বাজি–পটকায় মিলানের খেলোয়াড়দের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে ‘অতিথিসেবা’ নাপোলির সমর্থকদের
এসি মিলানের মাঠে গিয়ে গত বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল প্রথম লেগে ১-০ গোলে হেরেছিল নাপোলি। মাঝের এই এক সপ্তাহজুড়ে নাপোলির সমর্থকেরা বুঝি তক্কে তক্কে ছিলেন। মিলান আসুক একবার—‘নিয়াপলিতান’রা (নেপলসবাসী) বুঝিয়ে দেবে নাপোলির সমর্থক কী জিনিস!
ইতালি এমনিতেই ফুটবলপাগল দেশ। সেখানকার শহর নেপলসের বাসিন্দারা যেন আরও এক কাঠি সরেস। ফুটবলের প্রতি তাঁদের টানটা টের পাওয়া যায় প্রয়াত ডিয়েগো ম্যারাডোনার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে। তবে শুধু ভালোবাসা নয়, প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের কীভাবে নাজেহাল করতে হয়, সেসবও বেশ ভালোই জানা আছে নাপোলির সমর্থকদের—কথাটা বিশ্বাস না হলে জিজ্ঞেস করতে পারেন মিলানের খেলোয়াড়দের।
চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগের ম্যাচ খেলতে এসি মিলান এখন নেপলস শহরে। সেখানকার হোটেল লাংমারে-তে উঠেছে স্তেফানো পিওলির দল। নাপোলির সমর্থকেরা যেন এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন।
কাল রাতে হোটেলের পাশে বাজি-পটকা ফুটিয়ে অলিভার জিরু-রাফায়েল লিয়াওদের ঘুমোতে দেননি নাপোলির সমর্থকেরা। তাঁদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার—এসি মিলান আজ রাতে ফিরতি লেগে এস্তাদিও ডিয়েগো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে নাপোলির মুখোমুখি হওয়ার আগে মিলানের খেলোয়াড়দের যতটা সম্ভব জ্বালানো, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানো, যেন মাঠে ঠিকমতো খেলতে না পারেন।
সংবাদমাধ্যম স্কাই ইতালিয়ার প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, হোটেলের সামনে নাপোলির প্রায় দেড় শ সমর্থক জড়ো হয়ে আতশবাজি ফোটাচ্ছেন। মিলানের খেলোয়াড়েরা হোটেলের পেছনের অংশে থাকলেও গগনবিদারী শব্দে নিশ্চিতভাবেই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেছে। আতশবাজি ও বাজি-পটকা ফোটানো ছাড়াও বাঁশি বাজানো এবং চিৎকার করেছেন নাপোলির সমর্থকেরা।
স্কাই ইতালিয়া জানিয়েছে, গতকাল রাত সাড়ে তিনটার দিকে জড়ো হয়ে প্রথম দফার বাজি-পটকা ফোটানো শুরু করে স্বাগতিক ভক্তের দল। এরপর ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে দ্বিতীয় দফায় একই কাজ করা হয়। হোটেলের সামনে গানপাউডারের গন্ধ ছিল সকালেও। হোটেলের সামনে নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশ মিলে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। মিলান কিংবদন্তি পাওলো মালদিনি ছাড়াও বর্তমান স্কোয়াডের খেলোয়াড় রাফায়েল লিয়াও, থিও হার্নান্দেজ ও অলিভার জিরুদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন নাপোলির সমর্থকেরা।
ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে প্রতিপক্ষ দলকে আতিথ্য দিয়ে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানো নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগে। এ মৌসুমেই শেষ ষোলো প্রথম লেগের ম্যাচ খেলতে লিভারপুলে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। মার্সেসাইডে রিয়াল যে হোটেলে উঠেছিল, সেখানে হোটেলের বাইরে গভীর রাত পর্যন্ত অগ্নি প্রজ্বালন ও আতশবাজি ফুটিয়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের ঘুম হারাম করেছিলেন ‘অলরেড’ সমর্থকেরা।
শুধু রিয়াল নয়, ২০১৯ সালে বার্সেলোনাও লিভারপুল সমর্থকদের কাছে ভুগেছে। সেবার চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সা খেলতে গিয়েছিল অ্যানফিল্ডে। ৪-০ গোলে লিভারপুলের কাছে হারের আগের রাতে ইংলিশ ক্লাবটির সমর্থকদের কাছ থেকে এমন ‘অতিথিসেবা’ই পেয়েছিল কাতালান ক্লাবটি।