ড্র হলেও সম্ভব, তবে শর্ত প্রযোজ্য- খেলা শুরুর মুহূর্তেও বেলজিয়ামের সমীকরণ ছিল এ রকম। সেই শর্তের মধ্যে ছিল কানাডার কাছে মরক্কোর হার। সঙ্গে বড় অঙ্কের গোল ব্যবধান। কিন্তু খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরই বেলজিয়ামের হিসাবটা হয়ে গেল একমুখী- ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জিততেই হবে।
বেলজিয়াম জেতেনি। ক্রোয়াটদের সঙ্গে ম্যাচ শেষ করেছে ০-০ স্কোরলাইনে। ওদিকে মরক্কো জিতে গেছে ২-১ ব্যবধানে।
দুই ফলের হিসাব-নিকাশে গ্রুপ পর্বেই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে বেলজিয়ামের। ‘এফ’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে মরক্কো ও ক্রোয়েশিয়া।
২০১৮ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলা বেলজিয়াম প্রথম রাউন্ড থেকে সর্বশেষ বিদায় নিয়েছিল ১৯৯৮ সালে। রাশিয়ায় তৃতীয় হওয়ার আগে ২০১৪ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল দেশটি।
আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে নামার আগেই নিজেদের পথটা কঠিন করে তুলেছিল বেলজিয়াম। কানাডার বিপক্ষে কোনোমতে ১-০ ব্যবধানে জিতলেও মরক্কোর কাছে ২-০ গোলে হারায় শেষ ম্যাচের সমীকরণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এরপরও অবশ্য দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথ নিজেদের হাতেই ছিল। জিততে হতো ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে।
গত আসরের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়ার সমীকরণ ছিল অপেক্ষাকৃত সহজ। ড্র করলেই শেষ ষোলো নিশ্চিত। লুকা মদরিচের দল ম্যাচের শুরু থেকে সেই লক্ষ্যেই খেলে গেছে। যদিও রেফারির শুরুর বাঁশির পরপরই একটি সুযোগ চলে এসেছিল।
কিক অফের পর বল টেনে ইভান পেরিসিচকে বল বাড়ান মদরিচ। পেরিসিচ টমাস মনিয়েরকে টপকে শট নিলেও ডান পোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়। এর দশ মিনিট পর ভালো সুযোগ পায় বেলজিয়াম। ক্রোয়াট ডি বক্সে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন ইয়ানিক কারাসকো। তাঁর ডান পায়ে নেওয়া শট প্রতিহত করেন মার্সেলো ব্রজোভিচ।
তবে ম্যাচে বেলজিয়ামের সুবর্ণ সুযোগটি আসে এর দুই মিনিট বাদে। প্রতি আক্রমণে নিজেদের অর্ধ থেকে দ্রুত বল নিয়ে ক্রোয়াট রক্ষণে ঢুকে যান ডি ব্রুইনা। চমৎকার এক পাসে ডানদিকে বল বাড়ান দ্রিস মের্তেন্সের দিকে। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার বল মেরে দেন বারের ওপর দিয়ে।
প্রথমার্ধের বাকিটা সময়ও আক্রমণ চালিয়ে গেছে বেলজিয়াম। তবে গোলের সম্ভাবনা জেগেছে কমই। মূলত ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ পরই অতি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে ক্রোয়েশিয়া। কানাডার বিপক্ষে চতুর্থ মিনিটেই প্রথম গোল করে ফেলে মরক্কো।
সমীকরণ তখন বেলজিয়াম-ক্রোয়েশিয়া দুই দলের জন্য জটিল হয়ে পড়ে। বেলজিয়ামের জয় দরকার, ক্রোয়েশিয়ারও হার এড়াতেই হবে।
দ্বিতীয়ার্ধে মার্তেনেসকে বদলে রোমেলু লুকাকুকে নামান বেলজিয়াম কোচ। ৬০ মিনিটে গোলের সুযোগও তৈরি করেন তিনি। দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলমুখের খুব কাছে গিয়ে শট নিয়েছিলেন কারাসকো। এগিয়ে এসে রুখে দেন ক্রোয়েশিয়া গোলকিপার দমিনিক লিভাকোভিচ। বল পেয়ে যান লুকাকু। তার জোরালো শট পোস্টে লেগে দিক পাল্টে যায়।
বেলজিয়ামকে গোলের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়ার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে শেষ দিকেও। বিশেষ করে ৯০ মিনিটে। থরগান হ্যাজার্ডের ক্রস থেকে বল জালে জড়ানোর সুযোগ ছিল লুকাকুর। কিন্তু বুক দিয়ে বল রিসিভ করে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি।
গোল না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বেলজিয়ামকে। যে আক্ষেপ আসলে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যাওয়ার।
৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘এফ’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া মরক্কো শেষ ষোলোয় খেলবে ‘ই’ গ্রুপ রানার্স আপের বিপক্ষে। ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ একই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন।