কী একটা দিন কাটল সিরি ‘আ’তে!
রোববারের ছুটির দিনটা যে এক করে দিল ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, রোমা আর এসি মিলানের সমর্থকদের। ইতালিয়ান ফুটবলের বড় চারটি ক্লাবই যে হেরেছে কাল।
দিনটা শুরু হয় ইন্টার মিলানের হার দিয়ে। দুপুরে দিনের প্রথম ম্যাচে উদিনেসের মাঠে ৩–১ গোলে হারে ইন্টার। বিকেল নবাগত মনৎসার কাছে ১–০ গোলে হেরে যায় জুভেন্টাস। সন্ধ্যায় এএস রোমা ঘরের মাঠে হেরেছে আতালান্তার কাছে। আর রাতে দিনের শেষ ম্যাচে সান সিরোতে নাপোলির কাছে ২–১ গোলে হার মানে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এসি মিলান।
মিলানের হারটা ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে এনেছে ১৯৫৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারিকে। ইন্টার মিলান, এসি মিলান, জুভেন্টাস ও রোমা গতকালের আগে সর্বশেষ যে একই দিনে হেরেছিল ৬৭ বছর আগের সেই দিনেই।
উদিনেসে ৩: ১ ইন্টার মিলান
ইন্টারকে হারিয়ে টানা পঞ্চম জয় পেয়েছে উদিনেসে। ৭ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট পাওয়া দলটি কাল কিছুক্ষণের জন্য সিরি ‘আ’র শীর্ষেও উঠে গিয়েছিল। নিজেদের ইতিহাসে সিরি ‘আ’তে সবচেয়ে ভালো সূচনার রেকর্ড ছোঁয়া উদিনেসে অবশ্য ম্যাচের বয়স ৫ মিনিট হতেই গোলে খেয়ে বসে। ইতালিয়ান মিডফিল্ডার নিকোলো বারেল্লার ফ্রিকিক গোল এগিয়ে দেয় ইন্টারকে। ২২ মিনিটে মিলান স্করিনিয়ারের আত্মঘাতী গোলে সমতা আনে উদিনেসে। ৮৩ মিনিটে স্লোভেনিয়ান ডিফেন্ডার ইয়াকা বিওলের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক দলটি। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে উদিনেসের তৃতীয় গোলটি করেন বদলি খেলোয়াড় তোলগায় আর্সলান। প্রথম সাত ম্যাচের তিনটিতেই হারা ইন্টার ১২ পয়েন্ট নিয়ে আছে পয়েন্ট তালিকার সাতে। উদিনেসে দিন শেষ করেছে তৃতীয়স্থানে থেকে।
মনৎসা ১: ০ জুভেন্টাস
জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রির কপালের ভাজকে আরও ফুটিয়ে তুলেছে নবাগত মনৎসা। মৌসুমের প্রথম জয়টা সপ্তম ম্যাচেই এসে পেয়েছে লাল জার্সির দলটি। ১–০ গোলের জয়টা জুভেন্টাসের বিপক্ষে সিরি ‘আ’ ইতিহাসে দলটির প্রথম জয়। ৭৪ মিনিটে ডেনমার্ক স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ান গিটকিয়ারের গোলটা পয়েন্ট তালিকার তলানি থেকে ১৮ নম্বরে তুলে এনেছে মনৎসাকে। জুভেন্টাস অবশ্য ম্যাচের শেষ ৫০ মিনিট খেলেছে ১০ জন নিয়ে। ৪০ মিনিটে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টাইন তারকা আনহেল দি মারিয়া। মৌসুমে প্রথম হারের স্বাদ পেলেও মাত্র দুটি জয় পাওয়া জুভেন্টাস ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে আটে।
রোমা ০: ১ আতালান্তা
রোম জয় করে কয়েক ঘণ্টার জন্য পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গিয়েছিল আতালান্তা। ৩৫ মিনিটে সেন্টারব্যাক জর্জিও স্কালভিনির গোলটা ধরে রেখেই জিতেছে জান পিয়েরো গাসপেরিনির দল। নাপোলির মতো আতালান্তার পয়েন্টও ৭ ম্যাচে ১৭। তবে বার্গোমির ক্লাবটি গোল ব্যবধানের হিসেবে দিন শেষ করেছে দ্বিতীয়স্থানে থেকে। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে থাকা রোমার হয়ে সহজ দুটি সুযোগ নষ্ট করেছেন ট্যামি আব্রাহাম। লাল কার্ডের দেখাও পেয়েছে দলটি। অবশ্য কোনো খেলোয়াড় নন, লাল কার্ড দেখেছেন দলটির কোচ জোসে মরিনিও। যার অর্থ আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ডাগআউটে দাঁড়াতে পারছেন না ‘স্পেশাল ওয়ান’।
এসি মিলান ১: ২ নাপোলি
দিনের সবচেয়ে বড় ম্যাচে তকমা ছিল এই ম্যাচটিরই। সেই ম্যাচটি জিতে নাপোলি জানিয়ে দিল এবার শিরোপার লড়াইয়ে অন্যতম দাবিদার তারাই। ম্যাচটি জিতে আতালান্তাকে টপকে গোল ব্যবধানে শীর্ষে উঠেছে ডিয়েগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব। ৫৫ মিনিটে মাত্তেও পলিতানোর পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় নাপোলি। ৬৯ মিনিটে অলিভিয়ের জিরু সমতায় ফিরিয়ে ছিলেন এসি মিলানকে। তবে ৭৮ মিনিটে জোভান্নি সিমিওনের দারুণ এক হেড জয় এনে দেয় নাপোলিকে। সিরি ‘আ’তে নাপোলির হয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ কোচ দিয়েগো সিমিওনের ছেলে জোভান্নির এটাই প্রথম গোল। ম্যাচটি নাপোলি খেলেছে তারকা স্ট্রাইকার ভিক্তর ওসিমেনকে ছাড়াই, নিষেধাজ্ঞায় ডাগআউটে ছিলেন না কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তিও। এবারের লিগে প্রথম হারটি পাঁচে নামিয়ে দিয়েছে ১৪ পয়েন্ট পাওয়া এসি মিলানকে।