ম্যানচেস্টার সিটিকে টপকে ‘মানি লিগ’–এ শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ
ম্যানচেস্টার সিটিকে টপকে ২০২২–২৩ মৌসুমে সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ইংল্যান্ডের তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান ডেলয়েট ফুটবল মানি লিগের এই তালিকায় ২০১৭–১৮ মৌসুমের পর প্রথমবার শীর্ষে উঠল রিয়াল। আগের মৌসুমের তুলনায় ১১ কোটি ৮০ লাখ ইউরো আয় বাড়িয়ে ২০২২–২৩ মৌসুমে রেকর্ড ৮৩ কোটি ১০ লাখ ইউরো আয় করেছে ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি।
মানি লিগে জায়গা করে নেওয়া ক্লাবগুলোর জন্য আরেকটি রেকর্ড–ভাঙা বছর। এতে বোঝা যায়, ফুটবল শিল্পের আর্থিক শক্তি কতটা।টিম ব্রিজ, ডেলয়েট স্পোর্টস বিজনেস গ্রুপের নেতৃত্বস্থানীয় অংশীদার
রিয়াল গত মৌসুমে লা লিগা জিততে পারেনি। সিটির কাছে হেরে ছিটকে পড়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল থেকেও। তবু তাদের আয় বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে খুচরা বিক্রি। দর্শক উপস্থিতি ও করোনা মহামারির পর পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান থেকে ঘাটতি পুষিয়ে নিয়েছে রিয়াল।
গত মৌসুমে ‘ট্রেবল’জয়ী সিটির অবস্থান রিয়ালের পরেই। পেপ গার্দিওলার দল গত মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে। ২০২২–২৩ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ আয়ও করেছে ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি—৮২ কোটি ৬০ লাখ ইউরো। তবু রিয়ালকে ধরতে পারেনি ক্লাবটি। সম্প্রচার খাত থেকে ৫ কোটি ইউরো রাজস্ব আয় এবং বাণিজ্যিক খাত থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ ইউরো রাজস্ব সিটির গত মৌসুমের আয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।
৮০ কোটি ২ লাখ ইউরো আয় করে এবারই প্রথম মানি লিগের শীর্ষ তিনে উঠে এসেছে ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজি। বার্সেলোনা এর আগে সর্বশেষ মানি লিগে সাতে থাকলেও এবার মোট ৮০ কোটি ইউরো আয় করে চারে উঠে এসেছে। ভক্তদের গ্যালারিতে ফেরার পাশাপাশি লাইসেন্সিং এবং মার্চেন্ডাইজিং থেকেও বেশ ভালো পরিমাণ রাজস্ব আয় করেছে বার্সা।
মানি লিগে জায়গা করে নেওয়া ক্লাবগুলোর আয়ের সবচেয়ে বড় মাধ্যম বাণিজ্যিক খাত। ২০১৫–১৬ মৌসুমের পর এবারই এই খাত থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে ক্লাবগুলো। তবে করোনার জন্য ২০১৯–২০ মৌসুম এই হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হবে না। তালিকায় শীর্ষ ২০টি ক্লাবের মধ্যে ১৭টি ক্লাবেরই প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে বাণিজ্যিক খাত থেকে আয় বেড়েছে। এর পেছনে অবদান খুচরো বিক্রিবাট্টায় অগ্রগতি, যে দিন খেলা থাকে না সেই দিনগুলোতে বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে আয় এবং স্পন্সরশিপ।
ডেলয়েট স্পোর্টস বিজনেস গ্রুপের নেতৃত্বস্থানীয় অংশীদার টিম ব্রিজ বলেছেন, ‘মানি লিগে জায়গা করে নেওয়া ক্লাবগুলোর জন্য আরেকটি রেকর্ড–ভাঙা বছর। এতে বোঝা যায়, ফুটবল শিল্পের আর্থিক শক্তি কতটা। বিশেষ করে সরাসরি সম্প্রচার হওয়া ম্যাচের চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিক খাত এবং ম্যাচের দিন আয়ের কারণটা বোঝা যায়। ক্লাবগুলো এখন আর শুধু সম্প্রচার খাত থেকে অর্জিত আয়ের ওপর নির্ভর করছে না। নিজেদের আর্থিক সার্মথ্যে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে তারা যে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করেছে, সেগুলো বাণিজ্যমুখী।
এর আগে সর্বশেষ (২০২১–২২ মৌসুম) মানি লিগে তৃতীয় ছিল লিভারপুল। এবার শীর্ষ ২০টি ক্লাবের মধ্যে সর্বোচ্চ পতন হয়েছে অ্যানফিল্ডের ক্লাবটির। সাতে নেমে গেছে লিভারপুল। ডেলয়েট জানিয়েছে, ২০২১–২২ মৌসুমে ৬৯ কোটি ৪৭ লাখ আয় করেছিল লিভারপুল।
এবার আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯ কোটি ৪২ লাখ ইউরো। মাঠের পারফরম্যান্স লিভারপুলের আয় কমে যাওয়ার প্রধান কারণ বলে জানিয়েছে ডেলয়েট। প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্ট তালিকার পাঁচে থেকে গত মৌসুম শেষ করেছিল লিভারপুল। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকেও ছিটকে পড়ে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চতুর্থ স্থান থেকে এবার একধাপ নেমে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। তবে সর্বশেষ মৌসুম থেকে এবার বেশি রাজস্ব আয় করেছে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটি।