সৌদি আরবে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে ভুল বললেন হেন্ডারসন
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে দিয়ে শুরু হয়েছিল ফুটবলারদের সৌদি আরবযাত্রা। গ্রীষ্মের দলবদলে করিম বেনজেমা, সাদিও মানে, রবার্তো ফিরমিনোসহ আরও বেশ কিছু তারকা খেলোয়াড় পাড়ি জমান সৌদি আরবে। তবে সে সময় বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছিল ইংলিশ মিডফিল্ডার জর্ডান হেন্ডারসনের সৌদি আরবের আল ইত্তিফাকে যোগ দেওয়ার ঘটনা।
ইংল্যান্ডের ফুটবলে হেন্ডারসনকে বলা হয় অধিনায়কদের অধিনায়ক। মাঠের বাইরেও সামাজিক নানা বিষয় নিয়ে সব সময় সরব ছিলেন হেন্ডারসন। এ কারণে হেন্ডারসনের সৌদিযাত্রা মানতে পারেননি অনেকে এবং এ জন্য বেশ সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে।
তবে মাত্র ছয় মাসে সৌদি আরবের মোহ কেটে গেছে সাবেক লিভারপুল অধিনায়ক হেন্ডারসনের। মানিয়ে নিতে না পেরে সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন ইউরোপে। যোগ দিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের ক্লাব আয়াক্সে। নতুন ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে হেন্ডারসন নিজের সৌদি আরবযাত্রাকে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন।
পাশাপাশি তিনি সৌদি যাওয়ায় যাঁরা কষ্ট পেয়েছেন, তাঁদের কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন। আয়াক্সের সঙ্গে আড়াই বছরের চুক্তি করা হেন্ডারসন বলেছেন, ‘জীবনে চলার পথে যদি এসবকে আপনি ভুল বা অনুশোচনা হিসেবে দেখতে চান তো দেখতে পারেন।’
সৌদিতে যাওয়ার কারণে ইংল্যান্ডের সাধারণ দর্শকেরাও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন হেন্ডারসনের ওপর। এমনকি দুয়োও শুনতে হয়েছিল তাঁকে। এসব তাঁকে কষ্ট দিয়েছে কি না, জানতে চাইলে হেন্ডারসন বলেন, ‘আমি বলব না যে আমি কষ্ট পাইনি। এগুলোকে আমি গুরুত্ব দিই, মানুষ হয়তো ভাবে—এসব পাত্তা দিই না। কিন্তু আমি দেই। আমি তাদের মতামতকে শ্রদ্ধার চোখে দেখি। এটা বুঝতে পারি।’
হেন্ডারসনের সৌদি আরবে যাওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন সমকামিতার পক্ষের লোকেরাও। বিশেষ করে সৌদি আরবে সমকামিতা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল ৩৩ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে।
তাঁর এই সিদ্ধান্তে যাঁরা কষ্ট পেয়েছেন, তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে হেন্ডারসন বলেছেন, ‘আমি কখনো কাউকে আঘাত করার চেষ্টা করিনি। তবে কেউ যদি কোনোভাবে কষ্ট পেয়ে থাকে, তবে আমি যা করতে পারি, তা হলো ক্ষমা চাওয়া। আমি কখনো কাউকে আঘাত করার জন্য কিছু করিনি। আমার বিশ্বাস কখনো বদলায়নি, আমিও না।’
ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত বদলে ফিরে এলেও সৌদি লিগ বা আল ইত্তিফাকের কোনো সমালোচনা করেননি হেন্ডারসন। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, অনেক মানুষ চাইছে, আমি এখানে বসে সৌদি ব্যাপারগুলো নিয়ে সমালোচনা করি। কিন্তু ব্যাপরটা তেমন না, আমি সে রকম কিছু করব না। সৌদি লিগ, আল ইত্তিফাক এবং সেখানকার মানুষের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান আছে। তারা সত্যিই আমাকে স্বাগত বোধ করিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কখনো কখনো জীবনে এসব বিষয় ঠিকঠাক কাজ করে না—ফুটবলে এবং জীবনেও।’