পাকিস্তান ভারতে খেলবে, কিন্তু ভারত পাকিস্তানে খেলবে না, তা হবে না: পিসিবি চেয়ারম্যান
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কোথায় হবে? আগামীকাল এ নিয়ে বৈঠকে বসার পাশাপাশি ভার্চ্যুয়াল ভোটও করবে আইসিসি। ওদিকে টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব পাওয়া পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নিজেদের পুরোনো অবস্থানই নতুন করে আবার জানিয়েছে। পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি জানিয়েছেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ‘সমতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে পিসিবির অবস্থান ‘পরিষ্কার’ করে নাকভি আরও বলেছেন, আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ রাখছেন এবং তাঁর দলও আইসিসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
আজ সকালে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে নাকভি বলেছেন, ‘আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, সেটাই করব। আইসিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি এবং আমার দলও তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক কথা বলছে।’
পাকিস্তানের অনড় অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো এই অবস্থানে আছি যে, আমরা ভারতে ক্রিকেট খেলব কিন্তু ভারত আমাদের এখানে ক্রিকেট খেলবে না, এটি গ্রহণযোগ্য নয়। যা কিছুই ঘটুক, সেটা সমতার ভিত্তিতে হতে হবে। আইসিসিকে আমরা এটা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি এবং পরে যা–ই ঘটুক, আমরা জানাব।’
পাকিস্তানের লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি–মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু চলতি মাসের শুরুতে আইসিসিকে ভারত জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সরকার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে ভারতীয় দলকে পাকিস্তানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
এ রকম পরিস্থিতিতে সর্বশেষ এশিয়া কাপের মতো এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও ‘হাইব্রিড মডেলে’ আয়োজনের প্রস্তাব উঠেছিল। এই মডেলে পাকিস্তানে বেশির ভাগ ম্যাচ আয়োজিত হলেও নাকভি তখনই বলেছেন, ভারতের অন্য কোথাও খেলার প্রস্তাব তারা মানবেন না।
চলতি মাসের শুরুতে পিসিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার; তাদের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা লিখিত দিতে হবে। এখন পর্যন্ত হাইব্রিড মডেল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, আর আমরা এটা মেনে নেব না।’
নাকভি জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে লিখিতভাবে কোনো আপত্তির কথা জানায়নি ভারত। এর আগে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে ভারতের পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আইসিসির ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে পিসিবি। এ বিষয়ে আইসিসি তাদের কিছু জানিয়েছে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেননি নাকভি।
নাকভির কাছে একাধিকবার জানতে চাওয়া হয়, হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনকে এখনো অগ্রহণযোগ্য মনে করছে কি না পিসিবি? তিনি সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা যা–ই করি না কেন, পাকিস্তান যেন সর্বোচ্চটা অর্জন করতে পারে, সেটাই নিশ্চিত করব।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘কিন্তু আমি আবারও বলছি এবং আমি এটাও নিশ্চিত যে কী বোঝাতে চাচ্ছি সেটা আপনারাও বুঝবেন, পাকিস্তান ভারতে খেলবে কিন্তু তারা এখানে আসবে না, সেটা সম্ভব নয়।’
নাকভির এ মন্তব্য ভারতে অনুষ্ঠেয় ভবিষ্যৎ টুর্নামেন্টগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করেই। মেয়েদের ২০২৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে ভারতে। ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সহ–আয়োজক ভারত।
পিসিবি চেয়ারম্যান আরও জানিয়েছেন, আইসিসির বৈঠকে যে সিদ্ধান্তই আসুক, সেটা পাকিস্তান সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে। আগামী রোববার বিসিসিআই সচিবের পদ ছেড়ে আইসিসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে যাওয়া জয় শাহর প্রতিও বার্তা দিয়েছেন নাকভি।
তিনি দায়িত্ব নিয়ে যেন আইসিসির স্বার্থ দেখেন, সেই আশা পিসিবি প্রধানের, ‘আমি নিশ্চিত, তিনি বিসিসিআই থেকে আইসিসিতে যাওয়ার পর আইসিসির স্বার্থই রক্ষা করবেন এবং সেটাই তাঁর করা উচিত। যখন কেউ এমন দায়িত্ব নেন, তখন তাঁর শুধু সেই সংস্থার স্বার্থের কথাই ভাবা উচিত।’
নাকভি পিসিবির আরেকটি অবস্থানও জানিয়েছেন বেশ দৃঢ়ভাবে, ‘শুধু আরও অর্থের জন্য আমরা স্বত্ব বিক্রি করব না। এটা কখনোই ঘটবে না। পাকিস্তানের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, আমরা সেটাই করব।’