টটেনহামের কোচ আন্তোনিও কন্তে তো এমনিতেই খ্যাপাটে মানুষ। মেজাজ চড়া চেলসির কোচ টমাস টুখেলেরও। তো এই দুই কোচ যখন মুখোমুখি হন, সেই ম্যাচটা কি আর নিরুত্তাপ থাকতে পারে!
স্টামফোর্ড ব্রিজে আজ চেলসি-টটেনহাম ম্যাচেও তাই পাওয়া গেল উত্তেজনার গমগমে আঁচ। খেলোয়াড়েরা তো ক্ষণে ক্ষণে মেজাজ হারিয়েছেনই, হাতাহাতি লেগে গিয়েছিল দুই কোচেরও। ম্যাচ শেষে দুজনেই দেখেছেন লাল কার্ড। উত্তেজনা ছাড়ানো ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে ২-২ গোলে। প্রিমিয়ার লিগে নতুন মৌসুমটা চেলসি শুরু করেছিল এভারটনের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়, বার্নলির সঙ্গে ৪-১ গোলের জয় দিয়ে শুরু হয়েছিল টটেনহামের। আজ দুই দলকেই করতে হলো পয়েন্ট ভাগাভাগি।
চেলসির দুটি গোলই করেছেন দুই ডিফেন্ডার। ১৯ মিনিটে কর্নার থেকে বল উড়িয়ে পাঠালেন মার্ক কুকুরেয়া। টটেনহামের ডি-বক্সে দুই দলের খেলোয়াড়দের জটলা। কিন্তু এর মধ্যেও কীভাবে যেন ফাঁকায় অরক্ষিত রয়ে গেলেন কালিদু কুলিবালি। এমন সুযোগ কী আর হেলায় হারান কিছুদিন আগে নাপোলি থেকে ৪ কোটি ইউরোতে চেলসিতে যোগ দেওয়া সেনেগালিজ ডিফেন্ডার! উড়ে আসা বলে তাঁর দারুণ ভলি টটেনহাম গোলরক্ষক হুগো লরিসকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল জালে। পাখির ডানার মতো দুহাত মেলে উদ্যাপনে মাতলেন কুলিবালি।
চেলসির হয়ে মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই অভিষেক হয়েছে কুলিবালির। তবে ঘরের মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে প্রথমবার মাঠে নামলেন আজই। কী দারুণভাবেই না উপলক্ষটা স্মরণীয় করে রাখলেন ৩১ বছর বয়সী সেনেগালিজ ডিফেন্ডার।
প্রথমার্ধের বেশির ভাগ সময় চেলসিই তুলনামূলক দাপুটে ছিল। কাই হাভার্টজ সুযোগ নিতে পারলে ব্যবধানটা আরও বাড়াতে পারত টমাস টুখেলের দল। বিরতির পর আক্রমণের ধার বাড়ায় টটেনহাম। গোলটা এসেছে ৬৮ মিনিটে, বেন ডেভিসের পাস থেকে পিয়ের-এমিল হইবিয়ার শটে। তবে গোলের আগে একটা ফাউলের আবেদন করেছিলেন চেলসির খেলোয়াড়েরা। রেফারি সাড়া দেননি তাতে। এ নিয়ে ডাগ আউটে উত্তেজনা চলছিল। গোলের পর সেটার প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়েই খেপে ওঠেন টটেনহাম কোচ কন্তে। টমাস টুখেলের সঙ্গে যখন প্রায় হাতাহাতি লেগে যাচ্ছিল তাঁর, বাকি এসে সরিয়ে নেন দুজনকে।
চেলসি আরও একবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট করে ৭৫ মিনিটে। কিন্তু কাই হাভার্টজ এক গোলরক্ষককে পেয়ে ব্যর্থ হন বলে জালে পাঠাতে। তবে এর দুই মিনিট পরে ঠিকই এগিয়ে যায় চেলসি। রাহিম স্টার্লিংয়ের পাস থেকে বল পেয়ে যান ফাঁকায় থাকা রিস জেমস। তিনি আর ভুল করেননি।
ম্যাচটা যখন চেলসিই জিতে যাবে বলে মনে হচ্ছে, যোগ হওয়া সময়ের খেলা চলছে, ঠিক ওই সময় ইভান পেরিসিকের পাস থেকে গোল করে আরও একবার সমতা ফেরান টটেনহাম স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন।
কিন্তু ঘটনা সেখানেই শেষ হয়নি। ম্যাচ শেষ হাত মেলাতে গিয়ে আবার লেগে যায় কন্তে-টুখেলের। দুজনকে ছাড়াতে এগিয়ে আসতে হয় দুই দলের কোচিং স্টাফ ও রেফারিদের। শেষ পর্যন্ত দুজনকেই লাল কার্ড দেখান রেফারি। এ নিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। ভাগ্যিস, সেটা মারামারি পর্যন্ত গড়ায়নি!