ফিরছে ফুটবলের অ্যাশেজ

৬৯ বছর পর খুঁজে পাওয়া গেছে ফুটবলের এই ভস্মাধারছবি: এএফপি

১৮৮২ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে শোচনীয়ভাবে হারের পর ইংলিশ ক্রিকেটের ‘মৃত্যু’ হয়েছে বলে শোকগাথা লেখা হয়েছিল এক ব্রিটিশ পত্রিকায়। ইংলিশ ক্রিকেটের মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে বেল পুড়িয়ে ভস্মাধার পূর্ণ করা হয়েছিল। সেই ভস্ম থেকেই তো ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দ্বৈরথটা অ্যাশেজের আগুনে লড়াই হয়ে গেছে।

ক্রিকেটের অ্যাশেজ রোমাঞ্চ ছড়িয়ে যাচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের টেস্ট লড়াই ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা কিংবদন্তি। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টেস্ট দ্বৈরথ।

অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল
ফাইল ছবি: এএফপি

তবে একটা সময় অ্যাশেজ বললে শুধুই ক্রিকেট ম্যাচ বোঝাত না। ফুটবলেও যে অ্যাশেজ সিরিজ ছিল। যে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড নয়, তাসমান প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ড। কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া সেই ফুটবল অ্যাশেজই আবার মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। এ বছরের অক্টোবরে এই ফুটবলের অ্যাশেজ মাঠে গড়াবে বলে জানা গেছে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার এই লড়াইয়ের মঞ্চ লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম।

আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
ফাইল ছবি

ফুটবলের অ্যাশেজ এক হারিয়ে যাওয়া দ্বৈরথের নাম। গত এপ্রিলে ৭০ বছর পর খুঁজে পাওয়া যায় সেই দ্বৈরথের ভস্মাধার। অস্ট্রেলিয়ার ফুটবল কর্তারা খুঁজে পান অলংকৃত কাঠের একটি বাক্সের ভেতর ছোট একটি রুপালি রঙের রেজর কেস। সেটির মধ্যে আছে ১৯২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম ফুটবল ম্যাচের দুই অধিনায়কের সিগারেটের পোড়া ছাই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গ্যালিপলি রণক্ষেত্রের এক সৈনিকের রেজর কেস এটি। ১৯৫৪ সালে হারিয়ে গিয়েছিল ফুটবলের ‘অ্যানজাক সকার ট্রফি’ নামে পরিচিত এই অ্যাশেজ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গ্যালিপলি রণক্ষেত্রের এক সৈনিকের রেজর কেস এটি
ছবি: এএফপি

গত ২৫ এপ্রিল এই ‘ফুটবলের অ্যাশেজ’ খুঁজে পাওয়ার ঘোষণা দেয় ফুটবল অস্ট্রেলিয়া। তারিখটি বেশ ঐতিহাসিক। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গ্যালিপলিতে যুদ্ধ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সৈনিকেরা। তাঁদের স্মরণে ২৫ এপ্রিল ‘অ্যানজাক ডে’ পালন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ফুটবল ইতিহাসবিদ ট্রেভর টম্পসন সেদিন খুঁজে পাওয়া ৭০ বছরের পুরোনো ভস্মাধারটিকে অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে বড় সম্পদ বলেছিলেন।

নিউজিল্যান্ড ফুটবলের প্রধান অ্যান্ড্রু প্র্যাগনেল বলেছেন, ‘ঐতিহাসিক এক লড়াই–ই হতে যাচ্ছে এটি। এ বছরই অনুষ্ঠিত হবে এ লড়াই। আশা করছি, এটি সামনের দিনগুলোয়ও আয়োজিত হবে। ১৯৫৪ সালের পর এই প্রথম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই লড়াই।’

ফুটবল অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস জনসন বলেন, এই ট্রফি হচ্ছে ফুটবল ইতিহাসের দারুণ একটা অংশ। এই ট্রফি দুই দেশের সামরিক সখ্যের প্রতীক।