোপে ফেরার সিদ্ধান্ত সৌদিগামী ফুটবলারদের জন্য বড় এক সতর্কবার্তা।