পিএসজিকে ‘আনফলো’ করে মায়ামিতে বাজারঘাট করছেন মেসি
আর্জেন্টিনায় হলে পারতেন? সরাসরি ‘না’ তো বলা যায় না। তবে কাজটা যে খুব কঠিন হয়ে যেত, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি সেটা বার্সেলোনা শহরেও।
আর্জেন্টিনা কিংবা বার্সেলোনায় তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন চলে না। তাই পারিবারিক প্রয়োজনে সেটা বাজারঘাট হলেও মেসির জন্য তা করা খুব কঠিন। জনতা ছেঁকে ধরত। নিশ্চয়ই সেলফির ঝড়ও বয়ে যেত! মায়ামিতে তা নেই। সে জন্যই শান্তিতে একটু বাজারঘাট করতে পারছেন মেসি।
গত বুধবার পরিবারসহ মায়ামিতে পাড়ি জমান মেসি। ইন্টার মায়ামির সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি সই করেননি, সেটা হয়ে যাবে শিগগিরই এবং বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁকে নিজেদের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয়ও করিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দল।
তার আগে মায়ামিতে সব গুছিয়ে পরিবার নিয়ে ধাতস্থ হওয়ার কাজটা শুরু করে দিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই তারকা।সংসারের জিনিসপত্র কিনতে নিজেই গিয়েছিলেন সুপারমার্কেটে। সেখানে ঝুড়ি নিয়ে মেসির ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জিনিস কেনার ছবি ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই ছবি দেখে আন্দাজ করে নেওয়া যায়, মায়ামিতে ইতিমধ্যেই মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন মেসি।
ফোর্ট লডারহিলের এক সুপারমার্কেটে মেসির ঝুড়ি নিয়ে বাজার করার ছবি ভাসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিন সন্তান—থিয়াগো, মাতেও ও চিরো। শিশুখাদ্য সেরিল ও সাংসারিক অন্যান্য বাজার করেছেন মেসি। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ জানিয়েছে, ফোর্ট লডারহিলের একটি পাবলিক চেইনশপ সুপারমার্কেটে বাজার করেন গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানো এই তারকা। একটু দূরেই ইন্টার মায়ামির স্টেডিয়াম।
মেসির সঙ্গে মায়ামির আজই চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলার কথা। ২১ জুলাই লিগস কাপে মেক্সিকান ক্লাব ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে মেসির অভিষেক হবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘরোয়া ফুটবলে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলপ্রেমীরা সুপারমার্কেটে মেসির সঙ্গে ছবিও তুলেছেন। ক্লারিন এ নিয়ে এক ভক্তের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে। ছবি তোলার অনুরোধ শুনে মেসি নাকি ‘প্রথমে একটু হতাশ হয়েছিলেন’। কিন্তু না করেননি। কিছুক্ষণ পরই হাসিমুখে ছবি তুলেছেন। গত বুধবার রাতেও পরিবারকে নিয়ে রাতের খাবার খেতে বের হয়েছিলেন মেসি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো, বাবা হোর্হে মেসি এবং তিন সন্তান।
সেদিন ক্যাফে প্রিমেরা পাস্তায় গিয়েছিলেন মেসি। সেখানে দোকানের মালিক জেরার্দো চেয়ার সঙ্গে তাঁর জন্মদিন পালন করেন। ক্যাফেতে মেসির পরিবারের বসার জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেদিন মেসি ও তাঁর সন্তান চিরো গিটারও নাড়াচাড়া করেন কিছুক্ষণ। শুধু কি তা–ই, সেখানে এক ভক্ত মেসির গালে চুমুও দিয়েছিল।
ক্লারিন জানিয়েছে, প্যারিসের জীবন পেছনে ফেলে মেসি এখন মায়ামিতে সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছেন। মায়ামির জীবনব্যবস্থায় তাঁকে সুখী বলেই মনে হচ্ছে। আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনার রাস্তায় তো হাঁটতেও বের হতে পারতেন না! কিন্তু মায়ামিতে আর দশজন নাগরিকের মতোই সাধারণভাবে জীবন কাটাতে শুরু করেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। আর এ পথে ভুলতে শুরু করেছেন তাঁর সর্বশেষ ক্লাব পিএসজিকে। কীভাবে?
ক্লারিন কাল জানিয়েছে, ইনস্টাগ্রামে মেসির অনুসারীর সংখ্যা ৪৭ কোটি ৮০ লাখ হলেও তিনি অনুসরণ করতেন ২৮১টি অ্যাকাউন্ট। কিন্তু গতকাল তা ২৮০–তে নেমে আসে। যে একটি অ্যাকাউন্ট ‘আনফলো’ করেছেন, সেটি পিএসজির। ফরাসি ক্লাবটিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আনফলো’ করেছেন মেসি।
তাই বলে ইন্টার মায়ামিকে যে ইনস্টাগ্রামে অনুসরণ করতে শুরু করেছেন, তা নয়। ক্লাবটিতে অনুশীলন শুরু করেছেন, তবে মায়ামির অফিশিয়াল জার্সিতে তাঁকে এখনো দেখা যায়নি। সেটি সম্ভবত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি না হওয়ার জন্য।