খালি পায়ে গোসল করলে ১১ হাজার টাকা জরিমানা, ম্যাচে দেরি করলে ১ লাখ
স্কটিশ ক্লাব রেঞ্জার্সের কোচ থাকতেই নিজেকে কড়া ‘হেডমাস্টার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন স্টিভেন জেরার্ড। নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলায় কাউকে একটু ছাড় দেন না।
গত বছর অ্যাস্টন ভিলার কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই কাজে ‘ফর্ম’ ধরে রেখেছেন লিভারপুল কিংবদন্তি।
জেরার্ড গত নভেম্বরে অ্যাস্টন ভিলা কোচের দায়িত্ব নেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আগামী মৌসুমে অ্যাস্টন ভিলাকে শীর্ষ দশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যস্থির করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক এই মিডফিল্ডার।
সে জন্য খেলোয়াড়দের ফিটনেস ঠিক রাখতে ক্লাবের ক্যানটিন থেকে টমেটো কেচাপের মতো কিছু খাবার তুলে দিয়েছেন জেরার্ড। তাঁর এমন সব কড়া নিয়ম পালনে এক দিক থেকে সুবিধাই হয়েছে অ্যাস্টন ভিলার।
লিভারপুলের সাবেক এই মিডফিল্ডার কোচ হয়ে আসার আগে দায়িত্বটি পালন করেছেন ডিন স্মিথ। তখন থেকেই খেলোয়াড়দের জন্য জরিমানার একটি তালিকা তৈরি করেছে অ্যাস্টন ভিলা। এ তালিকায় কিছু বিষয় যেমন মজার তেমনি নির্মম। যেমন ধরুন, ক্লাবের অনুশীলনে দেরি করে এলে জরিমানা বেশি না, মাত্র ৫০০ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৬ হাজার ৯১৬ টাকা)। নিজের জন্মদিনে কোনো খেলোয়াড় কেক আনতে ভুলে গেলে গুনতে হবে ৫০ পাউন্ড জরিমানা।
অ্যাস্টন ভিলার এই জরিমানার তালিকা ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনুশীলন ক্যাম্প কিংবা মিটিংয়ে আসতে দেরি হলে প্রতি সেকেন্ডে ২০০ পাউন্ড জরিমানা গুনতে হবে খেলোয়াড়দের। আর ম্যাচের দিন আসতে দেরি হলে জরিমানার অঙ্ক আরও বেশি—১০০০ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার পাউন্ড টাকা)।
ইংলিশ ক্লাবটির আরেকটি মজার জরিমানা হলো গোসল করা নিয়ে। অনুশীলন কিংবা ম্যাচ শেষে কেউ খালি পায়ে গোসলখানায় ঢুকে গোসল করতে পারবে না। তেমনটি করলে ১০০ পাউন্ড জরিমানা দিতে হবে। একটু বেখেয়ালি খেলোয়াড়, যাঁদের তামাক চিবানোর অভ্যাস আছে, তাঁরা চিবানো তামাক এখানে–সেখানে ফেললে জরিমানা ২০০ পাউন্ড। আরও আছে। মাঠে রেফারির সঙ্গে কথা–কাটাকাটি করে হলুদ কার্ড দেখলেও নিস্তার নেই। ২০০ পাউন্ড জরিমানা দিতে হবে। আর লাল কার্ড?
ঝামেলা আরও বেশি। লাল কার্ড দেখার দিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে গোটা অ্যাস্টন ভিলা দলকে রাতের খাবার খাওয়াতে নিয়ে যেতে হবে সেই খেলোয়াড়কে। অনুশীলনের পর মাঠেই খেলার সরঞ্জাম ফেলে এলে জরিমানা ১০০ পাউন্ড।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মেইল অনলাইন’ অ্যাস্টন ভিলার ফাঁস হওয়া জরিমানার তালিকা দেখে জানিয়েছে, এটি কমপক্ষে ১২ মাসের আগের তালিকা। তবে অ্যাস্টন ভিলার জরিমানার তালিকা এই প্রথম ফাঁস হয়নি।
২০১৬ সালে রবার্তো ডি মাত্তেও ভিলার কোচ থাকতে সে সময় ক্লাবটির খেলোয়াড়দের পোশাক–পরিচ্ছদ, নিয়মানুবর্তিতা ও মুঠোফোনের ব্যবহার নিয়ে জরিমানার তালিকা প্রকাশ হয়েছিল।
জেরার্ড হুউলিয়ের (২০১০–১১) অ্যাস্টন ভিলার কোচ থাকতেও জরিমানার কড়া নিয়মের কারণে অ্যাশলে ইয়ংয়ের মতো কিছু তারকা ক্লাবটি ছাড়তে চেয়েছিলেন। জেরার্ডের সময়ে ফিলিপে কুতিনিওরা এখন কী করেন, সেটাই দেখার বিষয়।