জার্মানদের ঘাড়ে কাজানের ভূত
আজ বৃহস্পতিবার জার্মানির সঙ্গে কোস্টারিকার ‘ই’ গ্রুপের শেষ ম্যাচ। গ্রুপের চার দলের মধ্যে ১ পয়েন্ট নিয়ে জার্মানি রয়েছে সবার নিচে। ২০১৮ বিশ্বকাপে রাশিয়ার কাজান শহরে জার্মানি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ২-০ হেরে বিশ্বকাপ থেকে লজ্জাজনকভাবে ছিটকে পড়েছিল। সেই বেদনাদায়ক স্মৃতির কথা আজ আবার জার্মান সমর্থকদের মনে পড়ছে।
জার্মান দল আজ চার বছর আগের কাজানের ভূতকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামবে না কাতারের আল খোরে আল বায়ত স্টেডিয়ামে নিজেদের ফুটবল ঐতিহ্যকে আরও একবার মহান্বিত করবে, তা আজ রাতেই বোঝা যাবে।
জার্মানিতে ফুটবল জনপ্রিয় খেলা। যেকোনো বিশ্বমাপের বড় ফুটবল আসরের খেলা জার্মানিতে ঢাউস পর্দার সামনে হাজারো দর্শকদের মাতামাতিতে মুখর থাকে। বাড়িতে, গাড়িতে পতাকা ওড়ে। অনেকেই খেলার দিন জার্মান ফুটবল দলের জার্সি পরেন, কিন্তু এবার কিছুই চোখে পড়ছে না। জার্মানিতে এমন নিরাসক্ত ফুটবল প্রায় চার দশকে চোখে পড়েনি।
পাশাপাশি রয়েছে এই বিশ্বকাপে জার্মানিদের হতাশ করা ফুটবল নৈপুণ্য। এ ছাড়া জার্মানির মিডিয়াতে কাতার বিশ্বকাপে অবকাঠামো নির্মাণে শ্রমিকদের মৃত্যু ও অমানবিক আচরণের খবর ফলাও করে প্রচারের কারণে অনেকেই বিশ্বকাপ ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
এই সময় জার্মানি বা মধ্য ইউরোপে বেলা সাড়ে তিনটা বাজতেই আকাশ অন্ধকার হয়ে আসে। আর ১ বা ২ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় বড় পর্দার সামনে খেলা দেখা অচিন্তনীয় ব্যাপার। কাতার বিশ্বকাপ তাই শুধু জার্মানিতেই নয় অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোতেও দর্শক টানতে পারছে না। জার্মান প্রেস এজেন্সির এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে জার্মানির উদ্বোধনী ম্যাচের তুলনায় জাপানের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে জার্মানির প্রথম ম্যাচে ৬০ শতাংশের কম দর্শক টেলিভিশনে খেলা দেখেছেন।
তবে জার্মানির ফুটবল দলটি ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২২ অনেকটাই আলাদা। চার বছর আগে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে টমাস মুলার ছিলেন।
ডের স্পিগেল পত্রিকায় তিনি আজকের ম্যাচ নিয়ে বলেছেন, ‘আমরা কস্মিনকালেও অনুমান করিনি গত বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে যাব। কিন্তু আমরা হেরেছিলাম। তবে এই বিশ্বকাপে আমাদের ভিন্ন ধরনের দল এবং এই দল নিয়ে কোস্টারিকার কাছে হারার কথা মোটেও ভাবছি না।’ এবারের বিশ্বকাপে টমাস মুলারকে অনেকটা অনুজ্জ্বল দেখালেও বিশ্বকাপে তিনি ১০ গোল করেছেন।
জার্মানির বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আজকের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে জার্মানির ফুটবল ঐতিহ্য। দেওয়া হয়েছে চারবারের বিশ্বজয়ী জার্মান ফুটবল দলের সাফল্যের বিশাল পরিসংখ্যান।